ঈদুল আজহায় পোশাক কেনাকাটা খানিক কম হয়। কিন্তু শিশুদের বিষয়টি আলাদা। তাদের জন্য প্রতি উৎসবেই নতুন কিছু কেনার প্রবণতা থাকে বাড়ির সবার।
ঈদে বাড়ির সবচেয়ে ছোট্ট সদস্য়ের জন্য জামাকাপড় থেকে শুরু করে সব ধরনের কেনাকাটার ব্যাপারটা ভীষণ রকম বিশেষ। তার জন্য যখন জুতা কেনার প্রশ্ন আসে তখন সবার আগে আরামের কথাটি মনে রাখতে হয়। আপনার ছোট্ট সোনামণি যদি ঘরময় হেঁটে বেড়ায় বা বাইরে গেলেও ছোট ছোট পা ফেলে হাঁটতে চায়, তাহলে আরামের সঙ্গে বিবেচনায় রাখতে হবে জীবাণু সংক্রমণের বিষয়টিও।
ঈদের সময় হালকা–পাতলা বৃষ্টি থাকতেই পারে। বৃষ্টির কাদাপানিতে থাকে বিভিন্ন রকমের জীবাণু। শিশুর পায়ের ত্বক নরম থাকায় খুব সহজে জীবাণুর সংক্রমণ হয়। সে জন্য শিশুকে এমন ধরনের জুতা ব্যবহার করতে দিতে হবে, যেগুলো একই সঙ্গে পরতে আরাম, জীবাণু সংক্রমণ থেকে দূরে রাখবে এবং পিচ্ছিলতার কারণে পতন থেকে নিরাপদ রাখতে পারবে।
তাই এবারের ঈদের জন্য শিশুকে গামবুট, রাবার লোফার, স্লিপার, স্যান্ডেল এগুলো কিনে দিতে পারেন। এর মধ্যে অবশ্য গামবুট বৃষ্টির সময় পরার জন্য খুবই উপযোগী। কারণ এগুলো সম্পূর্ণ রাবারের তৈরি ও নরম বলে শিশু পরে আরাম পাবে। এ ছাড়া এগুলো বৃষ্টির সময় রাস্তায় জমে থাকা পানি ও কাদা থেকে শিশুর পা রক্ষা করবে।
জুতা বাছাই করবেন যেভাবে
ওয়াটারপ্রুফ হতে হবে
বর্ষা না আসলেও এখন বৃষ্টি হচ্ছে। আর বর্ষাকাল শুরু হওয়ারও খুব দেরি নেই। তাই শিশুদের জন্য ওয়াটারপ্রুফ জুতা কেনা ভালো। বাজারে এখন বর্ষায় শিশুদের ব্যবহারের জন্য নানান উপাদানে তৈরি জুতা পাওয়া যায়। এর বেশির ভাগই রাবার জাতীয়। আপনি সেখান থেকে ক্রক্স বা বুট জুতা বেছে নিতে পারেন। এই জুতাগুলোর গ্রিপ ভালো হওয়ায় শিশুরা যেমন সাবধানে হাঁটতে পারবে, তেমনি বৃষ্টির দিনে পায়ে রাস্তার ময়লা পানি লেগে সংক্রমণ বা ঠান্ডা লাগার ভয়ও থাকবে না।
নরম ও আরামদায়ক
শিশুদের ত্বক নরম থাকে। তাই তাদের জন্য নরম ও আরামদায়ক জুতা কিনতে হবে। নইলে পায়ে ফোসকা পড়ে গিয়ে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
জুতা কেনার সময় অবশ্যই শিশুকে সঙ্গে নিয়ে যান এবং পায়ে দিয়ে মাপজোক ঠিক আছে কি না তা দেখে তারপর কিনুন। শিশুর পায়ে জুতাটি আরাম লাগছে কি না জিজ্ঞেস করে নিন। জুতা পায়ের চেয়ে বড় বা ছোট হলে আপনার শিশু হেঁটে আরাম পাবে না। আবার হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকবে।
টেকসই
শিশুদের পা দ্রুত বাড়তে থাকে। তাই আপনাকে কিছুদিন পরপরই নতুন জুতা কিনতে হতে পারে। এটি ভেবে জুতার মানের প্রতি অবহেলা করবেন না। বৃষ্টির দিনে রাস্তার পানি, কাদা লেগে জুতা দ্রুতই নষ্ট হয়ে যায়। তাই আপনার শিশুর বর্ষাকালের জুতা কেনার আগে অবশ্যই জুতা ম্যাটেরিয়াল, সোল এগুলো ভালো করে দেখে কিনুন।
টিপস
- বৃষ্টির দিন বলে শিশুদের জন্য চামড়ার জুতা না কেনা ভালো। পানির সংস্পর্শে এসে এগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
- কেবল হাঁটতে শিখেছে এমন শিশুর জন্য অদ্ভুত শব্দ করে এমন জুতা কিনবেন না। হাঁটার সময় জুতার শব্দ শিশুর মনে ভীতি তৈরি হতে পারে। সে ভীতি বড়দের আনন্দ দিলেও ছোট মনে এটি দীর্ঘস্থায়ী ফোবিয়া তৈরি করার আশঙ্কা আছে। সে থেকে তার জুতা পরার অনীহা তৈরি হওয়ার অসম্ভব নয়।
- বাইরে থেকে এসে আগে শিশুর জুতা ধুয়ে নিন, যাতে জুতায় কাদা, ময়লা আটকে না থাকে। নইলে পরবর্তীতে কাদা শুকিয়ে জুতার সঙ্গে আটকে গেলে তুলতে সমস্যা হবে। এরপর ফ্যানের নিচে শুকাতে দিন বা এমন কোথাও রাখুন যেন বাতাসে শুকিয়ে যায়।
সূত্র: ডটি ফিশ, বেবি শপ ও অন্যান্য।