Homeদেশের গণমাধ্যমেশিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাজেট কমানো কাম্য নয়: বিশেষজ্ঞদের অভিমত

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাজেট কমানো কাম্য নয়: বিশেষজ্ঞদের অভিমত


 

অধিকাংশ ক্ষেত্রে সামষ্টিক অর্থনৈতিক চাপে থাকলেই বাজেট-প্রণেতারা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের বরাদ্দ কমানোর পথ বেছে নেন। আগামী অর্থবছরের বাজেটেও চলতি অর্থবছরের তুলনায় এ দুই খাতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ কমানোর খবর প্রকাশিত হয়েছে। জন-গুরুত্বপূর্ণ এ দুই খাতে বরাদ্দ কমানো কাম্য নয় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলেন, বিদ্যমান বাস্তবতায় যদি বরাদ্দ কমাতেই হয়, তখন হ্রাসকৃত বরাদ্দ কোথায় কীভাবে ব্যয় করা হবে সে বিষয়ে নতুন গণমুখী নীতি-ভাবনা থাকা দরকার। এক্ষেত্রে গতানুগতিকতা কোনো সুফল বয়ে আনবে না।

বুধবার (২৮ মে) বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে ‘শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠানে এমন মতামত দেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. ফজলুর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী ফারুক হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন, এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হালিদা হানুম আখতার।

উন্নয়ন সমন্বয়ের পক্ষ থেকে প্রেক্ষাপট উপস্থাপনায় সংস্থার গবেষণা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাদভী বলেন যে, যে দেশগুলো স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশ হয়েছে তারা এই উত্তরণের আগের বছরগুলোতে গড়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে যথাক্রম জাতীয় বাজেটের ১৬ শতাংশ ও ৯ শতাংশ বরাদ্দ দিয়েছে। অথচ বাংলাদেশের ২০২৬-এ উন্নয়নশীল দেশে উন্নতি হওয়ার কথা থাকলেও এখানে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঐ দুই খাতে গড়ে জাতীয় বাজেটের ১২ শতাংশ ও ৩ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ফলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ছাড়াই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় নামতে হবে।

স্বাস্থ্যখাতে বাজেটে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ওই বরাদ্দ ব্যয় করতে পারেনা বলে- অনেক সময় এ খাতে বাজেট বাড়ানোর বিপক্ষে যুক্তি দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে ড. হালিদা হানুম বলেন, দেশের স্বাস্থ্য ব্যয়ের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসছে নাগরিকদের পকেট থেকে, আর সরকারের দেওয়া বাজেট থেকে আসছে মাত্র ২৩ শতাংশ। কাজেই বিশেষত নিম্ন আয় শ্রেণীর নাগরিকদের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ কমানোর লক্ষ্যকে সামনে রেখেই বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ দিতে হবে।

এক্ষেত্রে বিনামূল্যে ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রী বাবদ সরকারি বরাদ্দ বাড়ালে তা অব্যয়িত থাকার সম্ভাবনা কম এবং এতে করে নাগরিকদের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমবে বলে মনে করেন তিনি। কারণ স্বাস্থ্য ব্যয় বাবদ নাগরিকরা যে ব্যয় করতে বাধ্য হন তার ৬৭ শতাংশই যায় ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রী বাবদ।

সাম্প্রতিক অর্থবছরগুলোতে শিক্ষা খাতে বাজেটের সবচেয়ে বড় অংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে দাবি করা হলেও সরাসরি শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন বরাদ্দকেও শিক্ষার বরাদ্দ হিসেবে দেখানো হয় বলে জানান ড. কামরুল হাসান মামুন।

তিনি বলেন, সরাসরি শিক্ষার জন্য যে বরাদ্দ দেওয়া হয় তার মধ্যেও বেশিরভাগ ব্যয় হয় অবকাঠামো নির্মাণ ও বিভিন্ন কেনাকাটা বাবদ। যেমন চলতি অর্থবছরে শিক্ষায় বিনিয়োগ প্রকল্প বাবদ যে উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দ হয়েছে তার মধ্যে ৮২ শতাংশই যাচ্ছে অবকাঠামো নির্মাণ ও কেনাকাটায়। এর ফলে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের জন্য যথেষ্ট বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

সংলাপে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন তরুণ গবেষক, নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যম কর্মীরা। সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী ড. মাহবুব হাসান।

এমএএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত