যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পাল্টা শুল্ক (রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ) নিয়ে আলোচনায় আরও সময় চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা (নেগোশিয়েশন) চালিয়ে যাচ্ছি। প্রয়োজনে আরও সময় চাইবো। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততা (অ্যাংগেজমেন্ট) বাড়ানো হবে।’
বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও এফবিসিসিআই-এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ৪৫তম পরামর্শক কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন তিন মাস সময় দিয়েছে। আমরা চাই এই সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝাতে পারি, পাল্টা শুল্কের ফলে আমাদের রফতানি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বাড়বে, তাই ব্যবসায়ীদেরও প্রতিযোগিতামূলক হতে হবে।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান।
‘বাস্তবসম্মত বাজেট হবে’
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রসঙ্গে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘এবারের বাজেট বাস্তবসম্মত হবে। বড় বাজেট দিয়ে বাস্তবায়ন না হওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা যা বলবো, তা করার চেষ্টা করবো। সরকার চলে গেলেও যেন মানুষ বলে বাজেট ভালো হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘সরকার রাজস্ব আদায়ে চাপে রয়েছে। কর অব্যাহতির দিন শেষ। সবাইকে কর কাঠামোর আওতায় আনতে হবে। যে কর দিবে, সে-ই সুবিধা পাবে।’
ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক সময় প্রান্তিক চেম্বার বা ব্যবসায়ী সংগঠনের কথা শোনা হয় না। তবে আমরা তাদের কথাও গুরুত্ব দিয়ে শুনছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গালমন্দ খাচ্ছি, ভুল হচ্ছে—তবুও চেষ্টা করছি সাধারণ মানুষকে স্বস্তিতে রাখতে।’
তিনি জানান, আইএমএফের সব শর্ত এখনও পূরণ হয়নি। তবে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গেও আলোচনা অব্যাহত আছে।
জুলাই আন্দোলনের চেতনায় বাজেট প্রণয়ন
সভায় এফবিসিসিআই প্রশাসক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনের চেতনাকে সামনে রেখে বাজেট প্রণয়ন করা হবে।’ তিনি জানান, ‘চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন এবং অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেই ব্যবসা-বান্ধব ও বিনিয়োগ সহায়ক বাজেট চায় অংশীজনরা।’
সভায় ব্যবসায়ী নেতারা বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন। বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজীজ রাসেল এবং রিহ্যাব পরিচালক আইয়ুব আলী প্রমুখ বাজেট প্রক্রিয়ায় অংশীজনদের বাস্তব দাবি-দাওয়ার ওপর জোর দেন।