[ad_1]
বিভ্রান্তিমূলক কথা বলে কিছু রাজনৈতিক দল ‘নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন— কখনও বলেন যাবেন না, কখনও বলেন যাবেন, কখনও বলেন এটা হলে যাবো, কখনও বলেন ওটা হলে যাবো। আরে ভাই, আপনাদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ২০০৮ সালে বিএনপি এবং আমাদের জোট নির্বাচনে গিয়েছিল তার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের অনেক নামি-দামি, অনেক বিখ্যাত-প্রখ্যাত মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে ফাঁসির কাষ্ঠে। ওই রকম ভুল আর করবেন না দয়া করে। একটি ভুল লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন কেড়ে নিতে পারে’।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় মহানগর দক্ষিণ বিএনপির এক অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এইসব অভিযোগ করেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সুতরাং নির্বাচন নিয়ে কোনও টালবাহানা করবেন না… এটা আমি সরকারকে বলছি না, আমি বলছি এই সরকারকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্নভাবে নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন। এই সরকারকে অস্থিতিকর অবস্থায় ফেলে দিচ্ছেন।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা এই সরকারকে বলতে চাই, আপনারা ডিসেম্বরের ঘোষণা দিয়েছেন… ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিন। আমরা সকল সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ইনশাল্লাহ।’
তিনি বলেন, ‘‘যারা নির্বাচনকে ব্যাহত করার জন্য, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য চেষ্টা করছেন পক্ষান্তরে তারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করার জন্য চেষ্টা করছেন, এদেশের মানুষের কথা বলার অধিকার হরণ করার চেষ্টা করছেন, এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করার জন্য চেষ্টা করছেন। দয়া করে আপনাদের বলবো, এ সমস্ত কাজ থেকে বিরত থাকুন।”
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘অনেকে বলেন, নির্বাচনের আগে বিচার শেষ করতে হবে। ভাই, বিচার শেষ করে নির্বাচন করবেন, এটা কী সম্ভব? তিন মাসের মধ্যে তড়িঘড়ি করে আপনারা বিচার করবেন… পারলে করেন, কোনও অসুবিধা নেই… তিন মাসের মধ্যে বিচার করেন, অবিচার নয়… বিচার করতে হবে।”
সদস্য নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘দলের সদস্য নবায়ন ও সদস্য সংগ্রহে আমাদেরকে খু্বই সাবধান হতে হবে, সচেতন থাকতে হবে। যদি নবায়নের সময়ে দেখা যায়— ওই ব্যক্তি সংগঠনবিরোধী কোনও কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত আছে তার সদস্যপদ নবায়ন করা যাবে না। দলের দুর্নাম হচ্ছে, এমন কোনও অপকর্মের সঙ্গে জড়িত আছে এমন কোনও ব্যক্তিকে সদস্যপদ নবায়ন করা যাবে না।”
‘‘আর আওয়ামী লীগের কিংবা সুযোগসন্ধানী কিছু লোক এ সময়ে দলের নতুন করে সদস্য হওয়া চেষ্টা করবে, তারা আমাদের জন্য কোনও সুফল বয়ে আনবে না, তারা আমাদের ক্ষতিই করবে। সুতরাং তাদেরকেও আমাদের সদস্য করা যাবে না।”
তিনি বলেন, ‘‘এজন্য বলতে পারেন দলের লোকের সদস্য সংখ্যা কমে যাবে। আমরা কোয়ালিটিতে বিশ্বাস করি, কোয়ানটিটি নয়, কোয়ালিটি চাই, ভালো লোক চাই। আমাদের হাজার হাজার লোকের দরকার নাই। আমাদের সলিড খুব ১০টা লোক হলে চলবে।”
‘‘যারা দেশকে ভালোবাসবে, দলকে ভালোবাসবে, দেশের মানুষকে ভালোবাসবে, প্রয়োজনে ঝড়ঝাপটা মোকাবিলা করবে।”
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘রমজানকে সামনে রেখে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে বা বাড়ার প্রস্তুতি চলছে। সিন্ডিকেট তাদের কাজ করেই যাচ্ছে, তারা কাজ বন্ধ করেনি।”
‘‘সরকারের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু সিন্ডিকেটের কোনও পরিবর্তন হয় নাই এবং এরা এই সরকারকে একটি বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা যতই বলি, এই সরকারকে সহযোগিতা করবো, করছি, এই সরকারকে ব্যর্থ হতে দেবো না… ততই যেন সিন্ডিকেটের কাজ-কাম বেড়ে যায়, ততই যেন দুষ্কৃতকারীরা বেশি আশকারা পাচ্ছে। কেন জানি না অবৈধভাবে সরকারের মধ্যে এমন সব জিনিস রয়ে গেছে— যারা এদেরকে আশকারা দিয়ে বড় করছে।”
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম নাম দিয়ে দিয়েছে… নাবিল গ্রুপ ১২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে… তাকে আপনারা গ্রেফতার করছেন না। কারণ কি?”
‘কোনও একটা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক আছে। সুতরাং তাকে ধরা যাবে না… তাই না।’
তিনি বলেন, ‘‘সবাই শুধু বিএনপির দোষ দেন… বিএনপি এটা বিএনপি সেটা। আসলে বিএনপি এই পর্যন্ত যতটুকু সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে, বিএনপির ছেলেরা যতটুকু ভালো থাকার, ভালো রাখার চেষ্টা করেছে সেদিকে আপনারা কোনও নজর দিচ্ছেন না।”
‘‘শুধু একটা ফাঁকা বাণী দিচ্ছেন, বিএনপি চাঁদাবাজি করে, চাঁদাবাজি করে। আরে ভাই, চাঁদাবাজি করলে ধরছেন না কেন? জানেনই যখন ধরেন, কোনও আপত্তি নাই, সবাইকে ধরেন।”
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘আজকে বিভিন্ন ব্যবসায়ী গ্রুপকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছেন দুই-একটি রাজনৈতিক দল ও দুই-একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি। যাদের একজন ওই সময়ে অত্যন্ত অশুভ মন্তব্য করেছেন… আরও একজন বলেছিলেন, আমৃত্যু তোমাকে চাই, মৃত্যুর পরেও তোমাকে চাই, পরকালেও তোমার সঙ্গে থাকবো.. খেয়াল আছে কি? যদি কারও খেয়াল না থাকে— ২/৩ আগস্টের টেলিভিশনের খবরগুলো দয়া করে দেখেন। সবগুলো ডেভিল, সবগুলো শয়তানকে পেয়ে যাবেন— যাদের উসকানিতে ৪/৫ তারিখে সারাদেশে ছাত্র-জনতার ওপরে গুলি চালানো হয়েছিল, যাদের উসকানিতে আজকে দেশে দ্রব্যমূল্যে দাম বেড়ে চলেছে, যাদের উসকানিতে আমার হাজার হাজার মা-বোনের বুক খালি হয়েছে… এদের কিছু হচ্ছে না।”
আব্বাস বলেন, ‘কারণ ওদের সবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দল, যারা বারবার আমাদেরকে দোষারোপ করে। আসলে নিজের দোষ ঢাকতে গিয়ে বিএনপি ওপরে দোষারোপ করছে। এখন থেকে আমাদের কাজ হবে— ওই ধরনের ভণ্ড রাজনৈতিক দলগুলোকে যারা কিনা লেবাস পড়ে অন্য দলকে দোষারোপ করার চেষ্টা করে তাদেরকে জনগণের সামনে উন্মোচন করে দেওয়া, তাদের প্রকৃত অবস্থা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা।”
দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিব, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম-আহ্বায়ক হারুনুর রশীদ হারুন, ফরহাদ হোসেন, আবদুস সাত্তার, মনির হোসেন চেয়ারম্যান, সাইদুর রহমান মিন্টু, শরীফ হোসেনসহ মহানগর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
[ad_2]
Source link