Homeবিনোদনএটি ঐতিহাসিক একটি নেতিবাচক চরিত্র: মিলটন

এটি ঐতিহাসিক একটি নেতিবাচক চরিত্র: মিলটন


বর্তমান সময়ের বহুল আলোচিত মঞ্চ নাটক “ ট্রায়াল অব সূর্য সেন”। একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত নাট্যকার ও অভিনেতা মাসুম আজিজের নাট্যরূপ ও নির্দেশনায় ঢাকা পদাতিকের প্রযোজনা ট্রায়াল অব সূর্য সেন। মাসুম আজিজ গত হওয়ার পর নাটকটির নিব নির্দেশনা দিয়েছেন অভিনেতা ও চলচ্চিত্র পরিচালক নাদের চৌধুরী। আর এই নাটকের গুরুত্বপূর্ণ দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন রবিউল মিলটন। এর আগে ঢাকা পদাতিকের বেশ কয়েকটি প্রযোজনায় কাজী চপল, দেবাশিস ঘোষের নির্দেশনায়ও কাজ করেছেন মিলটন।

ট্রায়াল অব সূর্য সেন নাটকে নেত্র সেন চরিত্রে অভিনয় করছেন আপনি ………
হ্যাঁ, এই চরিত্রটি ঐতিহাসিক একটি নেতিবাচক চরিত্র। মাস্টার দা সূর্য সেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন করলে ব্রিটিশ সরকার তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য সেই সময় পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে। ধীরে ধীরে পুরস্কারের পরিমান বেড়ে পাঁচ থেকে পনের হাজার হয়। বুঝতেই পারছেন সেই সময় পনের হাজার টাকা নিশ্চিত এই সময়ে কোটি টাকার সমান। এই লোভ ছাড়তে পারে না নেত্র সেন। সূর্য সেনকে ধরিয়ে দেয় ব্রিটিশদের হাতে। তবে এই লোভ থেকে অর্জিত টাকা নেত্র সেন পাওয়ার আগেই মাস্টার দা সূর্য সেনের দলের লোকজন নেত্র সেনের বাড়ীতে নির্মমভাবে হত্যা করে। নেত্র সেন নিয়ে খুব বেশি স্টাডি করতে আমি পারিনি, কারণ তার সম্পর্কে খুব বেশি কিছু পাওয়া যায় না। তবে নির্দেশক মাসুম আজিজ, এবং পরবর্তীতে নাদের চৌধুরীর দেয়া ধারণা থেকেই চরিত্রটি তুলেছি। নাটকে নেত্র সেনের নির্মম মৃত্যু মঞ্চের দর্শকদের আনন্দ দিয়েছে, এটাই আসলে চরিত্রের সার্থকতা বলে মনে করি। এছাড়া অন্য দলের অনেকেও প্রশংশা করেছেন।

নাটকে সূর্য সেন নাদের চৌধুরী সব মাধ্যমের একজন শক্তিশালী অভিনেতা , তার সাথে কাজ করছেন……
ঠিকই বলেছেন, নাদের ভাই একজন বড় অভিনেতা। উনি এতো ব্যস্ত হওয়া স্বত্বেও থিয়েটার অন্তপ্রান মানুষ। তবে উনি এই নাটকের নির্দেশকও । একারণেই শুধু আমি না, প্রতিটি কলাকুশলীদের কাছ থেকে নিংড়ে নিয়েছেন। নাদের ভাই ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন দুর্দান্ত অভিনেতা–অভিনেত্রী কাজ করছেন এই নাটকে। তাদের সবাই হয়তো মিডিয়ায় পরিচিত মুখ নয়, তবে থিয়েটার অঙ্গনে বেশ সুপরিচিত।। তাছাড়া এই নাটকের গল্প, প্রেক্ষাপট, স্ক্রিপ্ট, মঞ্চ পরিকল্পনা, সংগীত, আলোক সবকিছুই যত্ন নিয়ে করা। আর এসব কারনেই প্রডাকশনটির প্রায় ৪০টির মতো শো করতে পেরেছি।

নেত্র সেন চরিত্রটি কতটুকু চ্যালেঞ্জিং ছিল………
অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। নেত্র সেন চরিত্রে আমি সুযোগ পাওয়ার পর সূর্য সেন নিয়ে স্টাডি করার চেষ্টা করেছি। নেত্র সেনকে ধারণ করার জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি। নাদের ভাই আমাকে চরিত্রটি বুঝিয়ে দিয়েছেন। মাসজুড়ে রিহারসেল করেছি, তারপর মঞ্চে অভিনয় করেছি।

ট্রায়াল অব সূর্য সেন নিয়ে দেশের বাইরে শো করেছিল ঢাকা পদাতিক।……..
হ্যাঁ, সর্বশেষ ২০২৩ সালের এপ্রিলে নয়া দিল্লীর একটি উৎসবে ঢাকা পদাতিকের এই নাটক আমন্ত্রণ পেয়েছিল। দিল্লীর চিত্তরঞ্জন পার্ক এলাকায় বিপিন চন্দ্র পাল অডিটোরিয়ামে ১৪ এবং ১৬ এপ্রিল দুটি শো করেছিলাম আমরা। দিল্লীর উৎসবটি বেশ প্রেস্তিজিয়াস হওয়ায় অনেক গন্যমান্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। কলকাতা থেকেও অনেকে সেখানে গিয়েছিলেন উৎসবকে কেন্দ্র করে। সেই উৎসবে নাটকটি দারুণ প্রশংসিত হয়েছে। সূর্য সেন যেহেতু ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন করেছিলেন, সেদিক দিয়ে সূর্য সেনের প্রতি দুই দেশেরই ইমোশন কাজ করে।

থিয়েটারের সাথে আপনার যুক্ত হওয়া………
ছোটবেলায় ছোট চাচার নাটকের শো দেখতে গিয়েছিলাম। তখন অনেক ছোট, নিজেদের পরিবারের কারো কোলে বসে নাটক দেখেছিলাম। আমার চাচা ওই নাটকের পারফর্মার ছিলেন। সেটাই ভেতরে গেথে গিয়েছিল।। এরপর ক্লাস এইট থেকেই ওই চাচার কাছে থেকেই আমার লেখাপড়া করা, বেড়ে ওঠা। চাচাকে কাছ থেকে দেখেছি নাটক লিখতে, রাত জেগে মহড়া করতে, মঞ্চের সাথে উনার জড়িত থাকাই আমাকে থিয়েটার করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। আমি ২০০০ সালে এসএসসি পরীক্ষার পর খুলনার ফুলতলায় অন্ব্যেশন নাট্যগোষ্ঠীতে যাই এক বন্ধুর মাধ্যমে। এইচএসসি পাশ করার পর ঢাকায় চলে আসি পড়াশোনার জন্য। আমার থিয়েটারের স্বপ্নটাও আরও একটু বড় হয়। ঢাকায় এসে অনার্সে ভর্তি হওয়ার ছয় সাত মাস পর ওয়ার্কশপের মাধ্যমে সুযোগ পাই ঢাকার অন্যতম সেরা নাট্যদল ঢাকা পদাতিকে। সেই থেকেই এই দলের হয়ে কাজ করছি।

এই নাটকে আপনাকে অন্য কোন চরিত্র বেছে নিতে বলা হলে………
দেখুন, আমি এই নাটকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছি। এর মধ্যে একটি হলো “নেত্র সেন” এবং অন্যটি “ মিস্টার ক্রেইগ”। ক্রেইগ হলেন তৎকালীন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি। আমি মনে করি নির্দেশক আমাকে যে চরিত্রে ফিট বলে মনে হয়েছে সেটাতেই সুযোগ দিয়েছেন। অন্য চরিত্রটি যদিও খুব ছোট তবু সেটির গভীরতা এবং ঐতিহাসিক একটি পটভূমি আছে। সত্যি বলতে এই নাটকের সবাই যার যার জায়গায় দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন।

ঢাকা পদাতিকের হয়ে আর কি কি কাজ করেছেন…..?
আমি ওয়ার্কশপের মাধ্যমে দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরই একটি পথনাটকে কাজ করি। কাজী শিলার নাট্যরূপে কাজী চপল ছিলেন সেটির নির্দেশক। এরপর বড় প্রযোজনা নির্দেশক নাদের চৌধুরীর নির্দেশনায় “জলদাসে” কাজ করি। জলদাসের পর “কথা ৭১” ছিল অন্যতম। এটির নির্দেশনা দিয়েছিলেন দেবাশিস ঘোষ।

ঢাকা পদাতিকের নতুন প্রযোজনা কি আসছে ?
এই মুহূর্তে দলের দুটি নতুন প্রডাকশনের কাজ চলছে। “পালট মুদ্রা” এবং “সিন্দুক” নামের দুটি নাটক। সিন্দুকের মহড়া এগিয়ে চলছে জোরালোভাবে। কাজী চপলের নির্দেশনায় এই নাটকটি জুলাইয়ের শেষে মঞ্চে উঠবে আশা করছি। এটি সিরিয়াস কমেডি ধরনের একটি নাটক।

ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় এখন কাজের প্রচুর সুযোগ তৈরি হয়েছে……
আমি দেশের একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরী করছি। যেটি কিনা বাংলাদেশের এক নম্বর ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিকস, হোম ও কিচেন আয়াপ্লায়েন্স এবং প্রযুক্তিপন্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। আমার অফিসের কাজের ব্যস্ততায় মিডিয়ায় কাজ করার সময় বের করা কিছুটা কঠিন। আর আমি ছাত্র অবস্থায় ছয় সাত বছর নাটক বিজ্ঞাপন নির্মাণে কাজ করেছি। এখন ভিজ্যুয়াল মিডিয়া আমাকে খুব একটা টানে না।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত