বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো সামরিক হুমকি বাস্তবসম্মত নয় বলে মন্তব্য করেছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মনিউল ইসলাম আখন্দ।
বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বর্তমানে যুদ্ধ আর কেবল মাঠের লড়াইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এখন যুদ্ধ হয় প্রক্সি পদ্ধতিতে, মিডিয়া ওয়ার, অর্থনৈতিক চাপ এবং কূটনৈতিক কৌশলের মাধ্যমে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে এভাবে যুদ্ধ পরিচালনা করছে।”
পশ্চিমবঙ্গের এক বিজেপি নেতার সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রসঙ্গে মেজর জেনারেল মনিউল ইসলাম আখন্দ বলেন, “এ ধরনের মন্তব্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এর বাস্তব কোনো মূল্য নেই। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম পেশাদার বাহিনী। আমরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ অবদানকারী। আধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তিতে আমাদের বাহিনী সজ্জিত এবং অত্যন্ত দক্ষ।”
তিনি আরও বলেন, “ভারতের সেনাবাহিনীর আকার বড় হলেও তাদের পাকিস্তান ও চীন সীমান্তে বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন রাখতে হয়। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যেও আলাদা করে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন আছে। তাই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বড় আকারের আক্রমণ তাদের পক্ষে বাস্তবে সম্ভব নয়।”
বাংলাদেশের সামরিক শক্তির সক্ষমতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “একটি সুসংগঠিত বাহিনীকে আক্রমণ করতে চাইলে আক্রমণকারী বাহিনীর অন্তত তিনগুণ সৈন্য প্রয়োজন। বাংলাদেশের দুই লাখ সদস্যের বাহিনীর বিপক্ষে ছয় থেকে আট লাখ সৈন্য ছাড়া বড় আকারের অভিযান সম্ভব নয়। ফলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সামরিক হুমকি বাস্তবে অবাস্তব।”
মেজর জেনারেল মনিউল ইসলাম আখন্দ দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, “বাংলাদেশ একটি আত্মবিশ্বাসী, সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল রাষ্ট্র। দেশের সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনী সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। বিভ্রান্তিমূলক প্রচারে কান না দিয়ে সবাইকে সাহস ও আত্মবিশ্বাস বজায় রাখতে হবে।”
তিনি বলেন, বিজেপি আগামী কেন্দ্রীয় ও রাজ্যসভার নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে এসব ইস্যুকে কাজে লাগাচ্ছে। দেশের নিরাপত্তা বা স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।
এসএফ