বার্ধক্য শব্দটি শুনলেই অনেকের মনে ভয় ঢুকে পড়ে। যদিও এটি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, তবে বেশিরভাগ মানুষই চান একটু বেশি সময় তারুণ্য ধরে রাখতে। অথচ প্রতিদিন আমাদের কিছু অভ্যাস, বিশেষ করে খাওয়া-দাওয়ার ধরন, আমাদের অজান্তেই ত্বকে বয়সের ছাপ ফেলছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু পানীয় রয়েছে যেগুলো নিয়মিত পান করলে আপনার চেহারায় দ্রুত বার্ধক্যের ছাপ ফুটে উঠতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই তিনটি পানীয় যা আপনার বয়স বাড়িয়ে দিতে পারে আগেভাগেই—
১. এনার্জি ড্রিংকস :
ওয়ার্কআউটের সময় কিংবা ক্লান্তির মুহূর্তে অনেকেই এনার্জি ড্রিংকস পান করেন। এটি তাৎক্ষণিক শক্তি দিলেও ত্বকের জন্য ভয়ংকর হতে পারে। এই পানীয়তে থাকা উচ্চ মাত্রার ক্যাফেইন ও চিনি ত্বককে ডিহাইড্রেট করে, নিস্তেজ ও রুক্ষ করে তোলে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়ায়, যা ত্বকের বয়সের ছাপ দ্রুত বাড়িয়ে তোলে।
তবে এর বিকল্প হতে পারে ডিক্যাফ কফি বা চিনিমুক্ত হারবাল চা। হারবাল চায়ের মধ্য হতে পারে পুদিনা চা, দারুচিনি চা কিংবা তুলসী চা। এগুলো যেমন একজনকে বয়সের ছাপ থেকে রক্ষা করবে, তেমনি শরীরের বেশ কয়েকটি সমস্যাও দূর করবে।
২. অ্যালকোহল : তারুণ্যকে করে নিঃশেষ
অ্যালকোহল শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে এবং প্রদাহজনক কোষের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে ত্বকে দেখা দেয় শুষ্কতা, রুক্ষতা এবং তাজা ভাব হারিয়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘদিন নিয়মিত অ্যালকোহল পান করলে জৈবিক বার্ধক্য উল্লেখযোগ্যভাবে ত্বরান্বিত হয়।
অ্যালকোহলের পরিবর্তে খাওয়া যেতে পারে ফলের রস। ফলের রস শুধু উপকারিই নয়, এটি একজন মানুষকে সতেজ রাখবে।
৩. কোমল পানীয় : মিষ্টি স্বাদে লুকানো বার্ধক্য
প্রিয় কোমল পানীয়ে চুমুক দিচ্ছেন নিয়মিত? সাবধান! এতে থাকা অতিরিক্ত চিনি কোলাজেন এবং ইলাস্টিন ধ্বংস করে, যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা ধরে রাখে। ফলে ত্বক ঝুলে পড়ে, দেখা দেয় বলিরেখা।
কোমল পানীয়ের বিকল্প হতে পারে লেবু-মধু পানি। লেবুর রসের খনিজ ও ভিটামিন খাবার ভালোভাবে হজমে সাহায্য করে। সকালে খালি পেটে লেবু ও মধু মেশানোকুসুম গরম পানি পানে পেট ফুলে থাকা, বুকে ব্যথা ও পাকস্থলীতে জমে থাকা টক্সিন দূর করতেও সাহায্য করে। লেবু পটাশিয়ামের খুব ভালো উৎস, যা স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
চেহারায় বয়সের ছাপ ঠেকাতে খাদ্য তালিকায় বেশ কিছু খাবার রাখা যেতে পারে। সেগুলো হলো :
সবুজ শাক-সবজি : সবুজ শাক-সবজি শরীরকে বিষমুক্ত রাখে, ওজন কমায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বক ও চুলকে সুন্দর রাখে।
আখরোট : আখরোটে থাকা ওমেগা থ্রি হার্টের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পারে। এতে থাকা পলিফেনল ব্রেস্ট, প্রোস্টেট ও কোলোরেকটাল ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। মস্তিষ্কের ফাংশনাল উন্নতিতেও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে আখরোট।
আমন্ড : আমন্ডে থাকা আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ভিটামিন ই স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী । আমন্ড খেলে বলিরেখা কমে যায় ।
গ্রিন টি : গ্রিন টি খেলে হার্টের সমস্যা এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, ওজন কমাতে সাহায্য করে।
কিউই : এটি উচ্চ ভিটামিন সি উপাদান ইমিউন সিস্টেমের স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে, সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে এবং ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে। এতে থাকা পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং কার্ডিওভাসকুলার ফাংশন বজায় রাখতে সাহায্য করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
জিরা : জিরাতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা হজমশক্তি বাড়ায়, গ্যাস ও অ্যাসিডিটি কমায়। পেট পরিষ্কার এবং কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম করে জিরাতে থাকা ফাইবার। জিরার ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। জিরাতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য বাতজনিত রোগ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
Source link