অভিনয় তার ধর্ম, চরিত্র তার অস্ত্র আর সাহসই তার পরিচয়। বিদ্যা বালান একটি নাম, একটি অধ্যায়, একটি বিপ্লব। ‘হাম পাঁচ’-এর মিষ্টি রাধিকা মাথুর থেকে শুরু করে রুপালি পর্দার দুর্বার দাপটে আজ ঠিক দুই দশক পূর্ণ করলেন এই জাত অভিনেত্রী। এই ২০ বছরের যাত্রা শুধুই সময়ের পরিমাপ নয়, এটি এক সংগ্রাম, সাফল্য ও শিল্পীর আত্মবিশ্বাসে গাথা এক মহাকাব্য।
হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। বিদ্যা বলিউডে তার বড় পর্দায় অভিষেক ঘটান আজ থেকে ঠিক ২০ বছর আগে। প্রদীপ সরকার পরিচালিত ‘পরিণীতা’ নামক সংগীতনির্ভর রোমান্টিক চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। এই সিনেমা ছিল শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ১৯১৪ সালের বাংলা উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। এতে বিদ্যার পাশাপাশি প্রধান ভূমিকায় ছিলেন সাইফ আলি খান ও সঞ্জয় দত্ত এবং আরও ছিলেন রাইমা সেন, সব্যসাচী চক্রবর্তী ও দিয়া মির্জা। এই দুই দশকে বলিউডে বিদ্যা নিজেকে এমন এক অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, যিনি পর্দায় যেমন আলোড়ন তোলেন, তেমনি পর্দার বাইরেও। তিনি সিনে-ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিত ভিন্নধর্মী সিনেমা বেছে নেওয়ার জন্য এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে অংশ নেওয়ার জন্য।
চলুন দেখে নিই বলিউডে বিদ্যার ২০ বছরের যাত্রার স্মরণীয় কিছু চরিত্র—
ললিতা (পরিণীতা)
‘পরিণীতা’ তার প্রথম বলিউড সিনেমা। যেখানে বিদ্যা বালান ললিতার চরিত্রে অভিনয় করেন। সেখানে দেখা যায় একজন সহজ-সরল কিন্তু দৃঢ়চেতা মেয়ে, যে জানে কখন নিজের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হয় এবং তাদের রক্ষা করতে হয়।
অবনী চতুর্বেদী / মঞ্জুলিকা (ভুল ভুলাইয়া)
প্রিয়দর্শনের ২০০৭ সালের সাইকোলজিক্যাল হরর কমেডি সিনেমায় বিদ্যা বালান অভিনয় করেন অবনী ও মঞ্জুলিকা নামক দ্বৈত চরিত্রে। অবনীর ভূমিকায় তিনি তার সরলতা দিয়ে সবার মন জয় করেন এবং তার শৈশব সুখকর না হওয়ার জন্য সহানুভূতি অর্জন করেন।
এ সিনেমায় বিদ্যা বালানের পাশাপাশি আরও অভিনয় করেন অক্ষয় কুমার, পরেশ রাওয়াল, রাজপাল যাদব, আমিশা প্যাটেলসহ অনেকে।
রেশমা/সিল্ক (দ্য ডার্টি পিকচার)
২০১১ সালে সিল্ক স্মিথার জীবনের অনুপ্রেরণায় নির্মিত হয় ‘দ্য ডার্টি পিকচার’ সিনেমা। এটি নির্মাণ করেন মিলন লুথরিয়া। এ সিনেমায় বিদ্যা বালান পরিণত হন এক যৌন আকর্ষণের প্রতীকে, যিনি বক্স অফিস কাঁপিয়ে তোলেন। পরবর্তী সময়ে এ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিদ্যা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা অভিনেত্রীর সম্মান অর্জন করেন।
বাসুধা প্রসাদ (হামারি আধুরি কাহানি)
২০১৫ সালে মোহিত সুরির পরিচালনায় নির্মিত এ চলচ্চিত্রে যেখানে ইমরান হাশমি ও রাজকুমার রাও প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, সেখানে বিদ্যা বালান উপহার দেন এক গভীর আবেগঘন ও হৃদয়স্পর্শী পারফরম্যান্স।
সিনেমায় প্রেম, বিচ্ছেদ ও আকাঙ্ক্ষার জটিল অনুভূতিগুলোকে তিনি যেভাবে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলেন, তা দর্শকদের চোখে জল এনে দেয়। তার অভিনয়ে যে সহজাত আবেগ ও সৌন্দর্য রয়েছে, তা সত্যিই সে সময় মুগ্ধ করে দর্শকদের।