ভারত-পাকিস্তানের সীমান্ত উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে ক্রীড়াঙ্গনেও। যুদ্ধাবস্থার শঙ্কায় একযোগে স্থগিত হয়ে গেছে উপমহাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি টি-টোয়েন্টি লিগ—আইপিএল ও পিএসএল। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তা উদ্বেগে যখন পিএসএলের ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা, তখনই চমকপ্রদ এক পরামর্শ দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার বাসিত আলী—দুবাই নয়, এমন সংকটকালে পিএসএলের ম্যাচ হোক বাংলাদেশে!
গত ৮ মে রাওয়ালপিন্ডির পিন্ডি স্টেডিয়ামের পাশে ভারতীয় ড্রোন হামলার ঘটনায় পেশোয়ার জালমি বনাম করাচি কিংসের খেলা শুরুর আগেই বাতিল হয়ে যায়। নিরাপত্তা শঙ্কা এতটাই তীব্র হয়ে ওঠে যে, পরদিন পুরো পিএসএলই স্থগিত ঘোষণা করে পিসিবি।
এদিকে আইপিএলেও পড়ে এর প্রভাব। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থাকায় ধর্মশালায় পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের মধ্যকার ম্যাচ শুরুর পরেও বাতিল করে বিসিসিআই। এরপর পুরো আইপিএলই অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়।
পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও, এখনও ম্যাচ আয়োজনের মতো পরিবেশ পুরোপুরি তৈরি হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবুও সম্ভাব্য বিপদের কথা মাথায় রেখে পিএসএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—বিদেশি খেলোয়াড়দের দুবাইয়ে ও স্থানীয়দের পাকিস্তানে প্রস্তুত রাখতে।
ঠিক এমন সময়ই সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার বাসিত আলী ইউটিউবে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় পিসিবিকে অনুরোধ জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এমন যেকোনো সংকটময় পরিস্থিতিতে পিএসএলের ম্যাচগুলো বাংলাদেশে আয়োজন করতে। তার মতে, ‘বাংলাদেশে ক্রিকেট শুধু খেলা নয়, একপ্রকার আবেগ। এখানকার দর্শকেরা ঘরোয়া ক্লাব ক্রিকেটেও যেভাবে মাঠে ভিড় করেন, তা অনেক দেশের আন্তর্জাতিক ম্যাচেও দেখা যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি নিরাপত্তাজনিত কারণে পাকিস্তানে ম্যাচ আয়োজন সম্ভব না হয়, তবে দয়া করে বাংলাদেশকে ভেবে দেখুন। ওখানে স্টেডিয়াম সবসময় দর্শকে ভরা থাকে।’
পিএসএলের চলতি আসরে বাকি রয়েছে মোট ৮টি ম্যাচ—৪টি লিগ পর্বের, ৩টি প্লে-অফের এবং ফাইনাল। কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্স ইতোমধ্যেই প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে। ৯ ম্যাচে ৬ জয়ে তাদের পয়েন্ট ১৩। করাচি কিংস ও ইসলামাবাদ ইউনাইটেডও আছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।
এবারের আসরে তিন বাংলাদেশি ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েছেন। ইনজুরির কারণে লিটন দাস টুর্নামেন্টের শুরুতেই দেশে ফিরেছেন। তবে লাহোর কালান্দার্সের হয়ে ৫টি ম্যাচে দারুণ পারফর্ম করেছেন লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন। পেশোয়ার জালমির স্কোয়াডে থাকলেও নাহিদ রানা ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি।
পিএসএলের বাকি অংশ কবে মাঠে গড়াবে, বা আদৌ গড়াবে কি না—তা এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতির ওপর।