Homeজাতীয়মালিক কেন শ্রমিকের মুখোমুখি হন না

মালিক কেন শ্রমিকের মুখোমুখি হন না

[ad_1]

দুই মাস বেতন পাইনি। বাসা ভাড়া দিতে হবে। মালিকরা কোনও কারণ ছাড়াই গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা কী করবো। বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামছি। পুলিশ বলে মন্ত্রণালয়ে যাইতে, আমরা মালিক চিনি, মন্ত্রণালয় চিনি না।

২০২৩ সালে হঠাৎ রাস্তায় নেমে এসেছিলেন রাজধানীর মিরপুর ও শেওড়াপাড়ার একাধিক গার্মেন্টসের কর্মীরা। পথে বসে আহাজারি করেছিলেন মাসের বেতনের জন্য। ১৫ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এএসটি গার্মেন্টসের শ্রমিকরা। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এএসটি গার্মেন্টসের মালিকপক্ষ তাদের বেতন বোনাস দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ঈদের আগেই ছুটি দিয়ে দেয়। ঈদের পর ছুটি শেষ হলে শ্রমিকরা কাজের উদ্দেশ্যে এসে গার্মেন্টস বন্ধ পান। কারখানার ভেতর কোনও মালামালও নেই বলে তারা দাবি করেন। বেতন বাকি ৪ মাসের। প্রশ্ন হলো, মালিক কেন কাজ চলমান কারখানা বন্ধ করেন, বন্ধ করে দেওয়ার পরে মালিকের হদিস কেন মেলে না। মালিক কেন তার শ্রমিকের মুখোমুখি না হয়ে গাঢাকা দেন।

এ বছর মার্চের তথ্য অনুযায়ী, দেশের প্রধান তিন শিল্প অঞ্চল—গাজীপুর, সাভার ও নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদীতে সাত মাসে মোট ৯৫টি পোশাক কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়েছে। শিল্প পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, বন্ধ হওয়া কারখানাগুলোর মধ্যে গাজীপুরে রয়েছে ৫৪টি, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে ২৩টি এবং সাভার ও আশুলিয়ায় ১৮টি। এসব কারখানায় মোট ৬১ হাজার ৮৮১ জন শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করতেন। শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবি, বেশিরভাগ শ্রমিক ন্যায্য দাবি বুঝে পাননি।

মালিক কেন শ্রমিকের মুখোমুখি হতে পারেন না প্রশ্নে সেন্টার ফর ওয়ার্কার সলিডারিটির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আখতার বলেন, যখন শ্রমিকের পাওনা অনেক বেশি হয়ে যায়, তখন পালিয়ে গেলে দুটো ঘটনা ঘটে। এক. তাকে টাকাটা দিতে হচ্ছে না। দুই. এই পরিস্থিতিতে সে নানা চাতুরিতে সরকারের সহায়তা দাবি করে বসে। সরকার কখনোই চায় না কোনও অসন্তোষের কারণে শ্রমিক রাস্তায় নেমে আসুক। সেই সুযোগটা মালিক নিতে চায়। তিনি আরও বলেন, মালিকের সবসময় চেষ্টা থাকে যাতে তার পকেট থেকে টাকা না যায়, কোনও পরিস্থিতিতেই শ্রমিকের ঘামের কথা তার স্মরণ থাকে না। 

মালিক বা শ্রমিক কেউই পালাতে চায় না উল্লেখ করে বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, এই সিদ্ধিরগঞ্জের ফ্যাক্টরির বিষয়ে আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, এক বছর ৩ মাসের মতো হয়েছে এই কারখানা, এখানে দেড়-দুইশ’ শ্রমিক কাজ করতেন। তারা কখনোই স্ট্যাবল ছিল বলা যাবে না। তাদের ব্যবসা শুরুর টাইমিংটাও খুব খারাপ ছিল। কেননা গত এক-দেড় বছর ব্যবসার জন্য জটিল পরিস্থিতি বিরাজমান। সে কারণেই টিকে থাকতে পারেনি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বড়রা কোনোভাবে ম্যানেজ করে নিতে চেষ্টা করছে, ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য সেটি কঠিন। তারই উদাহরণ এইটা। এখানে বোনাসের ইস্যু নেই কিন্তু বেতন মার্চের বাকি ছিল। মালিক ম্যানেজ করতে না পেরে সম্ভবত আতঙ্কিত হয়ে সরে গেছেন।

শ্রম অধিকার বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, শ্রমিকের মুখোমুখি না হওয়াটা মালিকের একটা কৌশল। প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যদি মালিক পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারেন তিনি তো সরকারের কাছে মধ্যস্থতার জন্য আসবেন। তিনি বলবেন একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জিনিসটা কীভাবে সমাধান করা যায় সেটি দেখতে। এমনটা তারা করেন না। বরং তারা একটা কৌশল অবলম্বন করেন। দুই মাস বেতন বাকি থাকতে হুট করে বন্ধ করে চলে যান, শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে ক্ষোভ জানায়, ভাঙচুর করে। এরপর ২০-২৫ জন শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা হলে বাকিরা ভয় পেয়ে সরে যাবে।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত