[ad_1]
স্বামীর বাড়িতে প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে এক যুগল আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পরিবার। শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বেতুয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাত ১১টায় পুলিশ স্বামীর বাড়ি থেকে নববধুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। এসময় লাশের পাশ থেকে একটি চিরকুটও উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত গৃহবধু খাদিজা আক্তার উর্মি (১৭) কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানাধীন মাটিয়ারা গ্রামের জামাল হোসেনের মেয়ে। সে চৌয়ারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। অপরদিকে ভিডিও কলে যুক্ত থাকা নিহত ওমান প্রবাসী প্রেমিক সাফায়েত হোসেন (২৩)। তিনি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে।
জানা গেছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর লালমাই উপজেলার ভুলইন উত্তর ইউনিয়নের বেতুয়া (কৃষ্ণপুর) গ্রামের রং মিস্ত্রী আরিফুর রহমানের সঙ্গে নিহত খাদিজার বিয়ে হয়। বাল্যবিয়ে হওয়ায় মোবাইল কোর্ট আতঙ্কে ঘরোয়াভাবে গোপনে বিয়ের আয়োজন করা হয়।
পুলিশের উদ্ধার করা চিরকুটে লেখা ছিল, চাইছিলাম দুজনে একসঙ্গে বেঁচে থাকতে। বাঁচতে দিলো না, আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না। ও বেঁচে থাকলেও তোমরা ওকে খুন করতে এবং ওর ফ্যামিলিকে জেলের ভাত খাওয়াইতে। তাই নিজেও দুনিয়া ছাড়লাম, ওরেও আমার সঙ্গে নিয়ে গেলাম। আপনাদের কাছে একটা শেষ ইচ্ছা। বাবা-মা, ভাই বোনের কাছে একটা আবদার, দুনিয়াতে যেহেতু থাকতে দেয় নাই। আমাদের দাফনটা যেন একসঙ্গে হয়। একদিন আগে-পরে হলেও একই কবরস্থানে যেন দাফন করে।
নিহত উর্মির মা নুরুন্নাহার জানান, গত ১৪ অক্টোবর (সোমবার) আমাদের আত্মীয় বেতুয়ার আরিফুর রহমানের সঙ্গে মেয়েকে বিয়ে দিই। বিয়ের পর মেয়ে স্বামীর বাড়িতে হাসি-খুশিতেই ছিল। শনিবার রাতে হঠাৎ শুনি উর্মি ও তার প্রেমিক সাফায়েত ভিডিওকলে আত্মহত্যা করেছে।
প্রবাসী সাফায়াতের বাবা আবদুল খালেক বলেন, একবছর আগে ছেলেকে ওমান পাঠিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে ছেলে হঠাৎ বিদেশে কর্মস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। খবর নিয়ে শুনলাম ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে আমার ছেলের সাথে উর্মি নামের এক মেয়ের পরিচয় হয়েছিল। হঠাৎ মেয়েটির বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সে অসুস্থ হয়ে গেছে। শনিবার রাতে সেই মেয়ে আমার ছেলের সাথে ভিডিওকলে চিরকুট লিখে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি।
লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কদিন আগেই মেয়েটির বিয়ে হয়েছে শুনেছি। প্রবাসী প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। শুনেছি প্রবাসী প্রেমিকও একইভাবে আত্মহত্যা করেছেন।
শনিবার রাত ১১টায় আমরা নববধুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
মরদেহের পাশে হাতে লিখা একটি চিরকুট পাওয়া গেছে উল্লেখ করে ওসি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, আত্মহত্যার পূর্বে মেয়েটি তার মা-বাবার উদ্দেশ্যে এটি লিখেছিল। এই ঘটনায় নববধুর ভাই মেহেদী হাসান বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।
[ad_2]
Source link