Homeসাহিত্যকার্বোহাইড্রেট বা শর্করাজাতীয় খাবার মানুষকে স্থূল করে? চিকিৎসাবিজ্ঞান কী বলে

কার্বোহাইড্রেট বা শর্করাজাতীয় খাবার মানুষকে স্থূল করে? চিকিৎসাবিজ্ঞান কী বলে


মানুষের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্যতম খাদ্য উপাদান হচ্ছে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করাজাতীয় খাবার। শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ এবং শরীরবৃত্তীয় কাজ পরিচালনায় এই উপাদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শর্করা জাতীয় কিছু খাদ্য হচ্ছে— চাল, আটা, আলু ইত্যাদি। অনেকের ধারণা, শর্করা খেলে মানুষের শরীর স্থূল হয়ে যায়। আসলে কি তাই? চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।

স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট এভিডেশন-এর ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মানুষের শরীরের কার্যকারিতায় শর্করা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনটি ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা অপরিহার্য খাদ্য উপাদানের একটি শর্করা। অন্য দুটি হচ্ছে— চর্বি ও আমিষ। এই পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরে কার্যপ্রণালী ও গঠন বজায় রাখা এবং শক্তি যোগানের জন্য প্রয়োজন।

শর্করার প্রধান উৎস হচ্ছে— চিনি, ফাইবার বা আঁশ জাতীয় খাবার এবং স্টার্চ পাউডার বা খাদ্যশস্যের গুঁড়া। পেটে যাওয়ার পর শর্করাকে গ্লুকোজে পরিণত করে পাচনতন্ত্র। সেই গ্লুকোজ রক্তপ্রবাহে শোষিত হয়ে ক্যালরি বা শক্তি সঞ্চয় করে।

ক্যালরি গ্রহণ, সঞ্চয় ও শোষণের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে শরীরের ওজন। পরিবেশ, শারীরিক পরিশ্রম, খাদ্যাভ্যাস, জিন ও স্বাস্থ্যগত অবস্থা ক্যালরির এই তিনটি দিককে প্রভাবিত করতে পারে। ক্যালরি শোষণের চেয়ে বেশি গ্রহণ করলে ওজন বাড়বে।

প্রতিদিন গ্রহণ করা ক্যালরির সমপরিমাণ শোষণ করা হলে ওজন একই থাকবে। যদিও কিছু লোক শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়া কমিয়ে দিয়ে ওজন কমাতে পারে। তবে শর্করা নিজেই ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে— ধারণাটি সঠিক নয়।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এনবিসি নিউজের ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান হারবাল লাইফের পরিচালক এবং পুষ্টিবিদ সুসান বোওয়ারম্যান বলেন, ‘যে কোনো খাবার বেশি খেলে তা আমাদের শরীরকে স্থূল করে তোলে। আর সব ধরণের শর্করাযুক্ত খাবারের ক্যালরির পরিমাণ এক নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘শর্করা খেলে মানুষ স্থূল হয়— এই ধারণাটি এখনো চালু আছে, কারণ অনেকেই শর্করা ও চিনি জাতীয় খাবার বেশি খান। ওজন কমাতে তাঁরা এসব খাবার বাদ দেন। কিন্তু সেটার অর্থ এই নয় যে তাঁরা সব শর্করাজাতীয় খাবার বাদ দেন। বরং দেখা যায়, অনেক বেশি ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার তাঁরা বাদ দেন।’

যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক নামে স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইটে ডায়েটেশিয়ান নাটালি রোমিটো বলেন, ‘কার্বোহাইড্রেট বা শর্করার কারণে শরীরের চর্বি বাড়ে বা কমে না। মানুষের শরীরে ক্যালরির পরিবর্তনই চর্বি বাড়াতে বা কমাতে পারে।’

সুতরাং, মানুষের স্থূলতার পেছনে সরাসরি শর্করার ভূমিকা নেই। বরং শর্করা থেকে পাওয়া ক্যালরি বা শক্তির তারতম্যের কারণে মানুষের ওজনের পার্থক্য ঘটে। অর্থাৎ শরীরে ক্যালরি গ্রহণ ও শোষণ সমান থাকলে ওজন স্থিতিশীল থাকে। আর ক্যালরি গ্রহণ বেশি হলে বা শোষণ কম হলে, শরীর স্থূল হয়।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত