Homeসাহিত্যফ্যাক্টচেক /পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে গ্রেপ্তারের ভুয়া খবরটি ছড়িয়েছে আনন্দবাজার

ফ্যাক্টচেক /পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে গ্রেপ্তারের ভুয়া খবরটি ছড়িয়েছে আনন্দবাজার


পেহেলগাম হামলার প্রতিশোধ নিতে গত মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত মধ্যরাতে পাকিস্তানের অন্তত ৯টি স্থানে হামলা চালায় ভারত। এই হামলার সাংকেতিক নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিন্দুর’। বিপরীতে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি জানায় পাকিস্তান। এরপর দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার তথ্য সংবাদমাধ্যমে আসছে।

এরই মধ্যে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিফ মুনিরকে অপসারণ করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে— এমন দাবিতে একটি তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। একই ক্যাপশনে বিভিন্ন এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে এই দাবিতে পোস্ট করা হয়েছে।

प्रवीण चौहान’ নামে এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে পোস্ট করা কনটেন্টটি বেশি ছড়িয়েছে। এর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘বিগ ব্রেকিং: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরকে অপসারণ এবং গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া গেছে। জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির সামশেদ মির্জার নেতৃত্বে অভ্যুত্থান পরিচালিত হবে। ব্যক্তিগত লাভের জন্য পাকিস্তানকে বিশৃঙ্খলার দিকে নেওয়ার অভিযোগে মুনিরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।’ (ইংরেজি থেকে বাংলায় অনূদিত)

Byomkesh Bakshi, KrishnaThakurDebashish Sarkar নামে এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে একই দাবিতে তথ্যটি ছড়ানো হয়েছে।

এক্স অ্যাকাউন্ট خان থেকে আসিম মুনিরকে গ্রেপ্তার দাবিতে একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানের পতাকাযুক্ত চারজন বিশেষ পোশাক পরা ব্যক্তি একজনকে হাতকড়া পরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হাতকড়া পরা ব্যক্তির সঙ্গে আসিম মুনিরের চেহারার মিল রয়েছে।

এ ছাড়া জাতীয় দৈনিক জনকণ্ঠ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলা ভাষায় প্রচারিত বেসরকারি ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম কলকাতা টিভির ইউটিউব চ্যানেলেও একই দাবিতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ শুরুতে গুগলে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে। তবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির আটক হওয়া ও সাহির সামশেদ মির্জার তাঁর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার বিষয়ে পাকিস্তান কিংবা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

পাকিস্তানের আইএসপিআরের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে এখনও জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরই আছেন।

আইএসপিআরের ওয়েবসাইট। ছবি: স্ক্রিনশট

আইএসপিআরের ওয়েবসাইট। ছবি: স্ক্রিনশট

গ্রেপ্তারের দাবিতে ছড়ানো ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদনে একটি ছবি পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি ২০১৬ সালের ৭ ডিসেম্বরে প্রকাশিত। এর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে থাকা পাকিস্তানের পতাকাসহ বিশেষ পোশাকে থাকা ব্যক্তিদের চেহারা, তাঁদের অবস্থান, হাতকড়ার মিল পাওয়া যায়। তবে এই ছবিতে আসিম মুনিরকে দেখা যায়নি। সে স্থলে ভিন্ন ব্যক্তিকে দেখা গেছে।

আসিম মুনিরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ছড়ানো ছবির সঙ্গে সিবিসি নিউজের প্রতিবেদনের ছবির সাদৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

আসিম মুনিরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ছড়ানো ছবির সঙ্গে সিবিসি নিউজের প্রতিবেদনের ছবির সাদৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিটি ২০১৬ সালের ১৭ জুলাইয়ের। আটক হওয়া ব্যক্তির নাম ওয়াসিম আজিম। নিজ বোন কান্দিল বালোচকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানের পুলিশ কর্মকর্তারা গণমাধ্যমের সামনে তাঁকে উপস্থাপন করেন।

তাহলে আসিম মুনিরকে গ্রেপ্তারের দাবিটি কীভাবে ছড়াল?

জাতীয় দৈনিক জনকণ্ঠ আসিম মুনির গ্রেপ্তার হওয়ার তথ্যটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দের বরাত দিয়ে লিখেছে। এবিপি বাংলা এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেছে কিনা তা জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে এবিপি আনন্দের ফেসবুক পেজে (আর্কাইভ) বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ২২ মিনিটে একটি পোস্ট পাওয়া যায়।

এই পোস্টের এডিট হিস্ট্রি ঘেঁটে জানা যায়, প্রথমে ‘আটক পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিফ মুনির #IndiaPakistanTensions বিশদ কমেন্টে।’ লিখে পোস্ট করা হয়। পরবর্তীতে শুক্রবার (৯ মে) বেলা ১২টা ০ মিনিটে এডিট করে, ‘Big Breaking: পাকিস্তানের ১৬টি শহরে হামলা ভারতের #IndiaPakistanTensions বিশদ কমেন্টে।’ লেখা হয়।

এবিপি আনন্দের ফেসবুক পোস্ট। ছবি: স্ক্রিনশট

এবিপি আনন্দের ফেসবুক পোস্ট। ছবি: স্ক্রিনশট

সুতরাং, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিফ মুনিরকে অপসারণের পর গ্রেপ্তার ও সাহির সামশেদ মির্জাকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করার দাবিটি সত্য নয়। একই দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে তৈরি করা হয়েছে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত