Homeদেশের গণমাধ্যমেরাবিতে পোষ্য কোটা বাতিল, ১২ ঘণ্টা পর মুক্ত প্রশাসন

রাবিতে পোষ্য কোটা বাতিল, ১২ ঘণ্টা পর মুক্ত প্রশাসন

[ad_1]

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্‌ হাসান নকীব।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে এ ঘোষণা দেন উপাচার্য। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ হয়ে থাকা শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা প্রশাসন ভবন থেকে বাইরে বের হয়ে আসেন।

এর আগে রাত সোয়া ৯টার দিকে প্রশাসনিক ভবনে উপস্থিত হন উপাচার্য। পরে সাড়ে ৯টার দিকে দুই উপ-উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ছয় শিক্ষার্থী প্রতিনিধির সঙ্গে উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে আলোচনায় বসেন। এ সময় উপাচার্য শিক্ষার্থীদের পোষ্য কোটা বাতিলের নিশ্চয়তা দেন। পরে রাত ১০টার দিকে অবরুদ্ধ থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের হয়ে আসেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা একটি বিজয় মিছিল নিয়ে বের হন।

সভায় উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্‌ হাসান নকীব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা নির্দিষ্ট আইন ও প্রক্রিয়া রয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া মেনেই পোষ্য কোটা বাতিলের আনুষ্ঠানিক নোটিশ দেওয়া হবে। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে রাবিতে আর পোষ্য কোটা থাকছে না। এ সময় তার দায়িত্বকালে আর কোটা ফেরত আসবে না বলে শিক্ষার্থীদের নিশ্চয়তা দেন তিনি।

রাবির ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে আজ সারাদিন প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এদিন সকাল পৌনে ৯টা থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবন থেকে সবাইকে বের হয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী বের হয়ে গেলেও অনেকে বের হননি।

পরে সকাল ১০টায় প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন দুই উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খানসহ অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী। পরে একই দাবিতে সারাদিন প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান করেন তারা। এ সময় কাউকে ভেতর প্রবেশ করতে বা বের হতে দেওয়া হয়নি। বিকেল ৪টার দিকে দাবি না মেনে নেওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দেন সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার।

এদিকে প্রশাসনের নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে এবং এর প্রতিবাদ জানিয়ে একদিনের পূর্ণদিবস কর্মবিরতিসহ তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরে বিকেলে গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানান অফিসার্স সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোক্তার হোসেন।

সন্ধ্যা হওয়ার পর থেকেই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। রাত ৮টার দিকে প্রশাসন ভবনের তালা ভেঙে বাইরে বের হতে যান অবরুদ্ধ শিক্ষক-কর্মকর্তারা। এ সময় ভেতর থেকে শিক্ষার্থীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সাবল দিয়ে তালা ভাঙ্গার চেষ্টার ঘটনা ঘটে। এতে গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লিটন ও মার্কেটিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদ আহত হন।

শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবন ঘিরে রাখেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দেন। ভেতরে অনেকে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের প্রতি তালা খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। তবে দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত প্রশাসন ভবনের তালা খুলতে অস্বীকৃতি জানান তারা। পরে ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশ করলে শিক্ষার্থীরা তাদের ধাওয়া দিয়ে বের করে দেন।

আন্দোলনের একপর্যায়ে সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারসহ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে যান। পরে তাদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে আবারও আন্দোলনে যোগ দেন তারা। একপর্যায়ে উপাচার্য ঘটনাস্থলে আসেন। সেইসাথে আলোচনা এবং পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি শেষ হয়।

প্রসঙ্গত, বুধবার (১ জানুয়ারি) রাবিতে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানদের জন্য বরাদ্দকৃত পোষ্য কোটার হার পুনঃনির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর আগে, গতবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ৪ শতাংশ পোষ্য কোটা ছিল। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর নতুন প্রশাসন সেই কোটা ১ শতাংশ কমিয়ে ৩ শতাংশ করে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরপরই কয়েকজন শিক্ষার্থী পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য কোটার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাতে ২০ সদস্যের একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে। তিন দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা থাকলেও প্রায় দেড় মাস পর বিকেলে এ নতুন সিদ্ধান্ত জানায় প্রশাসন।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত