সকালে অফিস কিংবা অন্য কাজের ব্যস্ততায় হাতে সময় কম থাকে। তাই ঝটপট নাশতা হিসেবে অনেকেই বেছে নেন পাউরুটি। কেউ সাধারণ পাউরুটি, আবার কেউ বিভিন্ন পাউরুটি-ভিত্তিক পদ খান।
তবে চিকিৎসকদের মতে, প্রতিদিন পাউরুটি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য হতে পারে মারাত্মক ক্ষতিকর। মেডিকেলনিউজ টুডে-তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেছেন, পাউরুটি নিয়মিত খেলে ভয়াবহ রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। আসুন জেনে নেই পাউরুটি খাওয়া নিয়ে কেন চিকিৎসকরা সতর্কবার্তা দিচ্ছেন।
খালি পেটে পাউরুটি : পাউরুটির অন্যতম উপাদান ইস্ট। এটি ব্যবহারে পাউরুটিকে সুন্দরভাবে ফুলিয়ে তোলে। অন্যদিকে চিকিৎসকরা খালি পেটে ইস্ট জাতীয় খাবার এড়িয়ে যেতে বলেন। তাই বলা যায়, খালি পেটে পাউরুটি না খাওয়াই ভালো। এতে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেউ যদি দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত পাউরুটি খান তবে তার শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, পাউরুটি মোটেই প্রতিদিন খাওয়া যাবে না। পাউরুটিতে থাকা উপাদান আমাদের শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। নিয়মিত পাউরুটি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটা বাদ দিতে হবে।
পাউরুটি খেলে আমাদের শরীরে যে ধরনের প্রভাব পড়ে তা হলো-
মস্তিষ্কের উপর প্রভাব : চিকিৎসকদের মতে, পাউরুটিতে থাকা কিছু যৌগ নিয়মিত শরীরে প্রবেশ করলে তা মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই প্রতিদিন পাউরুটি খাওয়ার অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
গ্যাস-অ্যাসিডিটির ঝুঁকি বাড়ায় : পাউরুটিতে গ্লুটেনের উপস্থিতি বেশি থাকে। অনেকের জন্য এটি পেটের সমস্যা বিশেষ করে গ্যাস ও অ্যাসিডিটির কারণ হতে পারে। যাদের আগে থেকেই এ ধরনের সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে পাউরুটি খেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
পুষ্টিহীন ময়দার ফাঁদ : পাউরুটি ময়দা থেকে তৈরি হয়। ময়দায় ফাইবার কম, কিন্তু ক্যালোরি ও কার্বোহাইড্রেট বেশি। ফলে পাউরুটি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে। এতে প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন ও মিনারেলও খুব কম থাকে, যা শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি তৈরি করতে পারে।
ওজন ও হৃদরোগের ঝুঁকি : পাউরুটিতে চিনি ও লবণের পরিমাণ অনেক বেশি। তাই নিয়মিত খেলে ওজন দ্রুত বাড়তে পারে, একইসঙ্গে বাড়ে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিও। এ ছাড়া অতিরিক্ত চিনি এবং ট্রান্স ফ্যাটের কারণে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গিয়ে হৃদরোগের সম্ভাবনাও বাড়ে। যাদের বয়স একটু বেশি, তাদের জন্য এটি বেশি বিপজ্জনক।
সবার উচিত সকালের নাশতায় পাউরুটি বাদ দিয়ে এমন কোনো স্বাস্থ্যকর বিকল্প বেছে নেওয়া, যা দ্রুত প্রস্তুত হয় এবং পুষ্টিতে ভরপুর। যেমন- ওটস, ফল-মূল, ডিম বা ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর সবজি স্যান্ডউইচ। সময়ের সঙ্গে স্বাস্থ্য সচেতন হোন, কারণ সুস্থ থাকাই বড় সুখ।