খোলা চুলে নৃত্য পরিবেশন করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্বাগত জানাচ্ছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের একদল তরুণী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে ট্রাম্পকে এভাবে স্বাগত জানানোর একটি ভিডিও। অনেকে বলছেন, এটি আরব দেশগুলোর পুরোনো সংস্কৃতির অংশ যা খালিজি নৃত্য বা আই-আইয়ালা নাচ নামে পরিচিত।
দেশটির তরুণীদের এমন নৃত্য পরিবেশন দেখে অবাক হয়েছেন অনেকে। কেউ আবার করছেন সমালোচনা। তবে অনেকের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে এই নৃত্য পরিবেশনা।
সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য সফর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সফরের তৃতীয় দিন সংযুক্ত আরব আমিরাতে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান বিমানবন্দরে ট্রাম্পকে স্বাগত জানান। এরপর এক দল তরুণী খোলা চুলে নৃত্য পরিবেশন করে স্বাগত জানান মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সফর শুরু হয় সৌদি আরব থেকে। শুরুতে তাকে সাদা আরব ঘোড়ার মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানানো হয় এবং তাকে অভ্যর্থনা জানানো হয় বেগুনি গালিচায়। কাতারে পৌঁছানোর সময় ঘোড়ার পাশাপাশি উটও যোগ হয় তার অভ্যর্থনার আয়োজনে।
আরও পড়ুন:
তবে যখন তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছান, তখন সাদা পোশাক পরে, খোলা চুলে নৃত্য পরিবেশন করে তাকে স্বাগত জানান একদল তরুণী। এই নৃত্য পরিবেশনের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তাদের মাঝখান দিয়ে হেঁটে যেতে দেখা যায়।
খালিজি বা আল-আয়ালা নৃত্য আসলে কী
খালিজি হলো পারস্য উপসাগরীয় দেশ ইরাক, সৌদি আরব, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের আধুনিক রীতি ও ঐতিহ্যবাহী এক ধরনের নৃত্য। উপসাগরীয় অঞ্চলের এই নৃত্য বিয়ে ও অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে নারীরা পরিবেশন করে থাকেন। এই নৃত্যে নারীরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ান। বাদ্যের তালে তালে তারা খোলা চুলে নৃত্য পরিবেশন করেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংস্কৃতির অংশ হিসেবে খালিজি বা আল-আয়ালার জনপ্রিয়তা দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। খালিজি আল-আয়ালা পরিবেশনের সময় গুনগুন করে গান গাওয়া হয়। এক ধরনের ঢোল বাজানো হয়। ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরা মেয়েরা তাদের লম্বা চুল এক দিক থেকে অন্যদিকে দোলায়। এই নির্দিষ্ট নাচকে আন-নিশআতও বলা হয় দেশটিতে। আল-আয়ালা পরিবেশনের জন্য বয়স, লিঙ্গ বা সামাজিক অবস্থানের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।
আবার এটাও জানা যাচ্ছে, আরব দেশটির এই রীতি আরব বেদুইন গোত্রগুলোর কাছ থেকে এসেছে, যারা যুদ্ধের প্রস্তুতি বা কোনো আনন্দময় মুহূর্তে এমন নৃত্য পরিবেশন করতো।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা
উপসাগরীয় দেশ সফরকালে ট্রাম্প যে অভ্যর্থনা পেয়েছেন তা নিয়ে আলোচনা চলছেই। এবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে দেওয়া এই অভ্যর্থনা নিয়েও চলছে ব্যাপক আলোচনা।
অনেকে বলছেন, উপসাগরীয় দেশগুলো ট্রাম্পকে খুশি করার জন্য সবকিছু করছে। যখন পশ্চিমা দেশের নারী নেতারা এই দেশগুলোতে আসেন, তখন তাদের মাথা ঢেকে চলতে হয়। কিন্তু এখন আমিরাতের মেয়েরা এক পশ্চিমা নেতার জন্য মাথা না ঢেকে নাচছে।
কেউ আবার বলছেন, আরব দেশগুলো নিজস্ব সংস্কৃতি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে চায়। এটি তাদের বহু পুরোনো রীতি, যা আরব সংস্কৃতির অংশ।
সূত্র: বিবিসি বাংলা, সিয়াসাত ডট কম, এনডিটিভি
এসএনআর/এমএস