বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের আলোকে বেতন ভাতা ও স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়নের দাবিতে দেশের বিচার বিভাগীয় কর্মচারীরা ২ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন। আজ সোমবার বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা।
আজ সকালে ঢাকার নিম্ন আদালতে কর্মবিরতি চলাকালে আদালতের কর্মচারীরা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে মানববন্ধন করেন। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা তাঁরা সেখানে অবস্থান করেন।
এ সময় বিভিন্ন আদালত ঘুরে দেখা গেছে, কোনো বিচারক এজলাসে উঠে বিচারকাজ পরিচালনা করেননি।
গত ১৯ এপ্রিল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের কার্যকরী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সভাপতি মো. রেজোয়ান খন্দকার এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ওই কর্মসূচি অনুযায়ী সোমবার কর্মবিরতি চলে।
সভাপতি রেজোয়ান খন্দকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, সারা দেশে একযোগে কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে। কর্মসূচি শতভাগ সফল হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটি পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে কিছুটা সময় দেওয়া হবে।
আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়ে রেজোয়ান খন্দকার বলেন, এরপর দাবি না মানলে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতির ঘোষণা আসতে পারে।
গত রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অ্যাসোসিয়েশন জানায়, ১৯ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলনে ৪ মের মধ্যে তাঁদের দাবি বাস্তবায়নের অনুরোধ জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনের পর সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক টিম একাধিকবার যোগাযোগ করলেও দাবি মানার ক্ষেত্রে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। এ কারণে তারা ২ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করছে। এরপরেও দাবি না মানলে আরও বড় কর্মসূচি ঘোষণা করবে অ্যাসোসিয়েশন।
উল্লেখ্য, বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন দীর্ঘদিন ধরে বিচার বিভাগের বিভিন্ন বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে তা নিরসনের দাবি তুলছেন। অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক হওয়ার পর শুধু বিচারকদের জন্য ৬টি গ্রেড রেখে পৃথক পে-স্কেলসহ নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন করা হলেও সহায়ক কর্মচারীদের ওই পে-স্কেলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বিচারকদের সঙ্গে আদালতের সহায়ক কর্মচারীরা একই দপ্তরে কাজ করেন। তবে জুডিশিয়াল সার্ভিস পে-স্কেলের আলোকে বিচারকদের বেতন-ভাতা হলেও সহায়ক কর্মচারীরা জনপ্রশাসনের আলোকে বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন।
এ ছাড়া, অনেক কর্মচারী পদোন্নতি ছাড়াই আক্ষেপ ও হতাশা নিয়ে একই পদে ৩৮ থেকে ৪০ বছর চাকরি করেও পদোন্নতি বঞ্চিত থেকে অবসরে যাচ্ছেন, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ কারণেই বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের আলোকে বেতন ভাতা ও স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আসছে।