একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পাওয়া নিয়ে চট্টগ্রামে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৮ মে) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে নগরীর জামালখান এলাকায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এ সংঘর্ষ ঘটেছে। এতে কমপক্ষে সাত জন আহত হয়েছেন। পুলিশ সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই জনকে আটক করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানিয়েছে, জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের খালাসের প্রতিবাদে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট’ প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসূচি আহ্বান করে। একই সময়ে সেখানে পাল্টা কর্মসূচি দেয় ‘অ্যান্টি শাহবাগ মুভমেন্ট’ নামে একটি সংগঠন। উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ার পর পাল্টা-পাল্টি স্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে চলে যান।
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মী নুরুল হক বলেন, ‘অ্যান্টি শাহবাগ মুভমেন্ট নামে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা আমাদের কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ধ্রুব বড়ুয়া, সেক্রেটারি একান্ত বিশ্বাস, অর্থ সম্পাদক সুদীপ্ত গুহ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠক রিশাদ আহমেদ, নগর ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি রিপা মজুমদার ও ছাত্রফ্রন্টের নগর শাখার সদস্য অর্পিতা নাথ আহত হয়েছেন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
স্থানীয়রা জানান, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের ব্যানার কেড়ে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় অ্যান্টি শাহবাগ মুভমেন্টের কর্মীরা। সংঘর্ষের কারণে জামালখান এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
এ প্রসঙ্গে অ্যান্টি শাহবাগ মুভমেন্টের কর্মী এবং জুলাই ঐক্য মঞ্চের চট্টগ্রাম নগর সমন্বয়ক আবরার হাসান রিয়াদ বলেন, ‘আদালতের রায়কে নিয়ে বাম জোটের নেতাকর্মীরা দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। তারা আদালতের রায়ের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসূচি দিয়েছে। প্রেসক্লাবের সামনে অ্যান্টি শাহবাগ মুভমেন্টও কর্মসূচি দিয়েছে। এ সময় তাদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়েছে। আমাদের কেউ তাদের ওপর হামলা করেনি।’
এ প্রসঙ্গে নগরীর কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল করিম বলেন, ‘জামায়াত নেতার মুক্তি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কর্মসূচি ছিল। সেখানে বড় কোনও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। আমরা ঘটনাস্থল থেকে দুই জনকে আটক করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’