Homeদেশের গণমাধ্যমেরাজধানীতে তীব্র জলাবদ্ধতা, বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন সড়ক

রাজধানীতে তীব্র জলাবদ্ধতা, বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন সড়ক

[ad_1]

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দিনভর টানা বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র জলাবদ্ধতা। বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন জায়গায় অলিগলি থেকে শুরু করে মূল সড়ক পর্যন্ত তলিয়ে গেছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নিউমার্কেট এলাকা বৃষ্টির পানিতে একেবারেই তলিয়ে গেছে। সেখানকার অলিগলি এমনকি প্রধান সড়কেও হাঁটু পর্যন্ত পানি। সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

নিউমার্কেট ছাড়াও যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, ডেমরা, ধোলাইখাল, গেন্ডারিয়া, মুগদা, গোপীবাগ, জুরাইন, শাহজালাল বিমানবন্দরের সামনের সড়ক, বাড্ডা, সাঁতারকুলের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া রামপুরা ও খিলগাঁওয়ের কিছু এলাকাতেও তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে পশ্চিম রামপুরার উলন, পূর্ব রামপুরার জামতলা, জাকির গলি, তালতলার কিছু অংশ, নবীনবাগ সেহেরুনবাগ এলাকার অনেক রাস্তা এখনও পানির নিচে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সেখানকার মানুষের।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় জনবদ্ধতা (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)

জলাবদ্ধতার ভোগান্তি থেকে নগরবাসীর মুক্তি মিলবে কবে

মাত্র একদিনের বৃষ্টিতেই সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ভোগান্তির অন্ত নেই রাজধানীবাসীর। ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে, যাত্রী, পথচারীসহ সাধারণ মানুষ মুখবুজে সহ্য করছেন জলাবদ্ধতা নামে এই যন্ত্রণার।

নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী সাত্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মার্কেটে পানি ঢুকে পড়েছে। তাই দোকান খুলতে পারেননি। আজ সারাদিন বেচাকেনা বন্ধ। প্রতি বছর বর্ষাকালে নিউমার্কেট এলাকা পানিতে ডুবে যায়। অথচ সিটি করপোরেশন কোনও ফলপ্রসূ উদ্যোগ নেয়নি। গতকাল রাতে সিটি করপোরেশনের কন্ট্রোল রুমে ফোন দিয়ে জানানোর পরও কোনও লাভ হয়নি।

জুরাইনের বাসিন্দা ও একটি বেসরকারি কলেজের প্রভাষক আফসানা মিমি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বৃষ্টি হলে আর রাস্তা দিয়ে স্বাভাবিকভাবে হাঁটা যায় না। অলিগলিতে হাঁটু সমান পানি উঠে থাকে। তাছাড়া ড্রেনে থাকা ময়লা-আবর্জনা সব ভেসে ওঠে। এমনকি বাসায় পর্যন্ত চলে আসে।

আফসানা মিমি আক্ষেপ করে বলেন, প্রায় ১০ বছর চাকরির সুবাদে আমার এই এলাকায় বসবাস। ওয়াসার পানির সমস্যা থেকে শুরু করে এমন কোনও সমস্যা নেই যা এই এলাকাতে নেই। বর্ষা এলে বিশেষ করে এই সমস্যাটা বেড়ে যায়। সিটি করপোরেশন বিগত সময়ে অসংখ্য উদ্যোগ নিয়েছে এই এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে কিন্তু কোনও কাজে আসেনি।

জলাবদ্ধতা নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আক্তার হোসেন বিপ্লব নামে একজন ফেসবুকে লেখেন, ড্রেনের ব্যবস্থার দূরাবস্থার কারণে প্রতি বছর ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এটি নিরসনে সরকারের পক্ষ থেকে কখনোই কোনও বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নেওয়া হয় নাই। আর নিলেও তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি। যার ভোগান্তি বর্ষা এলেই সাধারণ জনগণকে পোহাতে হয়।

এদিকে বাজেট অনুযায়ী সঠিক পরিকল্পনার অভাব, নীতিমালা না মানা আর ঠিকাদাররা নিম্নমানের কাজ করার পরও তাদের দিয়েই দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করানোর কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক নগরবিদ শেখ মুহাম্মদ মেহেদী আহসান।

বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, উন্নয়নকাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে এমন অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দুর্বল, দুর্নীতিগ্রস্ত ঠিকাদারদের দিয়ে এই কাজগুলো দীর্ঘদিন করানোর ফলে রাস্তার এমন বেহাল দশা। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে উন্নয়ন প্রকল্প মানসম্মতভাবে করার পরামর্শ দেন এই নগরবিদ।

মারপুরা এলাকায় জলাবদ্ধতা

জলাবদ্ধতার বিষয়ে যা বলছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন

প্রতি বছর বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলেই বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে সাময়িক সময়ের জন্য জলাবদ্ধতা নিরসন করলে স্থায়ীভাবে কীভাবে জলাবদ্ধতা নিরসন করা যায়, তা নিয়ে আদৌ কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করেনি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। ফলে বৃষ্টি হলেই ভোগান্তি পোহাতে হয় নগরবাসীকে।

জলাবদ্ধতা নিরসনে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) থেকে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কিনা তা জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে অনেক এলাকায় জলজট হয়েছে কিন্তু জলাবদ্ধতা না। জলাবদ্ধতা নিরসনে জরুরি কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। যদি কোনও জায়গায় জলাবদ্ধতা হয় সে ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের কন্ট্রোলরুমে সেখানকার লোকেশন দিলে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করবে।

তিনি আরও বলেন, আসন্ন কোরবানি ঈদ উপলক্ষে আমরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিরসনে চারটি বিশেষ টিম তৈরি করেছি। যেটি জলাবদ্ধতা নিরসনেও কাজ করবে। আর নিউমার্কেটের যে জলাবদ্ধতা, তা নিচু জায়গার কারণে হয়েছে। সেটা নিয়ে আমাদের বড় প্রকল্প রয়েছে। এ বছর নানা কারণে তা হয়নি। আগামী বছর বর্ষার আগেই আমরা এ নিয়ে পরিকল্পনা করবো।

ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে আছেন ডিএসসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ শফিউল্লাহ সিদ্দিক ভূঁইয়া। কোনও এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিলে কন্ট্রোল রুমের মোবাইল নম্বরে ০১৯৬৮৪৬৮৩৬৭ ফোন দিয়ে তথ্য দিলেই কাজ করে ডিএসসিসি।

এদিকে ডিএনসিসি জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, কোনও এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিলে নাগরিকদের ১৬১০৬ নম্বর হটলাইন অথবা কন্ট্রোল রুমের মোবাইল নম্বর ০১৭৩৩৯৮২৪৮৬ এ ফোন করে তথ্য দিতে। ঢাকা উত্তরের যেকোনও অঞ্চলে জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া মাত্রই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত