Homeদেশের গণমাধ্যমেহজের ইতিহাসে রাজনৈতিক ঘটনাচক্র | প্রথম আলো

হজের ইতিহাসে রাজনৈতিক ঘটনাচক্র | প্রথম আলো

[ad_1]

ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হজ। হজযাত্রা মুসলমানদের জন্য একটি আধ্যাত্মিক যাত্রা, যা শুধু ব্যক্তিগত ইবাদতই নয়, বরং ঐক্য ও সম্প্রীতির প্রতীক। তবে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে হজের এই পবিত্র ইবাদত কখনো বন্ধ হয়ে গেছে, আবার কখনো আংশিকভাবে পালন করা করা গেছে। এর পেছনে প্রধান কারণ ছিল রাজনৈতিক সংঘাত, নিরাপত্তাহীনতা এবং শাসন ক্ষমতার দ্বন্দ্ব।

রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে বিঘ্ন

ইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকেই হজের আয়োজন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভরশীল ছিল। মক্কা ও মদিনা, যেখানে হজের প্রধান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়, সেগুলো ছিল রাজনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্র। বিভিন্ন রাজবংশ ও শাসনকর্তারা এই পবিত্র ভূমির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছিলেন। এই প্রতিযোগিতা প্রায়ই হজের পথে বাধা সৃষ্টি করত। ইতিহাসবিদ তাবারি (মৃত্যু: ৩১০ হিজরি/৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ) উল্লেখ করেছেন যে ৭৩ হিজরি (৬৯৩ খ্রিষ্টাব্দ) সনে উমাইয়া ও জুবাইরিদের মধ্যে সংঘাতের কারণে আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইরের (মৃত্যু: ৭৩ হিজরি) অনুগত মক্কার অধিবাসীরা হজ পালন করতে পারেননি। উমাইয়া শাসক হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ (মৃত্যু: ৯৫ হিজরি) মক্কা অবরোধ করেছিলেন, ফলে হজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ আরাফাতে অবস্থান করা সম্ভব হয়নি।

আব্বাসি খিলাফতের সময়ও রাজনৈতিক অস্থিরতা হজের ওপর প্রভাব ফেলেছিল। ইবনে তাগরি বারদি (মৃত্যু: ৮৭৪ হিজরি) তাঁর আন-নুজুম আজ-জাহিরা গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে ১৪৫ হিজরি সনে আলাউইদের নেতৃত্বে হিজাজ ও বসরায় বিদ্রোহের কারণে মিসর ও শাম (সিরিয়া) থেকে কেউ হজে যেতে পারেননি, যা মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ (আন-নাফস আয-জাকিয়া) এবং তাঁর ভাই ইব্রাহিমের নেতৃত্বে পরিচালিত এই বিদ্রোহ আব্বাসিদের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং হজের পথে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করে।

ফাতেমি ও আব্বাসিদের মধ্যে দ্বন্দ্বও হজ বন্ধের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ ছিল। ফাতেমি খিলাফত, যারা মিসর ও শাম থেকে তাদের ক্ষমতা বিস্তার করেছিল, তারা মক্কা ও মদিনার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিল। এই প্রতিযোগিতা ৪০১ হিজরি (১০১১ খ্রিষ্টাব্দ) সনে তীব্র আকার ধারণ করে, যখন ইরাক, শাম, খোরাসান, এবং মিসর থেকে কেউ হজে যেতে পারেননি। ইবনে উযারি আল-মারাক্কুশি তাঁর আল-বায়ান আল-মুগরিব গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে ৪০১ হিজরি (১০১১ খ্রিষ্টাব্দ) সনে হজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই বছরে শাম (সিরিয়া), ইরাক, খোরাসান এবং অন্যান্য অঞ্চল থেকে কেউ হজে যেতে পারেননি। কেবল ইয়েমেনের কিছু লোক এবং মক্কায় বসবাসকারী স্বল্পসংখ্যক মুজাবির (স্থানীয় বাসিন্দা) হজ পালন করেছিলেন। এই বন্ধের পেছনে প্রধান কারণ ছিল ফাতেমি ও আব্বাসিদের মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, যা হজের পথে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করেছিল। এ ছাড়া ইরাকে দজলা নদীর বন্যা এবং অঞ্চলটিতে সামগ্রিক অরাজকতাও হজ বন্ধে ভূমিকা রেখেছিল।

[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত