নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. মো. অহিদুজ্জামানের নিয়োগ বাণিজ্যসহ অন্যায়-অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে দুই শিক্ষককে তলব ও নিয়োগপ্রাপ্ত ১৩ শিক্ষকের কাগজপত্রের তথ্য চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (১৯ মে) দুদকের সমন্বিত নোয়াখালী জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফারুক আহমেদ বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে দুটি চিঠির মাধ্যমে দুই শিক্ষককে তলব ও তৎকালীন সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত ১৩ শিক্ষকের তথ্য প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ‘ড. মো. অহিদুজ্জামান, সাবেক ভিসি, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী ভিসি থাকাকালীন নিম্নবর্ণিত শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে (সার্কুলার ভিত্তিক) বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটি, আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই কমিটি, সিলেকশন বোর্ডে যেসব শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়োজিত ছিল তাদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সরবরাহের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।’
ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া ১৩ জন শিক্ষক হলেন- ‘অধ্যাপক ড. দিব্যদৃতি সরকার (রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ), সহকারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুল মমিন সিদ্দিকী (সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ), সহকারী অধ্যাপক ড. মো. রোকনুজ্জামান সিদ্দিকী (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ), অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন (বাংলা বিভাগ), প্রভাষক মো. সোহানুজ্জামান (বাংলা বিভাগ), সহকারী অধ্যাপক ড. আ. শ. ম. শরিফুর রহমান (প্রাণিবিদ্যা বিভাগ), ড. মো: আতিকুর রহমান ভূঁইয়া (কৃষি বিভাগ), অধ্যাপক ড. গাজী মো. মহসিন (কৃষি বিভাগ), সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ভূঁইয়া (আইআইটি), সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মো. সিয়াম (শিক্ষা বিভাগ), অধ্যাপক ড. এমডি মাসুদ রহমান (বাংলা বিভাগ), সহযোগী অধ্যাপক ড. সুবোধ কুমার সরকার (বিএমবি বিভাগ) ও সহকারী অধ্যাপক ইমরুল কায়েস (ইএসডিএম বিভাগ)।
অন্যদিকে শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মো. সিয়াম এবং বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. সোহানুজ্জামানকে তলব করা হয়েছে।
নোবিপ্রবির রেজিস্ট্রারের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এটি মূলত সাবেক ভিসির সময়ে দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে দুদক থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দুই শিক্ষককে তলব ও ১৩ শিক্ষকের তথ্য সরবরাহ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ড. এম অহিদুজ্জামান ২০১৫ সালের ২ জুন থেকে ২০১৯ সালের ১ জুন পর্যন্ত চার বছর নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ১১টি বিভাগ ও দুটি ইনিস্টিটিউটে ২৯৮ জন শিক্ষক, ২৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নতুনভাবে নিয়োগ এবং দেড় শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদোন্নতি প্রদান করেন।
তিনি বিজ্ঞপ্তির পদের চাইতে অতিরিক্ত নিয়োগ প্রদান এবং অযোগ্য ব্যক্তি ও নিজের আত্মীয়-স্বজনকে চাকরি দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও ড. এম অহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে আরও অনিয়ম ও নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে।
ইকবাল হোসেন মজনু/এফএ/এমএস