[ad_1]
মাত্র তিন মাস আগেও যেসব ছাত্র একতাবদ্ধ হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছে, ঢাল হয়ে একে অপরের জীবন রক্ষা করেছে, তারা কেন আজ হিংসা হানাহানিতে লিপ্ত হয়ে পরস্পরের রক্ত ঝরাচ্ছে? কেন রাজপথে নেমে প্রতিদিন সহিংস আন্দোলন করতে হচ্ছে অধিকার বঞ্চিতদের? আন্দোলনের মিত্রদের কণ্ঠে কেন এত তাড়াতাড়ি অনৈক্য ও বিভক্তির সুর? এসব প্রশ্ন তুলেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রশ্ন তুলে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, গত কয়েকমাসের সংঘাত, সংঘর্ষ, অস্থিরতা ও গণঅভ্যুত্থানের মিত্রদের বিভক্তির দায় অন্তর্বর্তী সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। সরকারকে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার ও দেশবাসীর উদ্বেগ দূর করার আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনাকর সংঘাতময় পরিস্থিতিতে উদ্বেগ ও শান্তি রক্ষায় করণীয় প্রসঙ্গে এবি পার্টি আহূত ‘জরুরি সংবাদ সম্মেলন’ থেকে আজ এসব কথা বলা হয়। এদিন বিকাল সাড়ে ৩টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন দলের আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার।
সংবাদ সম্মেলনে মঞ্জু আরও বলেন, হাজারো ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত এই সরকার আন্দোলনে সম্পৃক্ত সব পক্ষের ঐক্য রক্ষার ব্যপারে শুরু থেকেই উদাসীন। দ্রব্যমূল্যরে উদর্ধ্বগতিতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের উদ্বেগ তারা আমলে নিচ্ছে না। আহত সংগ্রামীরাসহ প্রতিদিন রাজপথে নেমে আসতে হচ্ছে অধিকারের দাবিতে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে একটা ভালো সমন্বয় টিম তৈরি করে এসব আন্দোলন ও দাবি দাওয়া টেবিলে বসেই সমাধান করা যেতো। বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বের যে অভিযোগ— তার কোনও সঠিক সুরাহা হচ্ছে না। তুচ্ছ কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্রদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, গোয়েন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাফিলতি এখানে অত্যন্ত সুস্পষ্ট। অহিংস গণঅভ্যুত্থানের জনসমাগমের বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝিও সরকার আগাম ব্যবস্থা নিলে সমাধান করা যেতো। কয়েকটি জাতীয় পত্রিকার অতীত ভূমিকা নিয়ে সংক্ষুব্ধদের বিষয়টিকেও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিরসন সম্ভব হতো বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরের চরম নৈরাজ্যবাদী শাসনের অবসানের পর দেশবাসী আশা করেছিলেন, সব জায়গায় ধীরে ধীরে শান্তি ফিরবে। কিন্তু পতিত ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে অরাজকতা তৈরির জন্য বারবার চেষ্টা চালাচ্ছে, সরকার সে ষড়যন্ত্রের বিষয়ে কোনও আগাম পদক্ষেপ নিতেতো পারছেই না বরং কখনও কখনও নিজের মিত্র শক্তিদের দূরে সরিয়ে তাদেরকে ষড়যন্ত্রকারীদের দোসর বলে দায় এড়াতে চাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সরকারের নীতির সমলোচনা করে বলা হয়, রাষ্ট্র শাসনে কোমলতা বলে কিছু নেই বরং ন্যায় ও ইনসাফের জন্য যথার্থতার নীতি অনুসরণই কাম্য। সর্বাত্মক জনসমর্থন, বিপ্লবের স্পিরিট, প্রভূত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব পাওয়া সত্ত্বেও ড. ইউনূসের মতো শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া জননন্দিত ব্যক্তিত্ব যদি দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে না পারেন, তাহলে তা হবে খুবই দুঃখজনক। এবি পার্টির পক্ষ থেকে সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার সব পক্ষকে অস্থিরতা পরিহার করে ধৈর্য ও সহনশীলতার ভিত্তিতে একটি সমঝোতা সনদ তৈরির প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। শিগগিরিই তারা বৈষম্যবিরোধী সব ছাত্র-জনতাকে নিয়ে ‘গণঅভ্যুত্থান সনদ’ তৈরির পদক্ষেপ নেবেন বলে ঘোষণা দেন।
[ad_2]
Source link