জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির প্রতিবাদে সারা দেশে চতুর্থ দিনের মতো কলম বিরতি পালন করছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। যৌক্তিক দাবি আদায়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
অংশীজনদের মতামত উপেক্ষা করে এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ জারির প্রতিবাদে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই আন্দোলনে নেমেছেন। জরুরি সেবা হিসেবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, বাজেট ও রপ্তানি কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। আজ বিকেল ৩টায় সংবাদ সম্মেলনে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’।
আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারের কর্মকর্তারা বলছেন, কোনো সমীক্ষা ছাড়াই এনবিআর বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা রাজস্ব আদায় কার্যক্রম ব্যাহত করবে এবং অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাঁরা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
টিআইবি এই সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, এটি রাজস্ব ব্যবস্থাকে নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি করবে। ১৯৯৩ সালে আইএমএফ এবং ২০০৭ সালে বিশ্বব্যাংক একই ধরনের পরামর্শ দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে মধ্যরাতে এনবিআর বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ নামে দুটি বিভাগ তৈরির বিষয়ে অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ১৭ এপ্রিল উপদেষ্টা পরিষদে খসড়া অনুমোদনের ২৫ দিন পর এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশের পরপরই আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারের সদস্যদের সমিতি এর বাতিলের দাবি জানায়। পরবর্তীতে ক্যাডার সার্ভিসের বাইরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এই দাবির সমর্থনে ঐক্যবদ্ধ হন।
তবে আন্দোলনের শুরুতে কর্মকর্তারা তাঁদের অবস্থানে অনড় থাকলেও, পরবর্তীতে দুই সমিতির শীর্ষ নেতারা পিছু হটেন। এর ফলে সমিতির পদে থাকা অনেক কর্মকর্তা গত বুধবার পদত্যাগ করেন। অধ্যাদেশ বাতিল করে সবার মতামত নিয়ে নতুন করে অধ্যাদেশ জারির দাবিতে ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন এনবিআর কর্মকর্তারা ও কর্মচারীরা।