Homeরাজনীতিএই সরকার যেন জনগণকে উদ্বিগ্ন না করে: বাম গণতান্ত্রিক জোট

এই সরকার যেন জনগণকে উদ্বিগ্ন না করে: বাম গণতান্ত্রিক জোট


অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা বলেছেন, আগের সরকারের মতো এই সরকারও যেন জনগণকে উদ্বিগ্ন করে না রাখে। জিনিসপত্রের দাম, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এখনও রোধ হয়নি। এগুলোকে জরুরি কর্তব্য হিসেবে নিতে হবে, কারণ জনগণ যদি আশাহত হয় তাহলে কোনও ভালো কাজ বা সংস্কারের কথা শুনবে না।

সংলাপ শেষে শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকাল ৪টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

তিনি বলেন, আমরা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলেছি, মনে রাখা দরকার, আগে যে সরকার ছিল তাদের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিদায় করা হয়েছে, এই জন্য যে তারা জনগণকে উদ্বিগ্ন করে রেখেছিল। আমরা বলেছি, এই সরকার যেন জনগণকে এভাবে উদ্বিগ্ন না করে। ইতোমধ্যে দুই মাস পার হয়েছে, জিনিসপত্রের দাম ভয়াবহ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এখনও রোধ হয়নি। আমরা বলেছি এগুলোকে জরুরি কর্তব্য হিসেবে নিতে হবে, কারণ জনগণ যদি আশাহত হয় তাহলে কোনও ভালো কাজ বা সংস্কারের কথা শুনবে না।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সব সংস্কার করার দায়িত্ব এই সরকারের না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই। তবে এর মধ্যে প্রধান হবে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার। আজ থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করে নির্বাচন কবে হবে সেই রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। অন্যান্য সংস্কারের যে কাজগুলো আছে, সেই প্রস্তাব তারা করে যাবেন এবং পরবর্তী নির্বাচিত সরকার সেই কাজগুলো করবে। আমরা বলেছি এই সরকারের এমন কোনও কাজ করা ঠিক হবে না, যা মানুষের কাছে তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা মানে হচ্ছে আমরা যেই গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত করেছি, সে গণঅভ্যুত্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। সেই জন্য অনেক কাজ করা যাবে না।

তিনি বলেন, তারা বলেছেন অনেকগুলো সংস্কারের প্রস্তাব আসবে। ঐক্যমত্য যতটুকু হবে সেটুকু তারা গ্রহণ করবেন।

প্রিন্স বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত না করতে আমরা আহ্বান জানিয়েছি। রাজনীতি বন্ধের নামে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, এটা করা যাবে না।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হত্যার বিচার করতে হবে। তবে আমরা দেখলাম এসব ট্রাইব্যুনালে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হলো। দখলবাজদের পরিবর্তে আরেক দখলবাজ হলো। এসব ঘটনা মানুষকে, সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। আমরা চাই আপনার একটা ভালো নির্বাচন দিয়ে যার যার জায়গায় ফিরে যাবেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের ধর্মীয় এবং আদিবাসী সংখ্যালঘুরা কেন নিরাপত্তাহীনতায় থাকবে? এটা ঠিক না। আবার সম্প্রীতি তৈরি করে আগামী দিনে সংখ্যালঘুদের যেই পূজা উৎসব আছে এবং আদিবাসীদের যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো সমাধানের দিকে নজর দিতে হবে।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ করেন ৬ সদস্যের বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রতিনিধিদল। এতে ছিলেন বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি শাহ্ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের উপদেষ্টা খালেকুজ্জামান।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তার দুই দফা সংলাপ হয়, এটি তৃতীয় দফা সংলাপ।

সংলাপের সময়সূচি অনু্যায়ী, এদিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাম গণতান্ত্রিক জোট, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টির সংলাপ হওয়ার কথা। এর আগে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে সংলাপ হয়।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত