যশোরের চৌগাছা মডেল হাসপাতালে নতুন ভবনের নির্মাণকাজ ১৮ মাস আগে শেষ হয়েছে। ভবনটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে ভবনের জানালা-দরজা ও আসবাবপত্র। কিন্তু প্রশাসনিক অনুমোদন না পাওয়ায় শুরু হয়নি হাসপাতাল কার্যক্রম। ফলে কাজে আসছে না ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি।
জানা যায়, হাসপাতালটি ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করার জন্য ভবনটি নির্মাণ করা হয়। ভবনটি চালু না হওয়ায় রোগীরা দুর্ভোগে পড়ছেন। আসন সংকটের কারণে তারা ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। তবে সিভিল সার্জন বলছেন, চলতি মাসে ভবনটি চালু করা হতে পারে।
যশোর জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে তিনটি গুচ্ছে প্রায় ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে হাসপাতালের এ অবকাঠামো নির্মিত হয়। এর মধ্যে ছয়তলা বিশিষ্ট হাসপাতালের মূল ভবন ২১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। ২০২১ সালের ২৯ এপ্রিল এই ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর এই কাজ শেষ হয়। এ ছাড়া অক্সিজেন প্লান্টসহ সরবরাহ লাইন স্থাপনে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
এলাকাবাসী জানায়, হাসপাতালটি ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করার উদ্যোগ হিসেবে নতুন ভবনটি নির্মাণ হয়। কিন্তু ভবনটিতে কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় রোগীরা সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছেন। হাসপাতালে ৫০ শয্যার তুলনায় রোগী কয়েক গুণ বেশি থাকে। তাই রোগীদের ঠাঁই মেলে ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দায়। ১০০ শয্যার ভবনটি চালু হলে রোগীদের দুর্ভোগ অনেকটা লাঘব হবে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মোছা. কাজল রেখা, লীমা খাতুনসহ আরও অনেকে জানান, হাসপাতালে আসন সংকটের কারণে রোগীদের ঠাঁই হচ্ছে যেখানে-সেখানে। নোংরা পরিবেশে থাকতে রোগীদের অসুবিধা হচ্ছে। ফলে দ্রুত নতুন ভবনটি চালু করার দাবি তাদের।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ারুল আবেদীন বলেন, হাসপাতালে জায়গা সংকটের পাশপাশি চিকিৎসক সংকট রয়েছে। রোগীদের দুর্ভোগ লাঘবে নতুন ভবন চালু ও চিকিৎসকের শূন্য পদ পূরণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
যশোর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, প্রকল্পের কাজ শেষ করে ভবনগুলো স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এখন সব দায়দায়িত্ব স্বাস্থ্য বিভাগের ওপর। তাই ভবনটি কবে চালু করবে সেটা তাদের ব্যাপার।
এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহসানুল মিজান রুমী বলেন, প্রশাসনিক অনুমোদন না পেলে হাসপাতালটি ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা যাচ্ছে না। প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র-বেড, জনবল, চিকিৎসক প্রয়োজন। কিন্তু প্রশাসনিক অনুমোদনের অপেক্ষায়।
যশোর সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা বলেন, নতুন ভবনটি চালু করতে প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কয়েকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও নিয়মিতভাবে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এ মাসেই অনুমোদন হতে পারে বলে মনে করছি।