Homeলাইফস্টাইলকম সময়ে এবং স্বল্প খরচে ঘুরে আসুন মৌলভীবাজার

কম সময়ে এবং স্বল্প খরচে ঘুরে আসুন মৌলভীবাজার

[ad_1]

এবার বেশিরভাগ মানুষের ছুটির কোনো সমস্যা নেই। ঈদ শেষেও ছুটি হাতে থেকে যাবে। সেই থেকে যাওয়া ছুটিকে কাজে লাগাতে পারেন। এই ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন মৌলভীবাজার।

মৌলভীবাজারের যেসব চমৎকার গন্তব্য ঘুরে দেখতে পারেন,

শ্রীমঙ্গল

যাঁরা নিরিবিলি চা-বাগানের সান্নিধ্য পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল দারুণ গন্তব্য। পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে দুই থেকে তিন দিনের জন্য ঘুরে আসতে পারেন সেখান থেকে।

শ্রীমঙ্গলে যতদূর চোখ যায় কেবল সবুজের হাতছানি। সারি সারি টিলার ওপর চা-বাগান। তার ভেতর দিয়ে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ আর সবুজ অরণ্যের অপরূপ সৌন্দর্য ঘিরে রেখেছে পুরো অঞ্চলকে। এ নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য আর সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে বেড়ানো যায় বারো মাস জুড়েই। সেখানে যেমন রয়েছে বন তেমনি রয়েছে হাওর আর বিল। পাশাপাশি রয়েছে খাসিয়া, মণিপুরী, গারো, টিপরা জনগোষ্ঠীর বসতি। সংস্কৃতির এই বৈচিত্র্যই শ্রীমঙ্গলকে করেছে রঙিন।

চা শিল্পের জন্য শ্রীমঙ্গলের সুনাম ও পরিচিতি বিশ্বব্যাপী। ৪২৫ দশমিক ১৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ জনপদের সঙ্গে রেল ও সড়কপথে যোগাযোগ রয়েছে সারা দেশের। চা, রাবার, লেবু, পান, আনারস ও মূল্যবান কাঠের জন্যও শ্রীমঙ্গলের খ্যাতি ব্যাপক।

শ্রীমঙ্গলে আছে চোখ জুড়ানো চা বাগান। ছবি: সংগৃহীত
শ্রীমঙ্গলে আছে চোখ জুড়ানো চা বাগান। ছবি: সংগৃহীত

মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত

শ্রীমঙ্গলের অন্তর্গত নয় এটি। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত। শ্রীমঙ্গল এলে দেখে ফিরতে পারবেন সহজেই। সিলেট শহর থেকে প্রায় আশি কিলোমিটার দূরে এই জায়গায় যাওয়া যায় বাস, ট্রেন কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ি চড়ে। বিশালাকার পাথর, সবুজ ঘেরা ঝরনা আর একটানা ধেয়ে আসা স্রোতের শব্দ এক অনন্য অভিজ্ঞতা দেয়। প্রায় ২০০ ফুট উঁচু থেকে নেমে আসা জলের ধারায় চোখে জুড়িয়ে যায়।

বাইক্কা বিল

বাইক্কা বিল মূলত হাইল হাওরের অংশ, যা একাধারে পাখি, মাছ ও উদ্ভিদের জন্য সংরক্ষিত অভয়ারণ্য। এটি শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজারের মাঝখানে অবস্থিত। বিলের মধ্যে ঢুকতেই পাখিদের ডাক আর নিস্তব্ধ জলাশয়ের মাঝখানে দাঁড়িয়ে এক অপার্থিব প্রশান্তি অনুভব করা যায়। এখানে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে নৌভ্রমণ করা যায়। তবে মাছ ধরা নিষেধ। এখানে প্রচুর মাছ ও পাখি একত্রে দেখা যায়। আর শীতকালে দেখা যায় পরিযায়ী পাখিদের।

মাধবপুর লেক

কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা-বাগানের মধ্যে লুকিয়ে থাকা মনোমুগ্ধকর লেক এটি। চারপাশে টিলা, লেক জুড়ে ভেসে থাকা পদ্ম আর একেক ঋতুতে একেক ধরনের পাখির আনাগোনা— সব মিলিয়ে এটি যেন এক জীবন্ত জলরং। বর্ষায় এই লেক ভিন্ন রূপে সেজে ওঠে। শীতে এখানে দেখা যায় সাদা পেটের বগলা ও অন্যান্য অতিথি পাখি। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় সেখান থেকে এই হ্রদ যাওয়া সহজ।

মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় তৈরি হয়েছে এমন ইকো রিসোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় তৈরি হয়েছে এমন ইকো রিসোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান

বাংলাদেশের অন্যতম রেইন ফরেস্ট লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। গহীন অরণ্যের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া রেল লাইন এই জায়গার রোমাঞ্চ বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণে। এখানকার বিরল প্রজাতির উল্লুক, বানর, হরিণ এবং অসংখ্য পাখি প্রকৃতিপ্রেমীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। পাশাপাশি হাইকিং ও ট্রেইল ট্রেকিংয়ের জন্য লাউয়াছড়া একটি আদর্শ জায়গা। গাইড নিয়ে বনের গভীরে হাঁটতে থাকলে পাখির ডাক আর পাতার মর্মর ধ্বনিতে এক স্বর্গীয় অনুভূতি তৈরি হয়। এখানে এক ধরনের নিঃশব্দ জাদু ছড়িয়ে থাকে, যা শহরের কোলাহল থেকে পালিয়ে আসা মানুষের কাছে পরম শান্তি হয়ে ধরা দেয়।

শ্রীমঙ্গলে প্রকৃতির মাঝে রাত্রিযাপন

শ্রীমঙ্গল ও আশপাশে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু পরিবেশবান্ধব রিসোর্ট। এগুলো প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে মিল রেখে তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে রাধানগরে গড়ে ওঠা অনেকগুলো রিসোর্ট চা বাগানে ঘেরা। আপনি চাইলে পুরো দিন রিসোর্টে বা আশপাশে ঘুরেই কাটিয়ে দিতে পারবেন। তাই এসব ইকো রিসোর্ট পর্যটকদের কাছে দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

শ্রীমঙ্গলে কোথায় খাবেন

স্থানীয়দের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পানসী ও পাঁচ ভাই হোটেল—যেখানে দেশীয় খাবার পাওয়া যায় কম খরচে। একবেলার খরচ পড়বে গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে।

সাতরঙা চায়ের স্বাদ নিতে চাইলে চলে যান নীলকণ্ঠ কেবিনে। আর একটু বিলাসী পরিবেশ পছন্দ হলে গ্র্যান্ড তাজ কিংবা কুটুম বাড়িতে পাওয়া যাবে দেশি–বিদেশি খাবারের স্বাদ। খরচ হবে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে।

এ ছাড়া, ইকো রিসোর্টগুলোর নিজেদের রেস্টুরেন্টেও অর্ডার দিয়ে খেতে পারবেন।

ভ্রমণ পরামর্শ

  • কম খরচে খাওয়ার জন্য পানসী বা পাঁচ ভাই হোটেল বেছে নিন।
  • দুর্গম জায়গায় বিশেষত বনে যেতে হলে গাইড নিন সঙ্গে।
  • সিএনজি রিজার্ভ করার আগে গন্তব্য ঠিক করে দরদাম করে নিন।
  • বনে গেলে জোঁক বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
  • বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ করবেন না এবং সময় মেনে স্টেশনে পৌঁছান।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত