সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার একটি দুর্গম দ্বীপ ইউনিয়ন ‘গাবুরা’। এই ইউনিয়নের চলাচল মাধ্যম মোটরসাইকেল কিংবা নৌকা। এজন্য চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় ইউনিয়নবাসীকে।
দ্বীপ ইউনিয়নটিতে প্রথমবারের মতো ইঞ্জিনচালিত ভ্যান চলাচল শুরু হয়েছে। সোমবার (১২ মে) গাবুরার হরিষখালী থেকে ১০ নম্বর সোরা ব্রিজ পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ভ্যান চলাচল শুরু হয়। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক আনন্দ-উৎসাহ দেখা গেছে।
২০০৯ সালের ঘূর্ণিঝড় আইলার পর থেকে গাবুরার অনেক এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ, পাকা সড়ক কিংবা উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে যোগাযোগব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরমধ্যে ইঞ্জিনচালিত ভ্যান চলাচল শুরু হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ইউনিয়নবাসী।
গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই প্রথম আমাদের ইউনিয়নে ইঞ্জিনচালিত কোনো তিন চাকার ভ্যান চলাচল শুরু হয়েছে। এতদিন মানুষকে মোটরসাইকেলেই চলাচল করতে হতো, যা ব্যয়বহুল এবং ঝুঁকিপূর্ণ।’
তিনি আরও বলেন, সরকারি সহায়তা পেলে উন্নতমানের রাস্তা নির্মাণ করে ভ্যান চলাচলের পরিধি আরও বাড়ানো যাবে। এতে মানুষ কম খরচে নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা এই উদ্যোগ কতদূর গড়ায় তা দেখার।
ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, প্রথম ধাপে হরিষখালী থেকে সোরা ব্রিজ পর্যন্ত ইঞ্জিনচালিত ভ্যান চালু করা হয়েছে। এরপর পার্শ্বেমারী ও চাঁদনীমুখা পর্যন্ত এই সেবা বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আগে ভাবতেই পারতাম না এখানে ইঞ্জিনচালিত ভ্যান আসবে। এখন হাসপাতালে যাওয়া, বাজারে যাতায়াত বা মালামাল পরিবহন অনেক সহজ হবে। আমাদের অনেক দিনের স্বপ্নপূরণ হলো।
তিনি জানান, আগে এখানে প্যাডেলচালিত ভ্যান থাকলেও যাত্রী পরিবহন হতো না। আইলার পর রাস্তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মানুষ নদীপথে চলাচল করতো। ছোট ছোট রাস্তা দিয়ে শুধু ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল চলাচল করতো। সম্প্রতি কিছু এলাকায় নতুন রাস্তা তৈরি হওয়ায় স্থানীয় চেয়ারম্যানের উদ্যোগে ইঞ্জিনচালিত ভ্যান চালু করা সম্ভব হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রনি খাতুন বলেন, গাবুরার মতো দুর্গম এলাকায় ইঞ্জিনচালিত যানবাহন চলাচল শুরু হওয়া নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।
আহসানুর রহমান রাজীব/এসআর/জেআইএম