বাংলাদেশ পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগে প্রতারণার অভিযোগে এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ফারজানা আক্তার।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাতে নওগাঁ শহরের মল্লিকপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। গ্রেফতার প্রতারকের নাম আব্দুল মতিন (৫৩)। তার বাবার নাম মৃত মোয়াজ্জেম হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেফতার মতিন এক ব্যক্তির ছেলেকে পুলিশে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন এবং এর বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছিলেন। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের একটি দল পৌরসভা এলাকায় ওত পেতে ছিল। ঘটনার সময় আব্দুল মতিন ওই চাকরিপ্রার্থীর অভিভাবকের কাছ থেকে নগদ অর্থ ও একটি ব্লাঙ্ক চেক নিচ্ছিলেন। ঠিক তখনই তাকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গ্রেফতারের সময় একটি চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করছিলেন মতিন ও ওই অভিভাবক। নওগাঁয় পুলিশ সদস্য নিয়োগের চলমান প্রক্রিয়াকে কলুষিত করার জন্য চেষ্টা করছেন। পরে মতিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আরও একটি চাঞ্চল্যকর চুক্তিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ওই চুক্তিপত্রে দেখা যায়, অন্য এক প্রার্থীর পরিবারের সঙ্গে পুলিশের চাকরির বিনিময়ে ১০ লাখ টাকায় রফাদফা হয়েছিল।
নওগাঁ সদর থানার ওসি নূর এ আলম জানান, গ্রেফতারকৃত আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ফারজানা আক্তার জানান, কনস্টেবল নিয়োগকে কেন্দ্র করে এর আগেও জেলায় সক্রিয় দালালচক্রের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চক্রটি সাধারণ মানুষের সরল বিশ্বাস এবং চাকরিপ্রার্থীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের অপচেষ্টা চালায়।
কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে নওগাঁ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেছেন, ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও মেধার ভিত্তিতে সম্পন্ন হচ্ছে। কোনও প্রকার আর্থিক লেনদেন বা তদবিরের কোনও সুযোগ নেই। তিনি সবাইকে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার এবং কোনও প্রকার দালাল চক্রের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে নওগাঁ গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি ডিবি) আব্দুল মান্নানসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।