Homeদেশের গণমাধ্যমেসরকার যদি বিবৃতি দিয়েই যায়, কাজটা করবে কে

সরকার যদি বিবৃতি দিয়েই যায়, কাজটা করবে কে

[ad_1]

এ প্রশ্নের একটা উত্তর মিলবে ৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোয় প্রকাশিত লেখক ও গবেষক গওহার নঈম ওয়ারার ‘আমনে পাস হয়নি, বোরোতেও কি ফেল হবে’ শিরোনামের লেখায়। তিনি লিখেছেন, ‘সিংহভাগ সেচব্যবস্থা চলে সমবায় উদ্যোগে নানা কিছিমের সমিতির মাধ্যমে। এগুলো সংগঠিত করতে, চালাতে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী স্থানীয় নেতৃত্বের আশীর্বাদ লাগে। অধিকাংশ আশীর্বাদদাতার হালহকিকত আগের মতো নেই। ইতিমধ্যেই “এবার আমরা খাব” গোষ্ঠী বেরিয়ে পড়েছে যার যার ক্ষমতা অনুযায়ী।’

এই যে ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত রাজনৈতিক গোষ্ঠী ছাড়া কৃষক যে সেচ পান না, তার মানে হচ্ছে, রাষ্ট্র বলি, আর সরকার বলি, বাংলাদেশের বিরাট অংশজুড়ে তার অস্তিত্ব প্রায় খুঁজে পাওয়া যায় না। নাগরিকের সঙ্গে রাষ্ট্র কিংবা সরকারের সম্পর্ক এখানে সরাসরি নয়। মাঝখানে কায়েমি রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে ধরেই তাদের রাষ্ট্রের কাছে পৌঁছাতে হয়।

দক্ষিণ এশিয়ার সমাজ ও রাজনীতিবিষয়ক গবেষক আরাইল্ড এঙ্গেলসন রুড বাংলাদেশের সমাজের এই ধরনকে বলেছেন নেটওয়ার্ক সমাজ। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলছেন, ‘বাংলাদেশে রাষ্ট্র দুর্বল। প্রশাসনিক যন্ত্র হিসেবেও রাষ্ট্র দুর্বল। দেশের বড় অংশে কার্যত রাষ্ট্রের কোনো অস্তিত্ব নেই। গ্রামীণ পর্যায়ে আপনি এমন কাউকে ভোট দেন, যিনি প্রয়োজনে আপনাকে রক্ষা করবেন। এমন কাউকে, যিনি শক্তিশালী, যাঁর সংযোগ আছে, যিনি হস্তক্ষেপ করতে পারেন। আপনার যদি পুলিশ, প্রতিবেশী বা প্রশাসনের সঙ্গে সমস্যা হয়, আপনি স্থানীয় নেতার কাছে যাবেন। সেই নেতা যেতে পারেন একজন মধ্যপর্যায়ের নেতার কাছে। সেই নেতা আবার যেতে পারেন এমপির কাছে। তারপর আপনি আপনার সমস্যা সমাধান করতে পারেন’ (বাংলাদেশে একটি নতুন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা খুব কঠিন হবে, প্রথম আলো, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪)।

বাংলাদেশের সমাজ, রাজনীতি ও অর্থনীতির এই সরল সমীকরণ পাঠ করা না গেলে যেকোনো পরিবর্তনের আলোচনাই অর্থহীন হয়ে পড়ে। কার্ল মার্ক্স ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ভারতবর্ষের সমাজের স্থবিরতার পেছনে এখানকার স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রামভিত্তিক সমাজকে দায়ী করেছিলেন। একেকটা গ্রামই একেকটা বিচ্ছিন্ন দেশ। রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ছিল রাজধানীতে। প্রশ্ন হলো, রাষ্ট্রের সঙ্গে নাগরিকের এই যে বিচ্ছিন্নতা কিংবা ব্যবধান, সেখান থেকে আমরা কতটা বেরিয়ে আসতে পেরেছি।

বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশ এমন একটা দেশ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে সারা দেশ থেকে সম্পদ এনে ঢাকাকে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। ফলে চিকিৎসা থেকে শুরু করে সুই কেনা—সবই ঢাকাকেন্দ্রিক। এখানেই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অস্তিত্ব প্রবলভাবে বিরাজ করে। প্রশ্ন হচ্ছে, রাষ্ট্র যেখানে প্রবলভাবে অস্তিত্বশীল থাকার কথা, সেই ঢাকাতেই কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারের অস্তিত্ব কি আমরা খুঁজে পাচ্ছি? বলা চলে, সেই শূন্যস্থানে প্রবল প্রতাপে বিরাজ করছে ‘মবতন্ত্র’।

[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত