বন্দর থেকে পণ্য খালাসে দীর্ঘ সময় লাগার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার দৌড়ে পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ; এমন উদ্বেগ জানিয়েছেন আমদানিকারক ও অর্থনীতিবিদেরা। তাঁদের মতে, যেখানে ভিয়েতনামের বন্দরগুলোতে এক দিনের মধ্যেই পণ্য খালাস সম্পন্ন হয়, সেখানে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সাত থেকে আট দিন লাগে।
‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বাণিজ্য পুনর্গঠন’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ী নেতারা। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
সেমিনারে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ‘আমদানি করা পণ্য খালাসে এখনো ১৭টি সই এবং সাত থেকে আট দিন সময় লাগে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছি না। বাংলাদেশের রপ্তানির বড় একটি অংশ কাঁচামাল আমদানির ওপর নির্ভরশীল। ফলে খালাসপ্রক্রিয়া দ্রুততর না হলে উৎপাদন ও রপ্তানি উভয়ই বাধাগ্রস্ত হবে। শুল্ক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এখন সময়ের দাবি।’
প্রধান অতিথি ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বিশ্ববাণিজ্যে বর্তমানে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে হলে কৌশলগতভাবে এগোতে হবে। এ জন্য শক্তিশালী লবিং দল গঠনের পাশাপাশি একটি বিশেষায়িত বাণিজ্য আলোচনা সংস্থা গঠন করা জরুরি।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার। তিনি বলেন, ‘চীনের পণ্যে গড় শুল্ক ৫৪% আর যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ১০%। এই পার্থক্য আমাদের জন্য একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। আমাদের শুল্ককাঠামো হতে হবে রপ্তানিবান্ধব।’
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের সম্ভাবনা থাকলেও তা সহজ নয়। আমাদের টেকসই আলোচনা সক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে এবং টিকফা প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগাতে হবে।