[ad_1]
মেট্রোরেল চালুর সময় যাত্রীদের জন্য দুই লাখ ৬৮ হাজার ৪৪১টি একক যাত্রার টিকিট দেওয়া হয়েছিল সব স্টেশনে। দুই বছর না যেতেই প্রায় দুই লাখের বেশি টিকিট খোয়া গেছে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) পক্ষ থেকে কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এসব টিকিট যাত্রীরা সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন। অল্প কিছু নষ্ট হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সেই সংকট কাটাতে ডিএমটিসিএল নতুন করে টিকিট আনার উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার টিকিট নতুন করে আবারও স্টেশনগুলোতে ছাড়া হয়েছে। ধাপে ধাপে আরও টিকিট আনা হবে। তবে এতেও সংকট কাটছে না, বরং যাত্রী বৃদ্ধি পাওয়ায় সংকট আরও বেড়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে অধিকাংশ মেট্রো স্টেশনে দুই একটি করে টিকিট ভেন্ডর মেশিন বন্ধ থাকতে দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পর্যাপ্ত টিকিট না থাকায় এসব মেশিনে টিকিট রাখা সম্ভব হয় না। যেগুলোতে টিকিট দেওয়া হয় সেগুলো দ্রুত শেষ হওয়ায় আবার নতুন করে টিকিট জমা করতে কিছুটা সময়ক্ষেপণ হয়। ফলে টিকিট পেতে নিয়মিত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। সর্বশেষ ৮ ডিসেম্বর মিরপুর ১১ নম্বর মেট্রোরেল স্টেশনে প্রায় ৪ ঘণ্টা একক যাত্রার টিকিটের সংকট দেখা দিয়েছিল। এই সময় একক টিকিটের যাত্রীদের স্টেশনে উঠতে বারণ করা হচ্ছিল। কেবল যেসব যাত্রীর এমআরটি পাস বা র্যাপিড পাস রয়েছে তারাই ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন।
১১ নম্বর স্টেশন-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্টেশন থেকে বের হওয়া যাত্রীরা যে টিকিট জমা দিচ্ছেন তার চেয়ে বেশি যাত্রী টিকিট কেটে স্টেশনে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছেন। ফলে টিকিট কিছু জমা পড়লেও তা যথেষ্ট নয়। বারবার টিকিট ভেন্ডর মেশিন খোলা সময়সাপেক্ষ, পর্যাপ্ত টিকিট জমা না পড়লে সেখানে টিকিট রাখা যায় না। আবার রাখলেও মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায়। তাই কাউন্টারে কিছু একক যাত্রার টিকিট জমা দেওয়া হলে সেখান থেকে যাত্রীরা নিচ্ছেন। কিন্তু বেশি যাত্রী হওয়ায় সংকট তৈরি হচ্ছে। তাই যাদের পাস নেই তাদের নিচ থেকেই উঠতে অনুৎসাহিত করা হচ্ছে। কর্মীদের বক্তব্য, স্টেশনে এসে টিকিটের জন্য অপেক্ষা করার চেয়ে বিকল্প ব্যবস্থা নিলে ভালো হবে।
গত অক্টোবরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমটিসিএল থেকে জানানো হয়, সব স্টেশন মিলিয়ে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৪৪১টি একক যাত্রার টিকেট দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে একক যাত্রার যাত্রীরা বহির্গমন গেটে বসানো নির্ধারিত মেশিনে জমা দেননি প্রায় ২ লাখ কার্ড। নষ্ট হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ৬ হাজার ৮৮১টি কার্ড। দেড় হাজার কার্ড অন্যভাবে হারিয়েছে।
এই সংকট কাটাতে জাপান থেকে নতুন করে টিকিট আনাচ্ছে ডিএমটিসিএল। পাশাপাশি নিয়ে যাওয়া টিকিট ফেরত দেওয়ার জন্য যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থাটি। ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, চার লাখ নতুন টিকিট বানানোর জন্য অর্ডার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার টিকিট এসেছে এবং সেগুলো স্টেশনে দেওয়া হয়েছে। বাকি টিকিটগুলোও ধাপে ধাপে আসবে। এয়ার মেইলের মাধ্যমে আনা হচ্ছে এসব টিকিট কার্ড। এদিকে কার্ডগুলো এনেই সফটওয়্যারে রি-ইনিশিয়ালাইজড (পুনরায় চালু করা) করে ছাড়া হবে। ফলে একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। আর এ কাজে যত বিলম্ব হচ্ছে ততই যাত্রী ভোগান্তি বাড়ছে। যাত্রীদের মতামত দ্রুত সময়ের মধ্যে এই টিকিটজনিত সমস্যা সমাধান করা হোক।
ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুতই একক টিকিটের সমস্যার সমাধান হবে। এ বিষয়ে মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৬ এর প্রকল্প পরিচালক মো. জাকারিয়া বলেন, বর্তমানে একক যাত্রার টিকিট আছে মাত্র ৪০ হাজার। যাত্রীরা যেমন নিয়ে গেছেন তেমন অকারণে বাঁকা করে নষ্টও করেছেন অনেক টিকিট। এর জন্য টিকিট সংকট তৈরি হয়েছে। মূল সংকট তৈরি হয় সকাল ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে। কারণ সকালে বেশিরভাগ যাত্রী মতিঝিল ও সচিবালয় যান। ফলে টিকিটগুলো সব ওইদিকে চলে যাচ্ছে। উত্তরার এই পাশ থেকে যদি ২০০ লোক যায় তবে ফিরে আসে ১০০ লোক। এতে করে একক যাত্রার ভারসাম্য হয় না।
এই মাসেই নতুন একক যাত্রার আরও টিকিট আনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, গত নভেম্বরে ২০ হাজার কার্ড আনা হয়েছে। এই মাসের ১৬ তারিখে আরও ২০ হাজার টিকিট দেশে আসার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এটা মাসের শেষের দিকে হাতে পাওয়া যাবে। আবার ২৮ ডিসেম্বর আরও ৩০ হাজার টিকিট আসার প্রক্রিয়া শুরু হবে। আশা করা যায় সামনের মাসের মধ্যে টিকিটের সংকট অনেকটাই দূর হয়ে যাবে।
টিকিট আনতে কিছু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, কয়েকটা জায়গা থেকে টিকিট বানানোর প্রক্রিয়া হয়ে থাকে। জাপান টিকিট দিলেও এর প্রিন্টিং হয় ইন্ডিয়া থেকে। এবং দেশে এনে টিকিটগুলো সফটওয়্যারে যুক্ত করতে হয়।
[ad_2]
Source link