[ad_1]
বিমানের ভেতর যখন কক্সবাজারে অবতরণের কথা ঘোষণা হলো, তখন মা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘টেলিভিশনে কতবার দেখেছি কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। এটা কি সত্যিই সেই কক্সবাজার? আমার তো বিশ্বাস হয় না।’
পৌঁছাতে সন্ধ্যা হয়ে গেলে ইনানী বিচে মা-বাবাকে প্রথমবার সমুদ্র দেখাতে নিয়ে যাই। সেখানে সূর্যাস্তের নরম আলোয় কেবল পাথর আর পাথর দেখে তাঁরা আর সাগরে নামার সাহস করেননি। পাথরের ওপর হাঁটাহাঁটি করেই চলে এসেছিলেন।
পরদিন যখন সমুদ্রে নিয়ে যাই, মা বালুর ওপর হাঁটতে হাঁটতে ছোট্ট শিশুর মতো উল্লসিত হতে থাকেন। কাছে তাকান, দূরে তাকান, কখনো নিচু হয়ে সাগরের জল স্পর্শ করেন, হাতের তালুতে নেন, গড়িয়ে পড়ে তাঁর কনুই বেয়ে, একটা সময় স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে যান। আমাকে বলেন, ‘মা রে, আমার কেমন জানি ঘোর লাগছে।’
এবার মা-বাবা দুজনকেই সমুদ্রস্নানে নামিয়ে দিই। কিছুটা চোখের আড়াল হই। দেখতে থাকি—পাশাপাশি নিবিড় হয়ে সাগরের দিগন্তরেখার দিকে তাকিয়ে আছেন তাঁরা। মধুচন্দ্রিমা তো দুস্তর, তাঁরা জীবনে কোনো দিন পরস্পরের সান্নিধ্য উপভোগ করতে কোথাও যাননি। সমুদ্রের জলে পা ডুবিয়ে বাবার চোখের দিকে তাকিয়ে মা হয়তো বলেন, তুমি এত দিন এই অপার সৌন্দর্য আমাকে দেখাওনি কেন?
বাবা হয়তো চোখের ভাষাতেই বলেন, আমি তো আজকের দিনটার জন্যই অপেক্ষা করেছি, যেদিন তোমার-আমার সন্তানেরা মিলে আমাদের এই স্বপ্ন পূরণ করবে!
সাগর থেকে ফেরার পর বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘সমুদ্রভ্রমণের অভিজ্ঞতা বিষয়ে তুমি কী বলবে বাবা?’ তাঁর উত্তর, ‘আমার জীবনটাই তো বদলে গেল রে মা।’
আর মা? তাঁর একটাই কথা, ‘আবার কবে সমুদ্রে যাব?’
[ad_2]
Source link