Homeদেশের গণমাধ্যমেছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলায় আটকদের মুক্তি দাবিতে থানা ঘেরাও, নারীকে লাথি মারার...

ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলায় আটকদের মুক্তি দাবিতে থানা ঘেরাও, নারীকে লাথি মারার ছবি ভাইরাল


চট্টগ্রামে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় আটক দুই ব্যক্তির মুক্তি দাবিতে চট্টগ্রামে কয়েক ঘণ্টা থানা ঘেরাও করেছে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’। বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে নগরের কোতোয়ালি থানার সামনে অবস্থান নেন তারা। রাত ১১টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে চলে যান তারা।

মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাসের প্রতিবাদে বুধবার বিকালে কর্মসূচি ঘোষণা করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। কর্মসূচি শুরুর পরপর সেখানে মিছিল নিয়ে আসে শাহবাগবিরোধী ঐক্য। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় শাহবাগবিরোধী ঐক্যের লোকজন ছাত্র জোটের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালান। এতে ১২ জন আহত হন। তাদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা গুরুতর। তারা হলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নগর সভাপতি রিপা মজুমদার, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত বিশ্বাস ও অর্থ সম্পাদক সুদীপ্ত গুহ। আহতদের মধ্যে কয়েকজন নারী রয়েছেন, যাদের একজনকে লাথি মারার একটি ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

হামলার সময় ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। এ ঘটনার জেরে এশার নামাজের পর কর্মসূচি ঘোষণা করে শাহবাগবিরোধী ঐক্য। তবে ব্যানারে তাদের নাম ইংরেজিতে ‘অ্যান্টি-শাহবাগ মুভমেন্ট’ লেখা ছিল। ব্যানারে তাদের দাবি ছিল, ‘বাংলাদেশের ভূমিসন্তান আমজনতার বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, সাম্রাজ্যবাদের মদদপুষ্ট গোষ্ঠী লাল সন্ত্রাসী বাম-সেকুলার-শাহবাগীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এশার নামাজের পর মিছিল নিয়ে ৭০-৮০ জন নগরের আন্দরকিল্লা মোড় থেকে লালদীঘি মোড় হয়ে কোতোয়ালি থানার দিকে যান। সেখানে তারা আটক দুজনের মুক্তিসহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেন। মিছিলের একটি অংশ সরে গেলেও আরেকটি অংশ সেখানে রাত ১১টা পর্যন্ত অবস্থান করে। এ সময় থানার গেট লাগিয়ে দেওয়া হয়।

মিছিলে থাকা জুলাই ঐক্য চট্টগ্রামের প্রধান সমন্বয়কারী আবরার হাসান বলেন, ‘আমরা মিছিল নিয়ে থানা প্রাঙ্গণে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর কয়েকজন সমন্বয়ক থানার ভেতরে যান কথা বলতে। আমরা তখনই সবাইকে সরে যেতে বলি। তবে একটি অংশ সেখানে ছিল। পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা হওয়ার পর সেখান থেকে চলে আসি আমরা।’

আটক দুজনের পরিচয় জানতে চাইলে আবরার হাসান জানান, তাদের একজন বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ওবায়দুর রহমান। আরেকজন মো. সেলিম। তিনি শ্রমিক বলে জানিয়েছেন আবরার হাসান। তারা দুজনই জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা।

হামলার পর প্রেসক্লাবে চত্বরে নেতাকর্মীরা জড়ো হলে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতাকর্মীদের দেখা যায়। তবে সেখানে শিবিরের কেউ ছিলেন না বলে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি মো. তানজীর হোসেন ও সেক্রেটারি মুমিনুল হক।

এদিকে নারীকে লাথি দেওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর অভিযুক্ত যুবকের পরিচয় পাওয়া গেছে। আকাশ চৌধুরী নামে ওই যুবক সাতকানিয়া উপজেলার বাসিন্দা। তবে তিনি জামায়াতের কোনও পদে নেই হলে নিশ্চিত করেছেন দলটির একাধিক নেতা। যদিও আকাশ চৌধুরীর সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরীর একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে আকাশ চৌধুরীর বিরুদ্ধে নগরের মুরাদপুরে সুন্নিদের কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ ছিল।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগরের সহসভাপতি পুষ্পিতা নাথ বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এর আগেই ফেসবুকে নানা উস্কানিমূলক পোস্ট আসে। আজ আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা হয়েছে।

শাহবাগবিরোধী ঐক্যের প্রধান সমন্বয়কারী আবরার হাসান রিয়াদ বলেন, শাহবাগ আন্দোলনের নামে এসব বাম সংগঠন শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ কায়েমে সহযোগিতা করেছিল। এখন তারা আবার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা প্রতিহত করবো।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম বলেন, বিকালে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও হাতাহাতি হয়েছিল। আমরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এ ঘটনায় দুজকে আটক করা হয়েছে। রাতে তাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকারীরা থানায় এসেছিলেন। পরে থানা প্রাঙ্গণ থেকে সরে গেছেন তারা।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত