Homeজাতীয়আবরার ফাহাদ হত্যা ছিল পূর্বপরিকল্পিত

আবরার ফাহাদ হত্যা ছিল পূর্বপরিকল্পিত


বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকে পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলেছেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন; শুধু এই অভিযোগে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। কিন্তু কোনো বিবেকসম্পন্ন ব্যক্তির, এমন নির্মম নির্যাতন ও অমানবিকভাবে কাউকে হত্যা করার যুক্তি হতে পারে না। বিচারিক আদালত সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আসামিদের যথাযথ সাজা দিয়েছেন।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এসব কথা বলা হয়েছে। গত সপ্তাহে এই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে। উচ্চ আদালত রায়ে ডেথ রেফারেন্স অনুমোদন এবং আসামিদের করা আপিল খারিজ করেন। গত ১৬ মার্চ এই রায় দেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ। রায়ে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ২০ নেতা-কর্মীর মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়। তাঁরা সবাই বুয়েটের শিক্ষার্থী ছিলেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু গতকাল শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত সপ্তাহে আমরা ১৩১ পৃষ্ঠার রায়ের কপি পেয়েছি। হাইকোর্টের রায়ে আমরা অসন্তুষ্ট। রায় পর্যালোচনা করে আপিল করা হবে।’

এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার ও নূর মুহাম্মদ আজমী। আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, আজিজুর রহমান দুলু, মাসুদ হাসান চৌধুরী, মোহাম্মদ শিশির মনির প্রমুখ।

আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে বিচারিক আদালতের রায়সহ নথিপত্র ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৌঁছায়। অন্যদিকে রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অসম চুক্তি এবং পানি আগ্রাসন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতারা। এক নেতার কক্ষে নিয়ে শিবির সন্দেহে সাত ঘণ্টা নৃশংস কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করা হয় তাঁকে। রাত ৩টার দিকে ওই হলের সিঁড়ি থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওই ঘটনায় আবরারের বাবা চকবাজার থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তাঁরা সবাই বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।

মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা ২০ আসামি হলেন মেহেদী হাসান (রাসেল), অনিক সরকার, মেহেদী হাসান (রবিন), ইফতি মোশাররফ, মনিরুজ্জামান, মেফতাহুল ইসলাম, মাজেদুর রহমান, মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাককারুল ইসলাম, হোসাইন মোহাম্মদ তোহা, শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, মুনতাসির আল (জেমি), শামসুল আরেফিন, মিজানুর রহমান, এস এম মাহমুদ, মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল, এহতেশামুল রাব্বি ও মুজতবা রাফিদ। এদের মধ্যে বিচারিক আদালতের রায়ের সময় থেকে পলাতক রয়েছেন মোর্শেদ-উজ-জামান, এহতেশামুল রাব্বি ও মুজতবা রাফিদ। মুনতাসির আল (জেমি) গত বছরের ৬ আগস্ট গাজীপুরের হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে যান।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল থাকা আসামিরা হলেন মুহতাসিম ফুয়াদ হোসেন, আকাশ হোসেন, মুয়াজ আবু হুরায়রা, অমিত সাহা ও ইশতিয়াক আহমেদ।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত