Homeদেশের গণমাধ্যমেদুর্নীতিমুক্ত জীবন গড়ার উপায় | কালবেলা

দুর্নীতিমুক্ত জীবন গড়ার উপায় | কালবেলা

[ad_1]

দুর্নীতি শুধু একজন মানুষের জীবন ক্ষয় করে না, ধীরে ধীরে পুরো সমাজ ও রাষ্ট্রকেই ধ্বংস করে। তাই আমাদের জীবন থেকে দুর্নীতি নামক রোগ চিহ্নিত করে সেটার চিকিৎসা করা দরকার। আমাদের বুঝতে হবে, মানুষের চোখ ফাঁকি দেওয়া গেলেও আল্লাহর চোখ ফাঁকি দেওয়া যায় না। পৃথিবীতে মানুষের চোখকে ফাঁকি দেওয়া গেলেও আখেরাতে আল্লাহর দরবারে সব কর্মকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দিতে হবে। সেখানে কোনো বিষয়ে দুর্নীতি, ব্যক্তি বা জাতির হক আত্মসাৎ প্রমাণিত হলে তার জবাবদিহি করতে হবে এবং পরিণামে জাহান্নামের মারাত্মক আজাবের সম্মুখীন হতে হবে; যা থেকে বাঁচার কোনো উপায় থাকবে না। সেদিন হাত-পা, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অপরাধীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘(সেদিন মানুষের উদ্দেশে আল্লাহ বলবেন) আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেব, তাদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।’ (সুরা ইয়াসিন: ৬৫)। আল্লাহর সামনে হিসাব দিতেই হবে, এ মানসিকতা জনসাধারণের মধ্যে সৃষ্টি হলে দুর্নীতি ও অপরাধ বন্ধ হবে।

নীতিহীনতা বা দুর্নীতি যেন বন্যার পানির মতো ছড়িয়ে পড়ছে। দিন দিন বিদায় নিচ্ছে ন্যায়নীতি, আদর্শ ও সুকুমারবৃত্তি। দুর্নীতি দমনে আইনের ও তার প্রয়োগে অভাব না থাকলেও বাড়ছে বৈ কমছে না। আসলে শান্তির ধর্ম ইসলামে রয়েছে এর শান্তিপূর্ণ সমাধান। শুধু আইন ও বিধান দিয়ে সবক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন করা সম্ভব নয়। মানুষের অন্তরে যদি আল্লাহ ও আখেরাতের ভীতি জাগ্রত থাকে, তাহলে সে যে কোনো অপরাধ থেকে বেঁচে থাকতে পারে। দুনিয়াতে অপরাধের শাস্তি হোক বা না হোক; আখেরাতে সব শাস্তির বিচার হবে, জনসাধারণের মধ্যে এ মানসিকতা সৃষ্টি করতে পারলে, আল্লাহর ভয় ও আখেরাতের শাস্তি সম্পর্কে সচেতন করতে পারলে অনেক অপরাধের মূল নির্মূল হবে।

মানুষের মধ্যে এ মানসিকতা প্রচার-প্রসারের জন্য আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এজন্য প্রথমেই পারিবারিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। কারণ একজন শিশুর ওপর পারিবারিক প্রভাব সবচেয়ে বেশি থাকে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রতিটি নবজাতকই স্বভাবজাত ইসলাম নিয়ে জন্মলাভ করে। অতঃপর তার বাবা-মা তাকে ইহুদি, খ্রিষ্টান বা অগ্নিপূজক বানায়।’ (বোখারি: ১২৯২)। তাই প্রত্যেক পিতা-মাতার উচিত নিজেদের সন্তানকে সৎ, আল্লাহভীরু ও ইসলামী অনুশাসনের পূর্ণ অনুসারী হিসেবে গড়ে তোলার সুব্যবস্থা করা।

ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনে দুর্নীতির ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। যে জাতি ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়, যাদের তাকওয়া ও আখেরাতে জবাবদিহির বালাই নেই, সে সমাজে দুর্নীতি সহজেই প্রবেশ করে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে অপরাধ ও অনৈতিকতা। কিন্তু তাকওয়াভিত্তিক সমাজ গঠিত হলে সামাজিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং আল্লাহর রহমত ও বরকতের দুয়ার খুলে যাবে। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘সমাজের মানুষরা সবাই যদি ইমান আনত ও তাকওয়ার জীবন অবলম্বন করত, তাহলে আমি তাদের ওপর আসমান-জমিনের যাবতীয় বরকতের দুয়ার খুলে দিতাম।’ (সুরা আরাফ: ৯৬)। তাই সমাজের সর্বস্তরে আধ্যাত্মিক ও নৈতিক প্রশিক্ষণ দিয়ে সততা ও নৈতিকতার আদর্শে উজ্জীবিত করতে হবে।

সর্বোপরি সবাইকে ব্যক্তিগতভাবে হালাল-হারাম সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। দুর্নীতি দমনের মূলনীতি হিসেবে ইসলাম হালাল-হারাম তথা পবিত্র-অপবিত্রর পার্থক্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে হালালের কল্যাণ ও উপকারিতা এবং হারামের অপকারিতা ও ক্ষতিও স্পষ্টরূপে বর্ণিত রয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মানবমণ্ডলী! তোমরা পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তুসামগ্রী ভক্ষণ করো। আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না। সে নিঃসন্দেহে তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন।’ (সুরা বাকারা: ১৬৮)

লেখক: মাদ্রাসা শিক্ষক



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত