Homeদেশের গণমাধ্যমেমুজিব আর জিয়া এক জিনিস নয় : দুদু

মুজিব আর জিয়া এক জিনিস নয় : দুদু

[ad_1]

শেখ মুজিবুর রহমান আর জিয়াউর রহমান এক জিনিস নয় মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, মুজিব গণতন্ত্র হত্যা করেছে আর জিয়া গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। দোয়া মাহফিলটির আয়োজন করে ধানের শীষ ঐক্যমঞ্চ (ঘাটাইল)।

‘জিয়াবাদ ও মুজিববাদ আর চাই না’ জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমি বলবো- ভাই, আপনাকে কে দেখতে বলেছে? কে ঠিকাদারি দিয়েছে আপনাকে? চোখ নেই, বুদ্ধি নেই, বিবেচনা নেই! মুজিব আর জিয়া এক জিনিস নয়। মুজিব গণতন্ত্র হত্যা করেছে আর জিয়া গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। মুজিব মুক্তিযুদ্ধের সময় পালিয়ে গেছেন, আর জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন এবং যুদ্ধ করেছেন। মুজিব বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ এনেছে, আর শহীদ জিয়া বাংলাদেশ থেকে দুর্ভিক্ষ দূর করেছেন। শহীদ জিয়া আর মুজিবের মধ্যে যে পার্থক্য বুঝে না, সে নাকি আবার রাজনৈতিক দল গঠন করবে! এটা দুঃখজনক। মানুষ জানে- শহীদ জিয়া, বেগম জিয়া এবং তারেক রহমান কী; আর ফ্যাসিবাদ কী।

তিনি বলেন, আরাফাত রহমান কোকো শুধু প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার আদরের পুত্র নন, তিনি একজন বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠকও ছিলেন। তিনি রাজনীতির সাথে না থাকলেও রাজনৈতিক পরিবারের একজন আদরের সন্তান ছিলেন। এ ধরনের একটা পরিবারের মানুষকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে, এটা আমার কাছে মনে হয়েছে। ৫ আগস্টের আগে এ কথা বলা যায়নি। কিন্তু ৫ আগস্টের পরে এটা প্রমাণ হয়েছে যে, বেগম জিয়া, শহীদ জিয়া ও তারেক রহমানের যে পরিবার; সে পরিবারকে ধ্বংস করার জন্য যে উদ্যোগ ছিল, তারই অংশ হিসেবে আরাফাত রহমান কোকোকে খুন করা হয়েছে। আরাফাত রহমান কোকোকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। তাকে অবহেলার সঙ্গে নির্যাতন এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করার মধ্য দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশে যে সাম্প্রতিক অবস্থা, সে অবস্থার প্রেক্ষিতে অনেক কথা বলতে ইচ্ছে করে। গত ১৭ বছর ধরে এ দেশে যে সীমাহীন লুটপাট, এত লুটপাট- তা পৃথিবীর আর কোথাও হয়নি। রাষ্ট্রের দু-একটি ব্যাংক নয়, ঘোষণা দিয়ে ১০-১২টি ব্যাংক খালি করে দিয়েছে। এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে একটি পরিবারের সদস্যরা শুধু লুটই নয়, টাকা পাচার থেকে শুরু করে সবকিছু করেছে। এই পরিবার বুঝিয়েছে, চুরি করাই তাদের কাজ, ডাকাতি করাই তাদের কাজ। একটা দেশে যারা নিজেদের রাজনৈতিক বলে দাবি করে, সেই পরিবারের শেখ মুজিবের ছেলে শেখ কামাল ব্যাংক ডাকাত হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল।

শামসুজ্জামান দুদু আরও বলেন, বিরোধী মতকে দমনের জন্য শেখ মুজিব রক্ষীবাহিনী বানিয়েছিলেন। তিনি ৪০-৪৫ হাজার মানুষকে খুন, গুম ও নিখোঁজ করেছেন। সিরাজ সিকদারের মতো ব্যক্তিকে শেখ মুজিব শুধু হত্যাই করেননি, জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে দম্ভের সাথে বলেছেন- কোথায় আজ সিরাজ সিকদার।

দুদু বলেন, শেখ মুজিবের জীবদ্দশায় এ দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে। যখন শেখ মুজিবুর রহমান তার দুই পুত্রকে সোনার মুকুট পরিয়ে বিয়ে দিচ্ছেন, সে সময় এ দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। সে দুর্ভিক্ষে লাখ লাখ মানুষ জীবন হারিয়েছে। এর মধ্য দিয়েই শুধু শেষ নয়; তার পরের ধাপ ছিল- শেখ মুজিব কাউকেই রাজনীতি করতে দিবেন না, কাউকে কথা বলতে দিবেন না, লিখতে দিবেন না। এরপর তিনি একটি দল বানালেন এবং বাকি সব দল নিষিদ্ধ করে দিলেন। সেই দলটি ছিল বাকশাল। তারপর তার যে পরিণতি হয়েছিল, সেটিকে অনেকে ভয়ংকর বলে, অনেকে নির্মম বলেন। ভয়ংকর, নির্মম-এর চেয়েও আরেকটি জিনিস হলো, শেখ মুজিব রাজনীতি নিয়ে ছেলেখেলা করেছিলেন। রাজনীতির প্রতিশোধ ভয়ংকর। সেটিই তার মরণ ঘটিয়েছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ মুজিবের কন্যা শেখ হাসিনা দম্ভ করে বলতেন, মুজিবকন্যা কখনো পালায় না। এখন কীভাবে পালালেন, সেটা সবাই দেখেছে। বিশ্বে এ রকম নজির নেই। তার বোন শেখ রেহানা এবং তাদের তিন সন্তান সবাই চোর।

বাংলাদেশের মানুষ তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় মন্তব্য করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এটাই সত্য। একটা মানুষ ১৭-১৮ বছর ধরে বিএনপিকে শুধু রক্ষা করেনি, গণতন্ত্রকামী মানুষকে রক্ষা করেছে। মানুষকে নির্দেশনা দিয়েছেন, সংগঠিত করেছেন। তারেক রহমান দেখিয়েছেন- মানুষের সাথে থাকলে, সে যত দূরেই থাকুক না কেন, মানুষ তাকে পছন্দ করবে এবং হৃদয় দিয়ে অনুভব করবে। তারেক রহমানের ক্ষেত্রে আমরা সেটা দেখেছি।

দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন নির্বাচন নিয়ে নানা কথা হচ্ছে। গণতন্ত্র ফিরে না এলে অর্থাৎ ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করার পরে জাতি গণতন্ত্রে ফিরবে, এটাতো বাস্তবসম্মত। গণতন্ত্রে ফেরার জন্য একমাত্র পথ হলো নির্বাচন। নির্বাচনের মধ্যে জাতিকে যদি না নিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে গণতন্ত্র ফিরে আসার দ্বিতীয় কোনো পথ আছে বলে মনে হয় না। যারা গণতন্ত্রে ফিরতে চান, তারা গণতন্ত্রের কথা বলছেন। আর যারা নির্বাচনকে বিরোধিতা করতে চান, তারা গণতন্ত্রের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। আমাদের মহাসচিব স্পষ্ট করে বলেছেন, এই সরকারকে নিরপেক্ষভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে। অর্থাৎ সব দলের সঙ্গে এই সরকারের সমান অধিকার থাকতে হবে। কিন্তু নতুন কোনো রাজনৈতিক দল গঠনের যারা উদ্যোগ নিয়েছেন, তারা যদি সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন, তাহলে বিতর্ক সৃষ্টি হবে। মহাসচিব সত্য কথা বলেছেন। যারা গণতন্ত্র এবং বাস্তবতায় থাকতে চান, তাদের বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যকে অভিনন্দন জানানো উচিত ছিল। কিন্তু তার সদিচ্ছা নিয়ে, তার উদ্যোগ নিয়ে যে কথা বলা হয়েছে- এটা দুঃখজনক ঘটনা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম টুটুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম রফিক, লোটন খন্দকার, হাতেম আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত