[ad_1]
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘গত ১৬ বছরে বিএনপির বহু নেতাকর্মীর বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারের হাতে নীলফামারীর বিএনপির নেতা গোলাম রব্বানীর মতো বহু সহকর্মী খুন হয়েছেন। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আমাদের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। তবে আমরা এই নির্যাতনের জবাব তাদের মতো করে দেবো না। তারা অধম বলে আমরাও অধম হবো না। আমরা সব নির্যাতনের জবাব ৩১ দফা সফল করার মাধ্যমে দেবো।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি একা নয়, সব রাজনৈতিক দল ও শ্রেণিপেশার মানুষ একত্রিত হয়ে স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে। যেভাবে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে, তেমনি দেশ পুনর্গঠন করতে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকালে নীলফামারীতে এক জনসভায় লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আয়োজনে সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের দুবাছুরি দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৪ সালের ১৮ জানুয়ারি নীলফামারী সদর উপজেলায় র্যাবের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বিএনপির নেতা গোলাম রব্বানী নিহত হন। তার পরিবারকে নতুন বাড়ি হস্তান্তর উপলক্ষে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।
জনসভায় দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনাদের মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে। আমরা নিজেদের সংযত রাখবো এবং আমাদের সহকর্মীদের সংযত রাখতে চেষ্টা করবো। স্বৈরাচার যখন জনগণকে অধিকারবঞ্চিত করে অস্ত্রের মুখে ক্ষমতা ধরে রেখেছিল, তখন আমি বলেছিলাম “টেক ব্যাক বাংলাদেশ”। এর অর্থ হলো জনগণের বাকস্বাধীনতা ও জনগণের অর্থনৈতিক অধিকার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। বাংলাদেশে কী হবে তা দেশের মানুষ ঠিক করবে। টেক ব্যাক বাংলাদেশের প্রথম লক্ষ্য অর্জনে দেশের মানুষের সহযোগিতায় গণতন্ত্রকামী দলগুলো স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে। স্বৈরাচারের মাথা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। গত ১৬ বছর তারা নিজেদের আখের গোছাতে, ভিনদেশে তাদের প্রভুকে খুশি করতে দেশের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। স্বৈরাচার বিদায় নিয়েছে, এখন দেশকে পুনর্গঠন করতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে সেই প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণের আস্থা, আশা রক্ষা করাই এখন আমাদের বড় কাজ। বিএনপির কর্মী হিসেবে আপনি মানুষের কাছ থেকে যে সম্মান পান, সেটি ধরে রাখতে হবে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘দেশের জন্য আমরা দল থেকে কী করবো, দলীয়ভাবে কী পদক্ষেপ নিতে পারি—এসব আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে আছে। পরবর্তী নির্বাচনের আগে জনগণকে দেখাতে হবে, আপনি কী কী করতে পেরেছেন। সবটা হয়তো আমরা পারবো না, তবে যতটুকু করবো, তা জনগণের কাছে তুলে ধরবো। তখন জনগণ এর বিচার করবেন। আগামীর ভোটই শুধু ভোট না। শক্তিশালী গণতন্ত্র গড়ে তুলতে বাংলাদেশকে এখনও অনেক দূর এগোতে হবে।’
ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্র মেরামতের ভিত্তি হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন; বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের সব মূলনীতির প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োগ। ইনশাআল্লাহ আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, যেখানে নিশ্চিত হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সমৃদ্ধি ও স্বনির্ভরতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উদার রাজনৈতিক পরিবেশ এবং সামাজিক স্থিতি ও ন্যায়পরায়ণতা।’
জনসভায় বাবা হত্যার বিচার চেয়ে বক্তব্য দেন নিহত গোলাম রব্বানীর বড় মেয়ে রওনক জাহান। তারেক রহমানের পক্ষে নিহত গোলাম রব্বানীর স্ত্রীর হাতে নতুন বাড়ির চাবি তুলে দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান উপদেষ্টা রুহুল কবির রিজভী। এ সময় জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে রংপুর বিভাগে নিহত ১২ জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান জনসভায় সভাপতিত্ব করেন। সদস্য সচিব মোখছেদুল মোমিন ও সদস্য মোস্তাকিম বিল্লাহর সঞ্চালনায় জনসভায় রুহুল কবির রিজভী ছাড়াও অতিথি ছিলেন সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, আমরা বিএনপি পরিবার-এর উপদেষ্টা ও দলের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও আমরা বিএনপি পরিবার-এর উপদেষ্টা আশরাফ উদ্দিন প্রমুখ।
[ad_2]
Source link