Homeদেশের গণমাধ্যমেরাশিয়ার গ্যাস বর্জনের পরিকল্পনা ইউরোপের, বাধ সেধেছে আইনি জটিলতা

রাশিয়ার গ্যাস বর্জনের পরিকল্পনা ইউরোপের, বাধ সেধেছে আইনি জটিলতা


রাশিয়ার গ্যাসের ওপর অবশিষ্ট নির্ভরতাটুকুও ছেঁটে ফেলতে মঙ্গলবার (৬ মে) একটি রোডম্যাপ প্রকাশ করতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তবে আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা না থাকার কারণে, রুশ গ্যাসের ইউরোপীয় ক্রেতাদের জন্য চুক্তি থেকে জরুরি ভিত্তিতে সরে আসার মতো আইনি পদক্ষেপ (ফোর্স ম্যাজিউর) নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

টার্কস্ট্রিম পাইপলাইন এবং এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহের মাধ্যমে রাশিয়া থেকে এখনও প্রায় ১৯ শতাংশ গ্যাস পাচ্ছে ইউরোপ। তবে ২০২৭ সালের মধ্যে রুশ জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা পুরোপুরি বন্ধ করার একটি অ-বাধ্যতামূলক (নন-বাইন্ডিং) লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ইইউ।

এদিকে, ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধাবসান ঘটাতে তোড়জোড় করছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি বাস্তবায়ন হলে, পাশার দান অবশ্য উলটে যেতে পারে। তখন রুশ জ্বালানির ওপর বিধিনিষেধ শিথিল হয়ে বাজারে তাদের প্রবেশগম্যতা দ্বার আবারও উন্মুক্ত হতে পারে।

এই পরিকল্পনা সামনে আসছে এমন এক সময়, যখন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর শান্তিচুক্তির জন্য চাপ সৃষ্টি করছে ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে। যদি এ ধরনের একটি চুক্তি হয়, তবে তা আবার রাশিয়ার জ্বালানি বাজারে প্রবেশের দরজা খুলে দিতে পারে এবং নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে পারে।

একজন জ্যেষ্ঠ ইইউ কর্মকর্তা গত মাসে জানিয়েছেন, রুশ গ্যাস চুক্তি থেকে ফোর্স ম্যাজিউর প্রয়োগ করে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে বের করে আনার নিরাপদ উপায় খুঁজছে ইউরোপীয় কমিশন। পাশাপাশি, মস্কোর সঙ্গে নতুন চুক্তি কোনও পক্ষের নতুন চুক্তি ঠেকানোর জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

আইনজীবী ও বিশ্লেষকদের মতে, ফোর্স ম্যাজিউর বাস্তবায়নের সম্ভাবনা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরই রুশ গ্যাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিল। অথচ দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও পুরোপুরি রুশ নির্ভরতা পরিহার করা যায়নি।

একাধিক আইন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, রাশিয়ার কাছে থেকে গ্যাস আমদানিতে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা জারি করাই নির্ভরতা কমানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায়। তবে এক্ষেত্রে ইইউর ২৭টি সদস্য দেশের সর্বসম্মতি প্রয়োজন। তবে বাধ সেধেছে স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরি।

রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরির শাসকগোষ্ঠী। হাঙ্গেরি তো স্পষ্টভাবে জানিয়েই দিয়েছে, রুশ জ্বালানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি প্রচেষ্টায় তারা আপত্তি জানাবে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গ্যাজপ্রম ও ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে গ্যাস চুক্তি লঙ্ঘন এবং অর্থ পরিশোধে ব্যর্থতার অভিযোগে একাধিক মামলা চলছে। রয়টার্সের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এসব মামলার মোট আর্থিক মূল্য প্রায় দুই হাজার ১০০ কোটি মার্কিন ডলার।

রুশ কোম্পানি গ্যাজপ্রমের সঙ্গে করা গ্যাস চুক্তিগুলোতে ‘টেইক অর পে’ শর্ত সংযুক্ত রয়েছে। এই শর্তের আওতায়, ক্রয়চুক্তি করার পর গ্যাস নিতে অস্বীকৃতি জানালেও অর্থ পরিশোধ থেকে ক্ষমা নেই। শর্ত অনুযায়ী, এই অর্থের পরিমাণ মোট মূল্যের ৯৫ শতাংশও হতে পারে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত