ছোটগল্পের সংকলন ‘হার্ট ল্যাম্প’ এর জন্য ২০২৫ সালের আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার পেয়েছেন কন্নড় ভাষার লেখক বানু মুশতাক। প্রথমবারের মতো কোনো গল্পসংকলন আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার পেয়েছে। এ সংকলনটি দীপা ভাস্তি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন।
এই গল্পসংকলনে ভারতীয় মুসলিম নারীদের দৈনন্দিন জীবনের টানাপড়েন, স্বামী, শাশুড়ি ও ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সংঘাত এবং তাদের প্রতিরোধের গল্প উঠে এসেছে।
৭৭ বছর বয়সী বানু মুশতাক পেশায় আইনজীবী, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী। তিনি বলেন, “আমার গল্পগুলো সমাজ, ধর্ম ও রাজনীতির দ্বারা নারীদের ওপর আরোপিত নিঃশর্ত আনুগত্যের দাবি এবং তার ফলে সৃষ্ট নিষ্ঠুরতার প্রতিচ্ছবি। আমার হৃদয়ই আমার গবেষণাক্ষেত্র।”
পুরস্কারপ্রাপ্তির পর বানু মুশতাক অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন, “যেন হাজারো জোনাকি ক্ষণিকের জন্য আকাশে সম্মিলিতভাবে তীব্র আলো ছড়াচ্ছে। এই বইটি আমার ভালোবাসার বার্তা—এই বিশ্বাস থেকে যে কোনো গল্প শুধুই ‘স্থানীয়’ নয়। আমার গ্রামের বটগাছের নিচে জন্ম নেওয়া গল্পও আন্তর্জাতিক মঞ্চে আলো ফেলতে পারে।”
বিচারকমণ্ডলীর প্রধান ম্যাক্স পোর্টার বলেন, “হার্ট ল্যাম্প শুধু নিপীড়নের গল্প নয়, এতে রয়েছে সাহস, রসিকতা ও ব্যঙ্গ। মুসলিম জীবনের প্রতি পশ্চিমাদের একমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিকে গল্পগুলো চ্যালেঞ্জ করে।”
তিনি আরও বলেন, “অনুবাদটিও ছিল ব্যতিক্রমী। যেখানে অধিকাংশ অনুবাদ পাঠকের কাছে মূল ভাষা আড়াল করে রাখতে চায়, সেখানে দীপ্তা ভাস্তির অনুবাদ ছিল “দৃশ্যমান”—ভারতীয় অভিব্যক্তি ও কথার ভঙ্গি গল্পগুলোকে প্রাণবন্ত করেছে।”
বানু মুশতাকের জন্ম ১৯৪৮ সালে দক্ষিণ ভারতের কন্নড়ে। পেশায় আইনজীবী ও অধিকারকর্মী। কর্ণাটক সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার (১৯৯৯), দীপা ভাস্তির অনুবাদে হাসিনা অ্যান্ড আদার স্টোরিজ গ্রন্থের জন্য পেন ইংলিশ অনুবাদ পুরস্কার (২০২৪) পেয়েছেন ।