Homeসাহিত্যপ্রেক্ষাপটই ভাষা ও শৈলী নির্ধারণ করে : রফিকুজ্জামান রণি

প্রেক্ষাপটই ভাষা ও শৈলী নির্ধারণ করে : রফিকুজ্জামান রণি


সাহিত্য বিভাগের নির্ধারিত প্রশ্নে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কবি রফিকুজ্জামান রণি। জন্ম ৩০ ডিসেম্বর ১৯৯২, চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলায়, দোঘর গ্রামে। পেশায় আইনজীবী। প্রকাশিত গ্রন্থ: দুই শহরের জানালা(গল্প), ধোঁয়াশার তামাটে রঙ (কবিতা), অতল জলের গাঁও (কবিতা), স্মৃতির ছায়াশিস(গল্প)। পেয়েছেন জেমকন তরুণ কবিতা পুরস্কার, দেশ পাণ্ডুলিপি পুরস্কার এবং পেন বাংলাদেশ সাহিত্য পুরস্কার।

বাংলা ট্রিবিউন: কোন বিষয় বা অনুভূতি আপনাকে কবিতা লিখতে অনুপ্রাণিত করে?

রফিকুজ্জামান রণি: মানুষের বিচিত্র জীবনধারা, সুখ-দুঃখ, দেশ, ভাষা ও সংস্কৃতি আমাকে কবিতা লিখতে অনুপ্রাণিত করে।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি কী ধরনের থিম বা বিষয় নিয়ে কবিতা লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?

রফিকুজ্জামান রণি: নির্দিষ্ট কোনো থিম বা বিষয় মাথায় রেখে কখনও কবিতা লিখিনি। সব সময় ইতিহাস, মিথ, দেশ, নদী ও প্রকৃতিকে জড়িয়ে ধরে আমি কবিতা চর্চায় মগ্ন থেকেছি।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি তাৎক্ষণিক অনুপ্রেরণায় লেখেন, নাকি ধীরে ধীরে শব্দ সাজান?

রফিকুজ্জামান রণি: একটু সময় নিয়ে লেখার চেষ্টা করি। কখনও কখনও তাৎক্ষণিক অনুপ্রেরণায়ও লিখতে হয়। কিন্তু সেগুলি প্রকাশে আনতে সময় লাগে। সম্পাদনা করে আরও সাবলীলভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করি।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনার কবিতার ভাষা ও শৈলী কীভাবে বেছে নেন?

রফিকুজ্জামান রণি: সেটা তো আমি নির্ধারণ করি না। সময়, ঘটনা এবং প্রেক্ষাপট আমার ভাষা ও শৈলী নির্ধারণ করে দেয়।

বাংলা ট্রিবিউন: কোন কোন কবির প্রভাব আপনার লেখায় আছে?

রফিকুজ্জামান রণি: জীবনানন্দ দাশ, সুকান্ত ভট্টাচার্য, আল-মাহমুদ ও আবুল হাসান। যতই বেরোবার চেষ্টা করি, কোনো না কোনোভাবে তাদের শিল্পজালে আটকা পড়ে যাই। এ যে আমার পরম দুর্বল সত্তা।

বাংলা ট্রিবিউন: কথাসাহিত্যের চর্চা করেন? এ চর্চা আপনার কবিতায় কতটুকু প্রভাব রাখে?

রফিকুজ্জামান রণি: হ্যাঁ, কথাসাহিত্যে আমার সরব উপস্থিতি আছে। তবে গল্পচর্চাতেই সীমাবদ্ধ আছি। এ পর্যন্ত আমার তিনখানা গল্পের বই প্রকাশ পেয়েছে। গল্প লিখে বেশ কিছু পুরস্কারও জুটেছে কপালে। তারপরও আমার কাব্যর্চচায় কথাসাহিত্যের কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। মাঝেমধ্যে আমার কথাসাহিত্যে কাব্যের ধাক্কা এসে পড়ে, এমন অভিযোগ অনেকের মুখেই শুনেছি।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনার প্রথম কবিতার বই সম্পর্কে কিছু বলুন। প্রথম বই প্রকাশের অনুভূতি কেমন ছিল?

রফিকুজ্জামান রণি: আমার প্রথম কবিতার বই ‘জেমকন পুরস্কার’ পাওয়ার মধ্য দিয়ে বের হয়েছি। কী বিস্ময়কর আনন্দঘন মুহূর্ত ছিল সেটা, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। বইটি লিখতে গিয়ে আমি একটু সময় নিয়েছি। প্রচুর পড়েছি। লিখবার পরে মনে বিশ্বাস জন্মেছিল যে এ বই পাঠক গ্রহণ করবে, ভালো কিছু অপেক্ষা করছে আমার জন্য। আমার ধারণা সত্য হলো। সেই অনুভূতি তো আরও মারাত্মক আনন্দের।

বাংলা ট্রিবিউন: সমকালীন সামাজিক, রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক ঘটনা কি আপনার কবিতায় প্রভাব ফেলে? যদি ফেলে, তবে কীভাবে তা প্রকাশিত হয়?

রফিকুজ্জামান রণি: অবশ্যই পড়ে। প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ দুইভাবেই আমার কবিতায় সমকালীন সামাজিক, রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক ঘটনার প্রভাব পড়ে। জুলাই-আগস্টের বিপ্লব নিয়ে কবিতা লিখে আমি তো হুমকির শিকারও হয়েছি। তারপরও তো পিছু হটিনি। আমি মনে করি, কবিতা লিখতে সাহস লাগে, ভীতু লোক কখনও কবি হতে পারে না। 

বাংলা ট্রিবিউন: পাঠকদের মন্তব্য আপনার লেখায় কোনো পরিবর্তন আনে?

রফিকুজ্জামান রণি: আনে। তবে সব সময় না। পাঠকের কোনো প্রশংসা কিংবা সমালোচনা যদি আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয় তবেই সেটা গ্রহণ করি। কিন্তু সমালোচনা আমাকে যতটা শানিত করে, প্রশংসা ততটা করে না।

বাংলা ট্রিবিউন: ভবিষ্যতে কী ধরনের কবিতা লিখতে চান? নতুন কোনো ধারা বা শৈলীতে কাজ করার ইচ্ছা আছে কি?

রফিকুজ্জামান রণি: আসলে কোনো ধরন নির্ধারণ করে কবিতা লেখা যায় না। কবিতা আমার কাছে কোন রূপে ধরা দেবে সেটাই মুখ্য বিষয়। নতুন ধারা তৈরির চেষ্টা তো সবাই করে। আমিও করি। কাব্যের ধারা কখন কার হাত দিয়ে বদলে যায়, সেটা কেউ আগে থেকে বলে দিতে পারে না।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত