Homeদেশের গণমাধ্যমেদুর্বল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ব্যাংককে বাড়তি ক্ষমতা

দুর্বল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ব্যাংককে বাড়তি ক্ষমতা


ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে এবং দুর্বল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় কার্যকর ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও বেশি ক্ষমতা দিতে বৃহস্পবিার (২৪ এপ্রিল) ‘ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। রাষ্ট্রপতির সম্মতি পেলেই শিগগিরই এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

নতুন অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনও ব্যাংকের সুবিধাভোগী মালিক যদি ব্যাংকের সম্পদ বা তহবিল প্রতারণামূলকভাবে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেন— তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক ওই ব্যাংকের বিরুদ্ধে রেজুলেশন পদক্ষেপ নিতে পারবে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজন মতো সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা, মালিকানা পরিবর্তন কিংবা অবসায়নের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

অধ্যাদেশে দুর্বল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ব্যাংককে অস্থায়ী প্রশাসক নিয়োগ, বিদ্যমান বা নতুন শেয়ারধারীদের মাধ্যমে মূলধন বৃদ্ধি, এবং শেয়ার, সম্পদ ও দায় তৃতীয় পক্ষের কাছে হস্তান্তরের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এক বা একাধিক ‘ব্রিজ ব্যাংক’ গঠনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে, যা পরে বিক্রি করা যাবে।

ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বোচ্চ দুই কার্যদিবসের জন্য সম্পূর্ণ এবং তিন মাসের জন্য আংশিকভাবে কোনও ব্যাংকের ব্যবসায়িক কার্যক্রম স্থগিত করতে পারবে।

ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ পাসের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এটি পাস হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আস্থা আরও দৃঢ় হবে। আমরা চাই, আগে এটি কার্যকর হোক।’

অধ্যাদেশে ব্যাংক খাতের সংকট মোকাবিলায় ‘ব্যাংক খাত সংকট ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল’ নামে ছয় সদস্যের একটি সংস্থা গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এর প্রধান হবেন। সদস্য হিসেবে থাকবেন— বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, অর্থ সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের দুজন ডেপুটি গভর্নর।

যদি কোনও ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যায়— তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক আদালতে আবেদন করে অবসায়ক নিয়োগের ব্যবস্থা করবে। স্বেচ্ছায় অবসায়ন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। লাইসেন্স বাতিলের সাত কর্মদিবসের মধ্যে আমানত এবং দুই মাসের মধ্যে অন্যান্য দায় পরিশোধের বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে।

ব্যাংকের ব্যর্থতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিধিবিধান লঙ্ঘনের জন্য ৫০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে প্রাথমিক খসড়ায় থাকা তিন বছরের কারাদণ্ডের প্রস্তাব বাদ দেওয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে প্রতি দিনের দেরির জন্য অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা ধার্য করা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের খসড়া নিয়ে আলোচনা করেছিল। আলোচনায় বাংলাদেশের বাস্তবতায় ব্যাংক সংকট ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত উপদেষ্টা পরিষদ বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনেই কাউন্সিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ কার্যকর হলে ব্যাংক খাতে সুশাসন ও জবাবদিহি বাড়বে এবং আমানতকারীদের স্বার্থ আরও ভালোভাবে রক্ষা করা সম্ভব হবে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত