Homeবিনোদনঅঞ্জনার বর্ণাঢ্য জীবনের সমাপ্তি | কালবেলা

অঞ্জনার বর্ণাঢ্য জীবনের সমাপ্তি | কালবেলা

[ad_1]

সত্তর থেকে নব্বই দশক—ঢাকাই সিনেমার তখন সোনালি সময়, অঞ্জনা রহমান ছিলেন সে সময়কার জনপ্রিয় তারকা। নায়িকা হিসেবে একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন, কাজ করেছেন তৎকালীন দেশের প্রথম সারির সব নির্মাতার সঙ্গে, অর্জন করেছেন দর্শকদের হৃদয়। অবশেষে পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চের মায়া কাটিয়ে ভক্ত অনুরাগীদের কাঁদিয়ে চিরবিদায় নিলেন কিংবদন্তি এ অভিনেত্রী।

বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন অঞ্জনা রহমান। হাসপাতালের বিছানা থেকে আর ঘরে ফেরা হলো না তার। গত শুক্রবার রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এ অভিনেত্রী। রাজধানীর বনানী কবরস্থানে গতকাল শনিবার বেলা ৩টার দিকে সহকর্মী ও ভক্ত-অনুরাগীদের উপস্থিতিতে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

১৯৬৫ সালের ২৭ জুন ঢাকায় এক সংস্কৃতিমনা পরিবারে অঞ্জনার জন্ম। ছোটবেলা থেকে নৃত্যের প্রতি আগ্রহের কারণে বাবা-মা তাকে নৃত্য শিখতে ভারতে পাঠান। সেখানে ওস্তাদ বাবুরাজ হীরালালের অধীনে নাচের তালিম নেন এবং কত্থক নৃত্য শিখেন অঞ্জনা রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মাত্র চার বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে অঞ্জনার আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর আর থেমে থাকেননি। নৃত্যশিল্পী হিসেবে ছোট থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেছেন এবং নৃত্যে তিনবার জাতীয় পুরস্কার লাভ ও একবার এশিয়া মহাদেশীয় নৃত্য প্রতিযোগিতায় প্রথম হন তিনি।

ক্যারিয়ারের শুরুতে নাম ছিল অঞ্জনা সাহা। বিয়ে করেন পরিচালক আজিজুর রহমান বুলিকে। বিয়ের কারণে ধর্ম পরিবর্তনের সঙ্গে নাম পরিবর্তন করে হয়েছিলেন অঞ্জনা রহমান। তবে তাদের বিচ্ছেদও হয়ে যায়। যে বিয়ের কারণে নাম পরিবর্তন সেই বিয়ে না টেকার পরও পেছনে না ফিরে একই নাম ও ধর্ম ধরে রাখেন অঞ্জনা। বিভিন্ন আলোচনায় নিজের ধর্ম চর্চার কথাও জানান তিনি। সাদাকালো থেকে রঙিন বাংলা চলচ্চিত্রের সাক্ষী গুণী এই অভিনেত্রী। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে তিন শতাধিক সিনেমাতে কাজ করেছেন অঞ্জনা। ১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি ঢাকাই সিনেমায় কাজ শুরু করলেও তার মুক্তি পাওয়া প্রথম চলচ্চিত্র ছিল শামসুদ্দিন টগর পরিচালিত ‘দস্যু বনহুর’। নায়ক সোহেল রানার ডাকে এসে তার বিপরীতে অভিনয় করে ওই সিনেমার পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি অঞ্জনাকে। ৯টি দেশের ১৩টি ভাষার সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, তুরস্ক, থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা। নিজের সেরা সময়ে ঢাকাই সিনেমার প্রথম সারির প্রায় সব নায়কের বিপরীতেই অভিনয় করেছেন তিনি।

নায়করাজ রাজ্জাকের সঙ্গে তাকে দেখা গেছে ৩০টি সিনেমায়, যার মধ্যে রয়েছে ‘অশিক্ষিত’, ‘রজনীগন্ধা’, ‘আশার আলো’, ‘জিঞ্জির’, ‘আনারকলি’, ‘বিধাতা’, ‘বৌরানী’, ‘সোনার হরিণ’, ‘মানা’, ‘রামরহিমজন’, ‘সানাই’, ‘সোহাগ’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব বিবি গোলাম’ ও ‘অভিযান’-এর মতো দর্শকনন্দিত চলচ্চিত্র। এ ছাড়া ভারতের সুপারস্টার মিঠুন চক্রবর্তী; পাকিস্তানের অভিনেতা ফয়সাল নাদীম, জাভেদ শেখ, ইসমাইল শাহ; নেপালের শীবশ্রেষ্ঠ ও ভুবন কেসির সঙ্গেও অভিনয় করেছেন এই নায়িকা।

অভিনয়ের পাশাপাশি অঞ্জনা চলচ্চিত্র প্রযোজনাও করেছেন। তার প্রযোজিত চলচ্চিত্রগুলো হলো ‘নেপালী মেয়ে’, ‘হিম্মতওয়ালী’, ‘দেশ বিদেশ’, ‘বাপের বেটা’, ‘রঙিন প্রাণ সজনী’, ‘শ্বশুরবাড়ি’, ‘লাল সর্দার’, ‘রাজা রানী বাদশা’, ‘ডান্ডা মেরে ঠান্ডা’, ‘বন্ধু যখন শত্রু’।

১৯৮১ সালে ‘গাংচিল’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন অঞ্জনা। এরপর ১৯৮৬ সালে ‘পরিণীতা’ সিনেমায় ললিতা চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করে একই পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি ‘পরিণীতা’, ‘মোহনা’ ও ‘রাম রহিম জন’ সিনেমার জন্য তিনবার বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন।

[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত