কিডনি বা বৃক্ক আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কিন্তু আজকাল কিডনি রোগ ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে। এমনকি তরুণ বয়সেও অনেকে কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কারণ, জেনে না জেনে আমরা অনেক সময় কিডনি সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণগুলোকে উপেক্ষা করে থাকি। তবে একটু সতর্ক থাকলেই এ বিপজ্জনক রোগকে শুরুতেই শনাক্ত করা সম্ভব। চলুন জেনে নেই কিডনি ড্যামেজ বা কিডনি বিকল হওয়ার ৫টি প্রাথমিক লক্ষণ:
প্রস্রাবে অতিরিক্ত ফেনা বা বুদবুদ
প্রস্রাবে ডিম ফেটানোর মতো ফেনা দেখা দিলে বুঝতে হবে, প্রোটিন প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যাচ্ছে। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যাবে যে, কিডনির ফিল্টারিং ব্যবস্থা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
চোখ, পা, গোড়ালি বা মুখ ফুলে যাওয়া
যখন আমাদের কিডনি শরীরের অতিরিক্ত লবণ ও পানি ঠিকভাবে ফিল্টার করতে পারে না, তখন সেগুলো শরীরে জমতে থাকে এবং ফোলাভাব তৈরি করে। বিশেষ করে চোখের নিচে, পায়ের পাতা বা গোড়ালিতে ফোলাভাবের সৃষ্টি হয়।
প্রস্রাবের রঙে পরিবর্তন বা রক্ত মিশ্রণ
সাধারণত সুস্থ কিডনি রক্তকণিকাকে ধরে রাখে। কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রস্রাবে রক্ত চলে আসতে পারে। তখন প্রস্রাবের রং হয়ে যেতে পারে গোলাপি, লাল বা বাদামি। তাই নিয়মিত প্রস্রাব করার সময় লক্ষ রাখতে হবে যে, রং পরিবর্তন হচ্ছে কি না।
শুষ্ক ত্বক ও চুলকানি
কিডনি শরীরের খনিজ ও তরলের ভারসাম্য বজায় রাখে। কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গেলে ত্বকে শুষ্কতা ও চুলকানি দেখা দিতে পারে।
ত্বকের ফ্যাকাশে ভাব ও দুর্বলতা
কিডনি আমাদের শরীরে রক্ত তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন তৈরি করে। কিডনি সমস্যা হলে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়, ফলে ত্বক হয়ে পড়ে ফ্যাকাশে। এতে আক্রান্ত ব্যক্তি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন এবং অবসাদগ্রস্থতায় ভুগবেন।
তাই কিডনি সুস্থ রাখতে সতর্ক থাকতে হবে, নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে হবে এবং কিডনির যত্ন নিতে হবে। শরীরে এসব লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই কিডনি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে।
ডা. ফজলে এলাহী খান
সহযোগী অধ্যাপক (নেফ্রোলজি)
সংযুক্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর