Homeলাইফস্টাইলটক দইয়ের সঙ্গে লবণ, নাকি চিনি—কোনটি খাবেন

টক দইয়ের সঙ্গে লবণ, নাকি চিনি—কোনটি খাবেন


এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। খাবার, বসবাস, ঘুম—সবকিছুর মধ্যেই এই গরম ঢুকে পড়ছে বিনা নোটিশে। গরমে আরাম কি শুধু ফ্যান কিংবা এসির বাতাসই দেয়? না, গরমে ভালো থাকতে অনেক খাবারেরও বিশেষ ভূমিকা থাকে। তার মধ্যে একটি খাবার হলো দই। আরও নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে টক দই।

২০১৮ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, নিয়মিত টাটকা দই খাওয়া কিছু রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। সেটা মূলত তাতে উপস্থিত প্রচুর পুষ্টি উপাদান এবং প্রোবায়োটিকসের কারণে হয়ে থাকে। অনেকের পছন্দের খাবারের তালিকায় টক দই থাকে। কেউ তা খেতে ভালোবাসেন চিনি দিয়ে আবার কেউ লবণ মিশিয়ে। দুইটাতেই যেমন স্বাদের ভিন্নতা থাকে, তেমনই শরীরের ওপরেও ভিন্ন প্রভাব ফেলে। এই লবণাক্ত কিংবা মিষ্টিমিশ্রিত টক দইগুলোর কাজও শরীরের জন্য ভিন্ন।

দইয়ে লবণ

দইয়ে লবণ মেশালে তা নোনতা স্বাদে বদলে যায়। সে কারণে এটি অন্য খাবারের সঙ্গে খাওয়ার জন্য উপযুক্ত হয়ে ওঠে। অনেক বাড়িতে লবণ মেশানো দই ভাত, রুটি বা সালাদের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। তবে স্বাদের বাইরে লবণ দইয়ের ওপর ভিন্ন কিছু প্রভাব ফেলে।

হজমের ওপর প্রভাব

লবণ হজমপ্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করতে পারে। এটি দইয়ের প্রোবায়োটিকস প্রভাব আরও বাড়িয়ে তোলে, যা হজমে সহায়তা করে এবং গ্যাস বা পেট ফাঁপা ভাব প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। বিশেষ করে যাঁরা খাওয়ার পর হজম সমস্যা অনুভব করেন, তাঁদের জন্য এটি ভালো।

ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য

লবণ সোডিয়ামের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এটি শরীরের ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখতে ভূমিকা পালন করে। গরম আবহাওয়ায় বা ওয়ার্কআউটের পরে ঘামের মাধ্যমে সোডিয়াম বের হয়ে গেলে লবণ মেশানো দই সেই হারানো ইলেকট্রোলাইট পূরণে সাহায্য করতে পারে।

লবণ দইয়ের প্রোবায়োটিকস প্রভাব আরও বাড়িয়ে তোলে। ছবি: উইকিপিডিয়া

লবণ দইয়ের প্রোবায়োটিকস প্রভাব আরও বাড়িয়ে তোলে। ছবি: উইকিপিডিয়া

স্বাদ পরিবর্তন

স্বাদের দিক থেকে লবণযুক্ত দই নোনতা স্বাদ সৃষ্টি করে। বিশেষ করে ঝাল বা ভারী খাবারের স্বাদে এটি সুস্বাদু ভারসাম্য আনে।

চিনি মেশানো দই

দইয়ে চিনি মেশালে তা একধরনের ডেজার্টে পরিণত হয়। মিষ্টি দই প্রায়ই মিষ্টান্নে ব্যবহৃত হয় কিংবা অনেকে একে সরাসরি খেতেও পছন্দ করেন। এই চিনির সংযোজনও শরীরে ভিন্ন প্রভাব ফেলে।

স্বাদ: চিনি দইকে মিষ্টি স্বাদের করে তোলে। মিষ্টি স্বাদ পছন্দ করেন এমন মানুষদের জন্য এটি বেশ আকর্ষণীয় খাবার হয়ে ওঠে।

দইয়ে চিনি যোগ করলে তা রক্তে তৎক্ষণাৎ রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ছবি: পেক্সেলস

দইয়ে চিনি যোগ করলে তা রক্তে তৎক্ষণাৎ রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ছবি: পেক্সেলস

শক্তি বৃদ্ধি

দইয়ে থাকা চিনি রক্তে তৎক্ষণাৎ রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে চিনি মেশানো দই তাৎক্ষণিক শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। যদি আপনি ক্লান্তি বোধ করেন বা দ্রুত শক্তির দরকার হয়, সে ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, এই শক্তি বৃদ্ধি অস্থায়ী এবং যাঁরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাঁদের জন্য এটি উপযুক্ত না-ও হতে পারে।

আন্ত্রিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব

চিনি সরাসরি দইয়ের প্রোবায়োটিকস উপাদানগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না। তবে দীর্ঘ মেয়াদে অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ অন্ত্রের মাইক্রোফ্লোরার ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। অর্থাৎ মাঝে মাঝে চিনি মেশানো দই খাওয়া ঠিক হলেও নিয়মিত খেলে তা হজমের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।

লবণ দই, নাকি চিনি দই

দইয়ে লবণ বা চিনি মেশানোর সিদ্ধান্ত অনেকাংশে পুষ্টিগত লক্ষ্যের ওপর নির্ভর করে।

চিনি মেশানো দইয়ে অতিরিক্ত চিনি থাকায় তার ক্যালরির পরিমাণও বেশি হয়। ক্যালরি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে দইয়ে চিনি কম দেওয়া ভালো।

লো-সোডিয়াম ডায়েট মেনে চললে লবণ মেশানো দই উপযুক্ত না-ও হতে পারে।

যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন বা অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ কমাতে চান, তাঁদের জন্য চিনিযুক্ত দই এড়ানো উচিত।

চিনি মেশানো দইয়ে ক্যালরির পরিমাণ বেশি হয়। ছবি: উইকিপিডিয়া

চিনি মেশানো দইয়ে ক্যালরির পরিমাণ বেশি হয়। ছবি: উইকিপিডিয়া

আয়ুর্বেদ অনুসারে, দিনের বেলা লবণ মিশিয়ে দই খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ, এটি হজমে সাহায্য করে। অন্যদিকে, রাতে চিনি মেশানো দই খাওয়া এড়াতে বলা হয়। কারণ, সেটি হজমে সমস্যা করতে পারে বা কফ দোষ বৃদ্ধি করতে পারে।

হাইলাইটস

টক দইয়ের স্বাস্থ্য উপকারিতা

টক দই রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, খাবার হজম হতে সাহায্য করে। এই দই খেলে হজমতন্ত্রে উপকারী ও স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে।

সূত্র: অনলি মাই হেলথ





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত