রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) প্রাঙ্গণে সশস্ত্র হামলা, লুটপাট ও কয়েকজন সাংবাদিককে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। তবে হামলায় জড়িত স্থানীয় সন্ত্রাসী জাকির হোসেন ও তার অনুসারীদের এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সংগঠনটির অ্যাডমিন অফিসার সোলাইমান হোসেন বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৫০ জনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় এই মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি বিচার দাবি করেছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব), ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ), বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ), ডিফেন্স জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ডিজাব), বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরাম, নোয়াখালি জার্নালিস্ট ফোরামসহ (এনজেএফ) সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন।
গত বুধবার (২১ মে) রাতের আঁধারে পিস্তল, দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিতভাবে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) হামলা চালায় সন্ত্রাসী জাকির হোসেন, বিউটি খাতুন, আদর আক্তার, উদয় হাসান, হৃদয়, অন্তরা, ইমু, রানা, কামাল ও রতনসহ অজ্ঞাত প্রায় ৫০ জন সন্ত্রাসী।
এ হামলায় ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, সদস্য মশিউর রহমান, মাহবুব হাসান, দেলোয়ার মহিন, মফিজুল সাদিকসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার সূত্রপাত নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার (২১ মে) রাতে হঠাৎ জাকির গং ডিআরইউ কার্যালয়ের সামনে থেকে চেয়ারম্যান টি-স্টল নামে একটি দোকানের ৫০ হাজার টাকার মালামালসহ লুট করে নিয়ে যায়। দোকান লুটের বিষয়ে ডিআরইউ এর সিনিয়র সদস্য মশিউর রহমান জানতে চাইলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার ওপর আক্রমণ চালানো হয়। এছাড়া সভাপতি আবু সালেহ আকনের উদ্দেশ্যে পিস্তল উচিয়ে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকী দেয় জাকির হোসেন।
ঘটনা শুনে ডিআরইউ এর সভাপতি সেখানে গিয়ে সদস্যদের আক্রমণের বিষয়ে জানতে চাইলে তার ওপরও হামলা করা হয়। এতে সভাপতিসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক নেতা ও সদস্য আহত হন।
হামলা প্রসঙ্গে ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, “জাকিরের অনুসারীরা হঠাৎ করেই আমাদের ওপর হামলা করেছে। এর আগে একটা দোকান লুট করে নেওয়া হয়েছে। গরিব মানুষের একটা দোকান লুট করা কাম্য না। বিষয়টি জানতে চাইলে আমাদের সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়। সদস্যদের উপর হামলা চালিয়ে তারা ক্ষান্ত হয়নি। পরে ডিআরইউ এর সদস্যদের উপরে রাতের আধারে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়। রাতের আধারে কাপুরুষোচিত এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একইসঙ্গে সুষ্ঠু তদন্ত করে এর সঠিক বিচারের দাবি জানাই।”
ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, “জাকির গংরা গত ১৬ বছর সাংবাদিক ও এলাকার নিরীহ মানুষের ওপরে নির্যাতন করেছে। সাংবাদিকদের ওপর এই হামলার ঘটনার বিচার চাই আমরা।”
ভুক্তভোগী আজিমের স্ত্রী বলেন, “জাকিরের লোকজন আমাদের দোকানের ৫০ হাজার টাকার মালামাল লুট করেছে এবং দোকান ভাঙচুর করে তুলে নিয়ে গেছে। পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে অনেকজনকে আহত করেছে। জাকির আমাদের জায়গা জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে। সেখানে তারা মাদক ব্যবসা করে। আমি এর বিচার চাই।”
শাহবাগ থানার এসআই মো. খালেক মিয়া জানান, আসামি ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যহত আছে। যেকোনো সময় আসামিরা গ্রেপ্তার হবেন।