ভারতের মুম্বাইয়ে অবস্থিত পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম গভর্নর জেনারেল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর বাসভবন ‘জিন্নাহ হাউজে’ হামলার মামলায় ২৬৭ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন লাহোরের সন্ত্রাসবিরোধী আদালত (এটিসি)।
শনিবার (১৭ মে) কোট লাখপাত কারাগারে এটিসি বিচারক মনজার আলী গুলের নেতৃত্বে মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এই মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহেরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতাও রয়েছেন। তাই এদিন কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
শুনানিতে কারাগারে আটক পিটিআই নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ডা. ইয়াসমিন রশিদ, মিয়া মাহমুদুর রশিদ, সাবেক গভর্নর ওমর সরফরাজ চিমা ও সিনেটর ইজাজ চৌধুরি। তাদেরকে কোট লাখপত জেলেই আদালতের কার্যক্রম পরিচালনাকারী বিচারক মানজার আলী গিলের সামনে হাজির করা হয়। তবে আদালতকে জানানো হয়, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশিকে শুনানির শুরুর আগেই হৃদ্রোগ সংক্রান্ত সমস্যার কারণে পাঞ্জাব ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওলজিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এছাড়া, জামিনে মুক্ত পিটিআই নেতা আলিয়া হামজা মালিক ও রুবিনা জামিল, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট সানম জাভেদ ও তৈয়বা রাজা, ফ্যাশন ডিজাইনার খাদিজা শাহ ও অন্যান্য আসামিরাও কারাগারের ভেতরে অনুষ্ঠিত এই শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।
আসামিদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বুরহান মোয়াজ্জাম মালিক ও রানা মুদাসসির উমর আদালতে উপস্থিত হন। চার্জশিটের কপি দেওয়ার পর বিচারক জানিয়ে দেন, এই মামলায় আগামী ২৪ মে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হবে। এটিসি-১ এর বিচারক গিল পরে মামলার কার্যক্রম মুলতবি করেন।
উল্লেখ্য, সারওয়ার রোড থানায় পিটিআই নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়, যেখানে ২০২৩ সালের ৯ মে ইমরান খানের গ্রেফতারের প্রতিবাদে হওয়া বিক্ষোভের সময় জিন্নাহ হাউজে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৯৯৭ সালের ধারা ৭ এর অধীনে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগসহ রাষ্ট্রবিরোধী যুদ্ধ ঘোষণা বা উসকানি, সৈনিককে দায়িত্বচ্যুত করতে প্ররোচনা ও দাঙ্গার মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
জিন্নাহ হাউজ সাউথ কোর্ট ম্যানশন নামেও পরিচিত, ভারতের মুম্বাই শহরের মালাবার হিলে অবস্থিত একটি পরিত্যক্ত বাড়ি। এটি শহরের অন্যতম অভিজাত এলাকা হিসেবে বিবেচিত। বাড়িটি পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম গভর্নর জেনারেল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও তার পরিবারের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত। এই ভবনটিই ১৯৩৬ সাল থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত, অর্থাৎ করাচিতে স্থায়ীভাবে চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত জিন্নাহর প্রধান বাসস্থান ছিল।
সূত্র: ডন, এআরওয়াই
এসএএইচ