[ad_1]
যুদ্ধের এক হাজারতম দিনে ইউক্রেন প্রথমবারের মতো মার্কিন দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে। রাশিয়া এই হামলাকে যুদ্ধের একটি বড় ধরণের উত্তেজনা বৃদ্ধি হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ব্রায়ানস্ক অঞ্চলের একটি সামরিক স্থাপনায় ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হলেও একটির ধ্বংসাবশেষ লক্ষ্যবস্তুতে পড়ে। এতে কোনও প্রাণহানি বা বড় ক্ষতি হয়নি।
ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার অভ্যন্তরে প্রায় ১১০ কিলোমিটার ভেতরে একটি অস্ত্রাগারে আঘাত হানে। যেখানে দ্বিতীয় পর্যায়ে বিস্ফোরণ ঘটে। তবে, তারা ক্ষেপণাস্ত্রের ধরন স্পষ্ট করেনি।
যুদ্ধের ১ হাজারতম দিন পূর্তিতে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা যুদ্ধক্ষেত্রে উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। পশ্চিমা সমর্থনের ভবিষ্যৎ এবং আলোচনার সম্ভাবনা যুদ্ধের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই হামলার মাত্র কয়েকদিন আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে মাঝারি পাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেন। মস্কো এই সিদ্ধান্তকে সরাসরি যুদ্ধের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
যুদ্ধের এক হাজারতম দিন পূর্তির সময় ইউক্রেন যুদ্ধের ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। কিয়েভে মোমবাতি প্রজ্বলন এবং সেনাদের শ্রদ্ধা জানানোর প্রস্তুতি চলাকালীন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পার্লামেন্টে বলেন, এই যুদ্ধে বিজয়ের সময় এখন নির্ধারিত হচ্ছে। এই লড়াইয়ের ভবিষ্যৎ আমাদের ও মুক্তভাবে বাঁচতে চাওয়া প্রতিটি মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
যুদ্ধের শুরু থেকে ইউক্রেনের জনসংখ্যা এক-চতুর্থাংশ কমে গেছে, ৬০ লাখ মানুষ শরণার্থী হিসেবে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। পশ্চিমা গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষেই লাখ লাখ মানুষ হতাহত হয়েছে।
রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনের গ্রাম-গ্রামে ধীর গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। শীতের আগমনকে সামনে রেখে রবিবার মস্কো ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে।
অন্যদিকে, রাশিয়া ১১ হাজার উত্তর কোরীয় সেনা মোতায়েন করেছে এবং কুরস্ক অঞ্চলে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বলে ইউক্রেন দাবি করেছে। জেলেনস্কি জানান, পিয়ংইয়ং আরও ১ লাখ সেনা পাঠাতে পারে।
মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি নতুন পারমাণবিক নীতি স্বাক্ষর করেছেন। এতে বলা হয়েছে, কোনও বড় আক্রমণ রাশিয়ার ভূখণ্ডের অখণ্ডতাকে হুমকিতে ফেললে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের শর্ত শিথিল করা হবে।
তবে যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা এখনও অনিশ্চিত। জেলেনস্কি বলেন, আমরা আগামী বছর কূটনৈতিক পন্থায় যুদ্ধ শেষ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
কিন্তু কিয়েভের অবস্থান স্পষ্ট: রাশিয়ার সব দখলদার সেনা প্রত্যাহার এবং পশ্চিমা নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ছাড়া আলোচনা হবে না। রাশিয়া ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ এবং দখলকৃত প্রদেশগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহারের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরাগমনে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলো আরও সক্রিয় হয়ে উঠছে। জার্মানি, ফ্রান্স, পোল্যান্ডসহ ছয়টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে রাশিয়ার বহুমুখী হাইব্রিড কার্যক্রম নজিরবিহীন এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছে।
[ad_2]
Source link