চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
বুধবার (২১ মে) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন চবির নারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল আদন নুসরাত বলেন, “নারী যে অধিকার পাচ্ছে, তা আপনারা নিশ্চিত করতে পারছেন না, কোর্টে দীর্ঘসূত্রিতা কমছে না, সম্পত্তিতে নারী অধিকার বুঝে নিতে গেলে তাকে নেতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে। এসব নিয়ে আপনারা গঠনমূলক ভূমিকা রাখবেন বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু দেখা গেছে, গঠনমূলক ভূমিকা না রেখে আপনারা ধ্বংসাত্মক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। আপনারা কী নারীর অধিকার চান, নাকি শুধু ধর্মকে নারীর বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে চান?”
তিনি বলেন, “নারী সংস্কার কমিশনের মতে, ধর্ম নারীর প্রতি বৈষম্য করছে। তাই ধর্মীয় আইনের পাশাপাশি তারা সিভিল ‘ল’-ও চাচ্ছেন। একই পরিবারের দুইজন সন্তানের মাঝে একজন সিভিল ‘ল’ আরেকজন ইসলামী আইনে সম্পদের ভাগ চাইলে আপনি কীভাবে সমাধান করবেন? যে দেশে প্রচলিত আইনে নারী তার সম্পত্তির উত্তরাধিকার চাইতে গেলে নেতিবাচকভাবে নেওয়া হয়, সঠিক বাস্তবায়ন নেই, সে দেশে এই ধরনের ধ্বংসাত্মক আইন কেনো?”
তিনি আরো বলেন, “একজন নারী শুধু তার পিতা থেকেই সম্পত্তি পান না, বরং স্বামী, ভাই এমনকি সন্তানসহ অন্যান্যদের কাছ থেকেও পান। তাই আমরা উত্তরাধিকারে নারীর সমান ভাগ চাই না। বরং সঠিক যে অধিকার ইসলাম নারীদের দিয়েছে, সেটিই চাই।”
সমাজতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নওশিন নাওয়াল ফাতিমা বলেন, “সংস্কার কমিশনে শব্দের লুকোচুরিতে ট্রান্সউইমেনকেও নারী হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের ষড়যন্ত্র চলছে। সম্প্রতি মৈত্রী যাত্রার আড়ালে এসব ট্রান্সজেন্ডারকে আমরা সক্রিয় হতে দেখেছি। ট্রান্সজেন্ডারদের স্বীকৃতি নারীর প্রতি চরম অবমাননার শামিল। জুলাইয়ের বাংলাদেশে এমন কিছু বাস্তবায়ন আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব না।”
দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামসুন্নাহার মিতুল বলেন, “নারী সংস্কার কমিশনের এমন একটি সমাজের স্বপ্ন দেখা উচিত, যেখানে নারী ও পুরুষের মধ্যে প্রকৃত ইনসাফ বিদ্যমান থাকবে। কিন্তু উত্তরাধিকার আইনে ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিকতা, যৌনকর্মীদের শ্রমিক স্বীকৃতি প্রদান, ম্যারিটাল রেইপ আইন, ট্রান্সজেন্ডার নারীদের স্বীকৃতির কৌশল অবলম্বন প্রভৃতি প্রস্তাবনা বাঙালি মুসলিমদের মূল্যবোধ ও চিন্তার সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।”
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, “তাদের এই প্রস্তাবিত মডেল কি আমাদের দেশের প্রথা, সংস্কৃতি, সামাজিক মূল্যবোধ, বিশ্বাস ইত্যাদির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ? এ ক্ষেত্রে তাদের কোনো ডেটা বা রিসার্চ ফাইন্ডিংস আছে কি?”