Homeঅর্থনীতিবিজিএমইএ নির্বাচনে তিন জোটে প্রার্থী হলেন যাঁরা

বিজিএমইএ নির্বাচনে তিন জোটে প্রার্থী হলেন যাঁরা


সমঝোতার ভিত্তিতে পরিচালনা পর্ষদ গঠনের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছেন তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর ২০২৫–২৭ নির্বাচনকেন্দ্রিক দুই জোট—ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ। বেশ কয়েক দিন আলোচনার পর সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তেই আছেন তাঁরা। এর ফলে সাধারণ সদস্যরা সংগঠনটির নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।

এই সিদ্ধান্তের পর আজ বুধবার (৭ মে) দুই জোট তাদের চূড়ান্ত প্যানেল ঘোষণা করেছে। দুটি প্যানেলে ৩৫ জন করে মোট ৭০ জন রেখে বাকিদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন প্রার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার দুই জোটের বাকি প্রার্থীরা সরে দাঁড়ান।

এদিকে এই দুই জোটের বাইরেও ৬ জন প্রার্থী রয়েছেন এবার নির্বাচনে। বিজিএমইএর নির্বাচন ঘিরে ‘ঐক্য পরিষদ’ নামে নতুন একটি জোটের অধীনে তাঁরা নির্বাচন করবেন। তবে ভোটে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের মধ্যে। কারণ, ঐক্য পরিষদ খণ্ডিত প্যানেল দিয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে ৩৫টি পদের বিপরীতে এই জোটের প্রার্থী মাত্র ৬ জন।

এর ফলে এবার বিজিএমইএ নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থীর সংখ্যা ৭৬ জন। এর আগে প্রাথমিকভাবে ৯৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ঐক্য পরিষদের ছয়জন, আর বাকিরা ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সমঝোতার মাধ্যমে পর্ষদ গঠনের বিষয়ে ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনা হচ্ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় গত রোববারও ঢাকার একটি হোটেলে আলোচনায় বসেন তাঁরা। উভয় পক্ষ সমঝোতার মাধ্যমে পর্ষদ গঠনে ইতিবাচক মনোভাব দেখায়। তবে দীর্ঘ বৈঠকের একপর্যায়ে, অর্থাৎ সেদিন রাতে ফোরামের নেতারা নির্বাচন করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।

বিজিএমইএর নির্বাচন বোর্ডের সচিব মাহমুদুল হাসান বলেন, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হবে। নির্বাচনে ৩৫ পদের বিপরীতে বর্তমানে ৭৬ জন প্রার্থী রয়েছেন।

৩১ মে ঢাকা ও চট্টগ্রামে একযোগে ভোট গ্রহণ চলবে। এবার মোট ভোটার ১ হাজার ৮৬৫ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ ও চট্টগ্রামে ৩০৩ জন। গত বছর মোট ভোটার ছিলেন ২ হাজার ৪৯৬ জন। এবার শুধু সচল কারখানার উদ্যোক্তারাই ভোটার হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের দেড় দশকের অধিকাংশ সময়ই বিজিএমইএর নেতৃত্বে ছিল সম্মিলিত পরিষদ। এই জোটের নেতৃত্ব দেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদী ও শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এবং আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান।

বর্তমানে সিদ্দিকুর রহমান ছাড়া সবাই বিভিন্ন মামলায় কারাগারে আছেন। প্রভাবশালী এই জোট গত বছরের মার্চের নির্বাচনে সব কটি পদে বিজয়ী হয়। এরপর সভাপতি হন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। যদিও ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাঁকে আর দেখা যায়নি। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা হয়েছে।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নেতৃত্ব নিয়ে যখন টানাপোড়েন শুরু হয়, তখন সম্মিলিত পরিষদ তাদের পর্ষদ টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালায়। প্রথমেই তারা এস এম মান্নানকে সরিয়ে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামকে সভাপতি নির্বাচন করে। পরে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামানকে সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি পদে বসানো হয়। তাতেও অবশ্য শেষরক্ষা হয়নি।

গত ২০ অক্টোবর বিভিন্ন অভিযোগে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রশাসকের দায়িত্ব পান রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন।

ভোটে লড়ছেন যাঁরা

বিজিএমইএর পর্ষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য গত নভেম্বরে রাইজিং ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহমুদ হাসান খানকে প্যানেল লিডার হিসেবে চূড়ান্ত করে ফোরাম। এর আগে সংগঠনের সহসভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি। অন্যদিকে সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার মনোনীত হন চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল কালাম। তিনি এক দশক আগে সংগঠনের পরিচালক ছিলেন।

বুধবার দুই প্যানেলের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিতে চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। সে অনুসারে সম্মিলিত পরিষদের ঢাকা অঞ্চলের প্রার্থীরা হলেন—মো. আবুল কালাম, আবদুল্লাহ হিল রাকিব, মির্জা ফায়েজ হোসেন, মো. নুরুল ইসলাম, তামান্না ফারুক থিমা, হেলাল উদ্দিন আহমেদ, মহিউদ্দিন রুবেল, খন্দকার রফিকুল ইসলাম, মো. শাহদাৎ হোসেন, মো. রেজাউল আলম, ফারুক হাসান, এ কে এম আজিমুল হাই, লিথি মুনতাহা মহিউদ্দিন, মো. আশিকুর রহমান, এস এম মনিরুজ্জামান, মো. মশিউল আজম, মোহাম্মদ রাশেদুর রহমান, আবরার হোসেন সায়েম, মোহাম্মদ সোহেল সাদাত, সয়েদ সাদিক আহমেদ, মোস্তাজিরুল শোভন ইসলাম, মাঞ্জুরুল ফয়সাল হক, সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী সাগর, মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন, ফিরোজ আলম ও আসিফ আশরাফ।

এই জোটের চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রার্থীরা হলেন—এস এম আবু তৈয়ব, রাকিবুল আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ মুসা, অঞ্জন কুমার দাশ, নাফিদ নবি, সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, মোস্তফা সারোয়ার রিয়াদ, মো. আবসার হোসেন ও গাজী মো. শহীদ উল্লাহ।

অন্যদিকে ফোরামের ঢাকা অঞ্চলের প্রার্থীরা হলেন—মাহমুদ হাসান খান, মোহাম্মদ আবদুস সালাম, কাজী মিজানুর রহমান, মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, ইনামুল হক খান, মো. হাসিব উদ্দিন, মোহাম্মদ সোহেল, শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ, ভিদিয়া অমৃত খান, এম এ রহিম, শাহ রাঈদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান, জোয়াদ্দার মোহাম্মদ হোসনে কামার আলম, এ বি এম শামছুদ্দিন, নাফিস-উদ-দৌলা, সুমাইয়া ইসলাম, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, মজুমদার আরিফুর রহমান, মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া, ফাহিমা আক্তার, আসেফ কামাল পাশা, রশীদ আহমেদ হোসাইনী, রুমানা রশীদ, সামিহা আজিম, রেজওয়ান সেলিম ও ফয়সাল সামাদ।

এই জোটের চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রার্থীরা হলেন—সেলিম রহমান, মো. শরীফ উল্লাহ, মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী, এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাকিফ আহমেদ সালাম, এনামুল আজিজ চৌধুরী, এমদাদুল হক চৌধুরী, মির্জা মো. আকবর আলী চৌধুরী ও রিয়াজ ওয়েজ।

ঐক্য পরিষদের খণ্ডিত প্যানেলের ছয় সদস্য হলেন—মোহাম্মদ মহসিন, দেলোয়ার হোসেন, খালেদ মো. ফয়সাল ইকবাল, এ কে এম আবু রায়হান, মো. মহসিন অপু ও শেখ এরশাদ উদ্দিন।

ঐক্য পরিষদের প্রার্থী ইনফিনিটি আউটফিটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খালেদ মো. ফয়সাল ইকবাল বলেন, ‘সংগঠনের সাধারণ সদস্য, যাঁদের টাকায় বিজিএমইএ চলে, তাঁদের যথাযথ সম্মান করা হয় না। আর্থিক অস্বচ্ছতাও আছে। তাই সব সদস্যের জন্য সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত স্বচ্ছ বিজিএমইএ গড়ার জন্য আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।’





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত