Homeজাতীয়গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশের দাবি

গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশের দাবি

[ad_1]

জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে নারীসহ অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অগ্রযাত্রায় নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী ও পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা। নারীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ক্ষেত্রেও তারা বাধা তৈরি করছে। জুলাইয়ে অসংখ্য নারীর আত্মত্যাগ ও শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার নারীর ওপর অব্যাহত নিপীড়ন, অবমাননা ও অপমানের বিরুদ্ধে আশ্চর্য রকম নিশ্চুপ। সরকারের নিজের তৈরি করা নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্যদের ওপর ন্যক্কারজনক আক্রমণের পরেও সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা’র ঘোষণাপত্রে এসব কথা বলা হয়।

ঘোষণাপত্রে গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশের দাবি জানানো হয়। কর্মসূচি থেকে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা নিশ্চিত এবং গুজব ও ধর্মীয় উসকানির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

এ দিন বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা’র আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ‘সমতার দাবিতে আমরা’—স্লোগানের এই কর্মসূচিতে প্রগতিশীল নারী, শ্রমিক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সংস্কৃতিককর্মী, পেশাজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

মৈত্রীযাত্রায় সংহতি জানাতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আসেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক, সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নেত্রী মনীষা চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহা মির্জা, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নোভা আহমেদ, নাভিন মুরশিদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, নারীমুক্তি কেন্দ্র, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, আদিবাসী ইউনিয়ন, গার্মেন্টসশ্রমিক মুক্তি আন্দোলন, বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠন এই কর্মসূচিতে সংহতি জানায়।

মৈত্রীযাত্রার মূলমঞ্চ থেকে একাধিকবার মাইক্রোফোনে জানানো হয়, কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কেউ গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন না। কারণ, এতে বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপনের শঙ্কা রয়েছে। মৈত্রীযাত্রার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন তিনজন। তাঁরা হলেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ মামুন মিয়ার স্ত্রী শারমিন আক্তার, শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা শামসি আরা জামান এবং জয়ন্তী চাকমা।

ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ‘চব্বিশের অভূতপূর্ব জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরে আজ আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি মুহূর্তে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমাদের দাবি, একটি গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ, যেখানে সব মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে বৈষম্যবিরোধিতা ও সাম্যের যৌথ মূল্যবোধের ওপর। আমাদের সঙ্গে রয়েছেন জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও নিহত ব্যক্তিদের স্বজন, মানবাধিকারকর্মী, পেশাজীবী, শিল্পী, গার্মেন্টসশ্রমিক, চা-বাগানের শ্রমিক, যৌনকর্মী, প্রতিবন্ধী অধিকারকর্মী, হিজড়া, লিঙ্গীয় বৈচিত্র্যময় ও অন্যান্য প্রান্তিক সম্প্রদায়ের মানুষ, তরুণ-তরুণীরা, শিক্ষার্থী, আদিবাসী, অবাঙালিসহ অনেকে।’

ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়, ‘যারা আমাদের সমর্থন চায়, তাদের নির্বাচনী অঙ্গীকারের মাধ্যমে হোক বা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হোক, তাদের স্পষ্ট করতে হবে, নারী, শ্রমিক, জাতিগত, ধর্মীয়, ভাষাগত ও লৈঙ্গিক সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং এসব জনগোষ্ঠীর পূর্ণ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ব্যক্তিগত মুক্তির বিষয়ে তাদের অবস্থান। বিশেষ করে, আসন্ন নির্বাচন থেকে তাদের প্রার্থীদের অন্তত শতকরা ৩৩ জন (ক্রমে জনসংখ্যার অনুপাতে) নারী হতে হবে। নারী ও প্রান্তিক জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে অন্তর্বর্তী সরকারকে আশু পদক্ষেপ নিতে হবে।’

ঘোষণাপত্র পাঠ করা শেষে বিকেল সোয়া ৫টা নাগাদ ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা’র একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে ইন্দিরা রোড ঘুরে আবারও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এসে শেষ হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘ন্যায্যতাই সমতা, সমতাই ন্যায্যতা’, ‘পাহাড় থেকে সমতলে, লড়াই হবে সমানতালে’, ‘ঘরে-বাইরে-প্রতিষ্ঠানে, ব্যাটাগিরি চলবে না’, ‘চেয়েছিলাম হিস্যা, হয়ে গেলাম বেশ্যা’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত